শুক্রবার, ১৯ নভেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

চট্টগ্রামে বাড়ছে ডেঙ্গু আতঙ্ক

মশক নিধনে ব্যবহৃত ওষুধে কার্যকারিতা নেই হ কমছে না উপদ্রব

রেজা মুজাম্মেল, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রামে বাড়ছে ডেঙ্গু আতঙ্ক

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের কদমরসুল গাউসিয়া তৈয়বিয়া সুন্নিয়া দাখিল মাদরাসার শিক্ষক সাদ্দাম হোসেন আল কাদেরি (৩৪) গত বুধবার সকালে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মারা যান। মঙ্গলবার মারা যান নগরের বাসিন্দা পাঁচ বছর বয়সী শিশু ইউসরা। ৩০ জুলাই ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মারা যান দেওয়ানহাট এলাকার বাসিন্দা নাফিসা জাহান (১৭) নামে এক তরুণী। ৫ জুলাই চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে মারা যান ২৫ বছর বয়সী লালখান বাজার এলাকার গৃহিণী। এভাবে চট্টগ্রামে এখন করোনার পর বাড়ছে ডেঙ্গুর প্রকোপ। ফলে শঙ্কা বাড়াচ্ছে ডেঙ্গু। প্রায় প্রতিদিনই সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে রোগী ভর্তি হওয়ার সংখ্যা বাড়ছে। ঘটছে মৃত্যুর ঘটনাও।

তবে অভিযোগ আছে, এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থা হলেও দৃশ্যমান কোনো উদ্যোগ দেখা যায় না। লোকদেখানো এবং আনুষ্ঠানিকতা নির্ভর মশক নিধন কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। কিন্তু এর কোনো কার্যকর প্রতিফলন দেখা যায় না।

জানা যায়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) একটি গবেষক দল নগরের ৯৯টি এলাকার ৫৭টি স্পট থেকে মশার লার্ভার নমুনা সংগ্রহ করে। এর মধ্যে ১৫টি স্পটে এডিস মশার লার্ভা শনাক্ত করেছে। চবির গবেষক দল গত ৫ জুলাই থেকে এ জরিপ কাজ শুরু করে। গত আগস্ট মাসে গবেষণার রিপোর্ট চসিকে জমা দেওয়া হয়। বাড়ির ফুলের টব, পরিত্যক্ত প্লাস্টিকের পাত্র, দোকানের ব্যাটারির সেল ও টায়ার এবং রাস্তার ধারে পাইপে জমে থাকা বৃষ্টির পানিতে মিলেছে এডিস মশার এসব লার্ভার উপস্থিতি। এসব এলাকা থেকে সংগৃহীত লার্ভার শতভাগই এডিস মশার উপস্থিতি ছিল।

অন্যদিকে নগরের মশক নিধনে ব্যবহৃত ওষুধের কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠায় ওষুধের গুণগত মান পরীক্ষার উদ্যোগ নেয় চসিক। চসিকের অনুরোধে মশক নিধনে ব্যবহৃত ওষুধ পরীক্ষা করেন চবির একদল গবেষক। গবেষণায় বলা হয়, চসিকের ব্যবহৃত মশক নিধন ওষুধটির কোনো কার্যকারিতা ছিল না। কিন্তু নতুন ওষুধ আনা হলেও মশার উপদ্রব কমেনি। তাছাড়া ডেঙ্গু নিয়ে সচেতনতায় চসিক প্রতিটি ওয়ার্ডে ‘আরবান কমিউনিটি ভলান্টিয়ার’দের একটি করে দল গঠন করে তাদের পরিচয়পত্র ও নির্দিষ্ট ইউনিফর্ম দেওয়া হয়েছে। ওয়ার্ডের আয়তনভেদে ৩০ থেকে ৪০ জন করে স্বেচ্ছাসেবক রাখা হয়। চসিকের উপ-প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা মোরশেদুল আলম চৌধুরী বলেন, এখন মশার মৌসুম চলছে।

তাই চসিক নতুন করে আগামীকাল শনিবার থেকে মশক নিধনে কালো তেল আর লার্ভিসাইড ছিটিয়ে প্রজনন ক্ষেত্র ধ্বংসে ক্র্যাশ প্রোগ্রাম চালু হবে। এবার সম্পূর্ণ নতুন পরিকল্পনায় ক্র্যাশ প্রোগ্রাম পরিচালিত হবে।

চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালের পরিচালক (প্রশাসন) ডা. নুরুল হক বলেন, কিছু দিন ধরে হাসপাতালে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। তবে এর মধ্যে শিশু রোগীর সংখ্যাটা একটু বেশি। মঙ্গল ও বুধবার মৃত্যু হওয়া দুজনই ডেঙ্গু পজিটিভ ছিল।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর