শনিবার, ২০ নভেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

কর্ণফুলী টানেলে যানজট এড়াতে সিএমপির ট্রাফিক পরিকল্পনা

মুহাম্মদ সেলিম, চট্টগ্রাম

দেশের যোগাযোগব্যবস্থার যুগান্তকারী প্রকল্প কর্ণফুলী টানেল ধীরে ধীরে স্বপ্নের ডানা মেলছে। কর্ণফুলী নদীর তলদেশে প্রথম টিউবে চলছে যান চলাচলের উপযোগী করার কর্মযজ্ঞ। অন্যটিতেও এক মাসের মধ্যে শুরু হবে একই নির্মাণযজ্ঞ। তবে টানেলের ওপর চোখ রাঙাচ্ছে বর্তমান ট্রাফিক ম্যানেজমেন্ট পরিকল্পনা। চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের (সিএমপি) দাবি, বর্তমান ট্রাফিক পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে টানেলে যানজটের শঙ্কা রয়েছে। তাই এ সমস্যা উত্তরণে তারা কিছু প্রস্তাব দিয়েছে। সিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ট্রাফিক) শ্যামল কুমার নাথ বলেন, ‘টানেলের বর্তমান ট্রাফিক পরিকল্পনায় কিছুটা আপত্তি রয়েছে সিএমপির। সংযোগ সড়কের নকশাগত ত্রুটির কারণে যানজটের শঙ্কা রয়েছে। বিষয়টা নজরে আসার পর প্রকল্পসংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলেছে সিএমপি। এরই মধ্যে কিছু প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছে প্রকল্পসংশ্লিষ্টদের। তারা সিএমপির প্রস্তাব গ্রহণ করেছে।’ প্রকল্পসংশ্লিষ্ট সূত্র জানান, টানেলের ট্রাফিক ম্যানেজমেন্টের নকশা পরিবর্তনের জন্য সিএমপির ট্রাফিক বিভাগ কিছু প্রস্তাব দিয়েছে। তাদের পাঠানো প্রস্তাব নিয়ে এখন কাজ চলছে। সব সেবা সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় করে তাদের দেওয়া প্রস্তাব বাস্তবায়ন করা হবে। কর্ণফুলী টানেলের প্রথম টিউবে চলছে স্লাব তৈরির কাজ। দ্বিতীয় টিউবের খননকাজ শেষ হওয়ার পর এখন চলছে ভিতর থেকে বোরিং মেশিন ও অন্যান্য সরঞ্জাম সরানোর কাজ। যা সরাতে লাগবে আরও এক মাস। নগর ও আনোয়ারা প্রান্তে সংযোগ সড়ক ও অন্যান্য কাজও চলছে দ্রুততার সঙ্গে। তবে টানেলের বর্তমান ট্রাফিক ম্যানেজমেন্ট পরিকল্পনা নিয়ে আপত্তি জানিয়েছে সিএমপি। তাদের দাবি, কর্ণফুলী টানেলের ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার বর্তমান পরিকল্পনা অনুযায়ী টানেলের মহানগরের অংশ থেকে পতেঙ্গা সৈকত রোড-আউটার রিং রোড হয়ে যানবাহন যাবে ফৌজদারহাটের দিকে। অন্যদিকে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে-বিমানবন্দর সড়ক হয়ে মহানগরে প্রবেশ করবে যানবাহন। টানেলের বর্তমান ট্রাফিক ম্যানেজমেন্ট পরিকল্পনা ও নকশা অনুযায়ী প্রকল্পের সংযোগ সড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে যে নকশা করা হয়েছে তাতে সুফলের পরিবর্তে সংকট তৈরি হবে। টানেল দিয়ে যান চলাচল বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে তৈরি হবে যানজট। কর্ণফুলী টানেল পুরোদমে চালু হলে প্রতিদিন গড়ে ১৭ হাজার গাড়ি চলবে। প্রতি বছর ৭ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পাবে যান চলাচল। এ হিসেবে ২০৩০ সালে কর্ণফুলী টানেল দিয়ে যান চলাচল করবে গড়ে ৩৮ হাজার। ২০৪০ সালে তা বেড়ে হবে ৬২ হাজার এবং ২০৬০ সালে কর্ণফুলী টানেল দিয়ে দৈনিক গড়ে চাল চলাচল করবে ১ লাখ ৩০ হাজার। প্রকল্পের বর্তমান ট্রাফিক পরিকল্পনা অনুযায়ী যান চলাচলে বিঘ্ন না হলেও ১০ থেকে ১৫ বছরের মধ্যেই জটিলতা হবে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায়। শুরু হবে যানজট। চীনের সাংহাই মহানগরীর আদলে চট্টগ্রাম শহর ও আনোয়ারাকে ‘ওয়ান সিটি টু টাউন’-এর আদলে কর্ণফুলী নদীতে তৈরি হচ্ছে টানেল।

মেগা এ প্রকল্পের এক প্রান্তে রয়েছে চট্টগ্রাম মহানগর, বিমান ও সমুদ্র বন্দর। অন্য প্রান্তে আনোয়ারার ভারী শিল্প এলাকা। টানেলের মাধ্যমে এ দুই প্রান্ত যুক্ত হবে। এতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসবে শিল্পকারখানা ও পর্যটন শিল্পের।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর