শনিবার, ২০ নভেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

পাঁচ বছরেও তদন্তে অগ্রগতি নেই দিয়াজ হত্যা মামলার

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম

ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সহসম্পাদক ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) সাবেক ছাত্র দিয়াজ ইরফান চৌধুরী হত্যা মামলার পাঁচ বছর পার হলেও তদন্তে নেই দৃশ্যমান অগ্রগতি। দুই আসামি জামিনে, অন্যরা ঘুরছে প্রকাশ্যে। ফলে বিচার পাওয়া নিয়েও দেখা দিয়েছে সংশয়। নিহতের পরিবারের অভিযোগ, আসামিরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও ছাত্রলীগের  নেতা-কর্মী হওয়ায় এগোচ্ছে না তদন্ত। প্রকাশ্যে ঘুরলেও গ্রেফতার করা হচ্ছে না আসামিরা। তাদের গ্রেফতারে তদন্তকারী সংস্থারও আগ্রহ কম। উল্টো আসামিরা নানাভাবে হুমকি দিচ্ছে। মনে হয় কোনো এক অদৃশ্য চাপে মামলাটির অগ্রগতি হচ্ছে না। জানা যায়, ২০১৬ সালের ২০ নভেম্বর রাতে চবির দক্ষিণ ক্যাম্পাসে নিজের বাসা থেকে উদ্ধার করা হয় দিয়াজের ঝুলন্ত মরদেহ। ঘটনার তিন দিন পর চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের চিকিৎসকদের দেওয়া প্রথম ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে ঘটনাটিকে ‘আত্মহত্যা’ উল্লেখ করা হয়। তবে শুরু থেকেই তার পরিবার ও ছাত্রলীগের একটি পক্ষ দাবি করে আসছিল, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন নির্মাণকাজের দরপত্র নিয়ে কোন্দলের সূত্র ধরে এটি ‘পরিকল্পিত হত্যা’। তাই তারা ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করে ওই বছরের ২৪ নভেম্বর দিয়াজের মা জাহেদা আমিন চৌধুরী আদালতে হত্যা মামলা এবং পুনঃময়নাতদন্ত দাবি করেন। তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত দিয়াজের মরদেহ কবর থেকে তুলে ময়নাতদন্তের আদেশ দেয়। ২০১৬ সালের ১০ ডিসেম্বর মরদেহ তুলে দ্বিতীয় দফা ময়নাতদন্ত করে ঢাকা মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগ। ২০১৭ সালের ৩০ জুলাই ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, দিয়াজের শরীরে আঘাতজনিত জখমের মাধ্যমে হত্যার আলামত রয়েছে।

এরপর আদালতের নির্দেশে হাটহাজারী থানায় হত্যা মামলা রেকর্ড হয়। তখনকার ওসি বেলাল উদ্দিন মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর ঘটনার তদন্ত শুরু করেন। পরে মামলার তদন্তভার যায় সিআইডির কাছে। সিআইডির দায়িত্বপ্রাপ্ত তদন্ত কর্মকর্তা বারবার বদলি হন। বর্তমানে তদন্ত করছেন সিআইডি চট্টগ্রাম জোনের সহকারী পুলিশ সুপার আবদুস সালাম।

মামলার বাদী ও দিয়াজের মা জাহেদা আমিন চৌধুরী বলেন, অদৃশ্য শক্তির কাছে একটি হত্যার ঘটনা চাপা পড়ে রয়েছে। মামলার কারণে প্রকাশ্যে হুমকি দিচ্ছে। তাছাড়া অভিযুক্তরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিতরে অবৈধভাবে থাকছে। আমার কথা একটাই, শেষ নিঃশ্বাস থাকা পর্যন্ত আমি আইনি লড়াই করে যাব। খুনের সময় নিজ চোখে না দেখলেও ঘর ভাঙচুরের সময় আমি সব আসামিকে নিজ চোখে দেখেছি। যাদের আসামি করেছি, এর বাইরেও আসামি আছে।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডি চট্টগ্রাম জেলার সহকারী পুলিশ সুপার আবদুস সালাম বলেন, দিয়াজের মামলাটির তদন্ত চলছে। তদন্তে কিছু অগ্রগতি হয়েছে। আশা করি একটা ভালো তদন্ত হবে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর