শনিবার, ৪ ডিসেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

ঢাবি ছিল ঔপনিবেশিক শাসনবিরোধী জাগরণের সূতিকাগার

শতবর্ষের আলোচনা সভায় বক্তারা

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক

মূলত বাঙালি মুসলিম মধ্যবিত্ত সমাজের বিকাশের ইতিবাচক পরিবেশ সৃষ্টি করার জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠা হয়েছিল। কিন্তু এটি শুরু থেকেই ঔপনিবেশিক শাসনের বিরুদ্ধে জাগরণের সূতিকাগার হয়ে গড়ে উঠেছিল। তখন থেকেই এটি একটি ভিন্ন মাত্রিক বিশ্ববিদ্যালয় ছিল এবং আছে। দেশভাগ থেকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা, সবক্ষেত্রে রয়েছে এর অবিস্মরণীয় ভূমিকা।  ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষ এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে গতকাল আয়োজিত আলোচনা সভায় এ কথা বলেন বক্তারা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের অনারারি অধ্যাপক ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর অধ্যাপক ড. আতিউর রহমানের সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য রাখেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন, সংসদ সদস্য রাশেদ খান মেনন, পল্লী কর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য  অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ার হোসেন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. রহমত উল্লাহ প্রমুখ।  মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী মোজাম্মেল হক বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সৃষ্টি না হলে বোধ হয় পাকিস্তানই সৃষ্টি হতো না। বাঙালিরাই ভোট দিয়ে পাকিস্তান সৃষ্টি করেছিল। ’৪৬ এ যে ভোট হয়েছিল, সেটাকে আমরা যদি গণভোট ধরি, সেই ভোটের মাধ্যমে পাকিস্তান সৃষ্টি হয়েছিল। কেননা, এখন যারা পাকিস্তানপন্থি, তারা সেদিন পাকিস্তান চাননি, তারা অবিভক্ত ভারতের পক্ষে ভোট দিয়েছিলেন। সেদিন ছাত্রনেতা হিসেবে বঙ্গবন্ধু তার নেতা হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর নেতৃত্বে পাকিস্তান গঠনে ভূমিকা  রেখেছিলেন। তিনিই আবার আমাদের মায়ের ভাষা বাংলাকে যখন প্রাধান্য দেওয়া হলো না- তখন তিনিই প্রতিবাদ করেছেন।  জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বলেন, বাস্তবের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে আমাদের অবশ্যই কর্মমুখী শিক্ষার ওপর জোর দিতে হবে। এই জন্য প্রতিনিয়ত গবেষণার প্রয়োজন, আমাদের শিক্ষাকে কীভাবে আগামী দিনের জন্য প্রস্তুত করতে পারি। অধ্যাপক ড. আতিউর রহমান বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি মেল্টিং পট। যেখানে আমরা সমাজের বিভিন্ন পর্যায় থেকে এসে আধুনিক মনস্ক মধ্যবিত্তের প্রতিনিধি বা বাঙালি হিসেবে গড়ে উঠেছি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতি আমাদের ঋণের শেষ নেই।

দেশভাগের পর আমরা দেখেছি, এই বিশ্ববিদ্যালয়ে গড়ে উঠেছে, কত আন্দোলন, গড়ে উঠেছে নানা রকমের বিপ্লবী আন্দোলন। এখানেই ভাষা আন্দোলনের সূত্রপাত।

তিনি আরও বলেন, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের এই সময়ে বিশ্বমানের জনসম্পদ তৈরির জন্য যে উন্নত মানের বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তোলার- আমরা সেই অঙ্গীকার করছি। সব অংশীজনের সহযোগিতায় কাক্সিক্ষত উন্নয়ন অভিযাত্রায় নিশ্চয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ভূমিকা পালন করবে। প্রয়োজন বাড়তি মনোযোগ এবং বিনিয়োগের, সেই সক্ষমতা নিশ্চয়ই সরকার এবং অংশীজনদের আছে।

সর্বশেষ খবর