শুক্রবার, ২৬ নভেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

আব্বাসের পরিণতিও হতে পারে জাহাঙ্গীরের মতো

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী

গাজীপুরের মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের পরিণতির দিকে এগোচ্ছে রাজশাহীর কাটাখালী পৌরসভার মেয়র আব্বাসের ভাগ্য। রাজশাহীতে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল স্থাপন নিয়ে কাটাখালী পৌর মেয়র আব্বাস আলীর বিতর্কিত মন্তব্যকে কেন্দ্র করে উত্তাল হয়ে উঠেছে রাজশাহীর রাজনীতি। এরই মধ্যে দলীয় ও আইনগতভাবে ব্যবস্থা নেওয়া শুরু হয়েছে মেয়র আব্বাস আলীর বিরুদ্ধে। গতকাল সকালে সংবাদ সম্মেলন করে দল ও পদ থেকে তার অপসারণ দাবি করেছে মহানগরী আওয়ামী লীগ। বিকালে বিক্ষোভ মিছিলও করেছে। এ ছাড়া নগরীতে সংবাদ সম্মেলন করে দলীয় সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানিয়েছেন ওই আসনের এমপি আয়েন উদ্দিন। এ ছাড়া সকালে কাটাখালী পৌর এলাকায় বিক্ষাভ মিছিল ও মানববন্ধন করে মেয়র আব্বাস আলীকে বহিষ্কারের পাশাপাশি তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি ওঠে।

এ নিয়ে পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের ধস্তাধস্তিও হয়। কোর্ট চত্বরে মানববন্ধন করেছেন আইনজীবীরা।

নগরীর বোয়ালিয়া থানায় আব্বাস আলীর বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেছেন ১৩ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও নগর স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি আবদুল মোমিন। এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে আজ জরুরি বৈঠক ডেকেছে রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগ। তাকে সাংগঠনিক পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়াসহ শোকজ করা হবে বলে জানান জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক আবদুল ওয়াদুদ দারা। বৈঠক থেকে আব্বাসকে বহিষ্কারের সুপারিশ করে চিঠি কেন্দ্রে পাঠানো হবে বলেও জানান তিনি। অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে গাজীপুরের মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের মতোই পরিণতি হতে পারে কাটাখালীর পৌর মেয়র আব্বাস আলীর, এমনটা জানিয়েছেন কেন্দ্রের একাধিক নেতা। রাজশাহী বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘রাজশাহীতে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল স্থাপনের বিরোধিতা করে কাটাখালীর পৌর মেয়র আব্বাস আলীর দেওয়া বক্তব্যের বিষয়টি জেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে আমাকে জানানো হয়েছে। আমি তাদের জেলা আওয়ামী লীগের জরুরি সভা ডাকার পরামর্শ দিয়েছি। জেলা আওয়ামী লীগের সুপারিশের ভিত্তিতে কেন্দ্র অভিযোগের বিষয়টি যাচাই-বাছাই করে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।’ আওয়ামী লীগের অন্য এক সূত্র জানিয়েছেন, এরই মধ্যে বিষয়টি আওয়ামী লীগের হাইকমান্ডের নজরে এসেছে। ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেলে মেয়র আব্বাস আলীকেও জাহাঙ্গীর আলমের পরিণতি বরণ করতে হবে।

রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল ওয়াদুদ দারা বলেন, কাটাখালীর মেয়র অমার্জনীয় অপরাধ করেছেন বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল স্থাপন নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করে। তার আপত্তিকর বক্তব্যের জন্য এরই মধ্যে নেতা-কর্মীরা ক্ষুব্ধ। বিষয়টি এরই মধ্যে কেন্দ্রে জানানো হয়েছে। আব্বাসের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য আজ জেলা আওয়ামী লীগের জরুরি বৈঠক ডাকা হয়েছে। বৈঠকে তাকে পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হবে, একই সঙ্গে শোকজ করা হবে। সব নথিসহ জেলা আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্ত কেন্দ্রে পাঠানো হবে তাকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কারের সুপারিশ করে।

এ ছাড়া এ ঘটনার জেরে কাটাখালী পৌরসভার মেয়র আব্বাস আলীর বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলার তদন্ত শুরু করেছে নগর পুলিশ। বোয়ালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নিবারণ চন্দ্র বর্মণ বলেন, ‘মেয়র আব্বাসের বিরুদ্ধে করা ডিজিটাল আইনে মামলাটির তদন্ত শুরু হয়েছে। ওই মামলায় তাকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। তিনি পলাতক।’

তবে নিজের সপক্ষে মঙ্গলবার রাতে ফেসবুকে পোস্ট করে মেয়র আব্বাস আলী দাবি করেন, ছড়িয়ে পড়া অডিওটি এডিট করা। এ রকম কথা তিনি বলেননি।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর