‘নতুন নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠনের আগে আইন করা সম্ভব নয়’- আইনমন্ত্রীর এ বক্তব্যের সঙ্গে একমত নয় সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)। তারা বলেছে, সরকারের সদিচ্ছা থাকলে জাতীয় সংসদের আগামী অধিবেশনেই এ আইন পাস করা সম্ভব। কিন্তু আইনমন্ত্রীর বক্তব্যে স্পষ্ট এবারও অস্বচ্ছ পদ্ধতিতেই ইসি গঠন করা হবে। সরকার একটি আজ্ঞাবহ কমিশন গঠনে বদ্ধপরিকর। নির্বাচন কমিশন আইন প্রণয়নে দ্রুত উদ্যোগ গ্রহণের দাবিতে গতকাল আয়োজিত এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলা হয়।

নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ আইন কেমন হতে পারে তার একটি খসড়া তৈরি করে সম্প্রতি আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের কাছে হস্তান্তর করেছিল সুজন। এ বিষয়ে ১৮ নভেম্বর আইনমন্ত্রী সংসদে বলেন, ‘২০২২ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে এ আইন করা সম্ভব হবে না।’

তিনি বলেন, ‘অস্বচ্ছ পদ্ধতিতে নিয়োগের ফলে এসেছিল রকিবউদ্দীন কমিশন ও নূরুল হুদা কমিশন। এ দুই কমিশনের সদস্যদের চরম পক্ষপাতদুষ্ট আচরণের ফলে দেশের নির্বাচন প্রক্রিয়া প্রায় ধ্বংস হয়ে গেছে। বর্তমান নূরুল হুদা কমিশন নির্বাচনব্যবস্থাকে যে পর্যায়ে নিয়ে গেছে তা থেকে উত্তরণ ঘটাতে না পারলে দেশ মহাসংকটের দিকে ধাবিত হতে পারে।’

সংবাদ সম্মেলনে সিনিয়র আইনজীবী শাহদীন মালিক বলেন, ‘প্রত্যাশা ছিল সরকার স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় একটি গ্রহণযোগ্য কমিশন গঠনে উদ্যোগী হবে, যার প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে একটি আইন পাস করবে। কিন্তু এটি স্পষ্ট যে সরকার আইন করতে চায় না। আজ্ঞাবহ সার্চ কমিটি দিয়ে আজ্ঞাবহ কমিশন গঠনের জন্য সরকার বদ্ধপরিকর।’

দ্রুত আইন প্রণয়নের দাবি জানিয়ে এই আইনজীবী বলেন, ‘আজ্ঞাবহ কমিশন করার ফল বহু দেশে বহু জায়গায় দেখা গেছে। জনগণ একটা সময় পর্যন্ত ধৈর্য ধরে থাকে। কিন্তু সরকারের এসব কর্মকান্ডের কারণে জনগণের ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে যায়।’

স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘আগামী অধিবেশনেই আইনটি পাস করা যেন সম্ভব হয় তা সরকার বিবেচনা করবে বলে আশা করব।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক রোবায়েত ফেরদৌস বলেন, ‘রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান যখন ব্যর্থ হয় তখন রাষ্ট্র ব্যর্থ হয়। নির্বাচন কমিশন রাষ্ট্রের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রতিষ্ঠান। কমিশন আইন না হওয়া পর্যন্ত আমাদের লড়াই অব্যাহত রাখতে হবে।’