বৃহস্পতিবার, ৯ ডিসেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

গ্রাহকের আবেদন ছাড়াই ব্যাংকে ৯০ লাখ টাকার ঋণ মঞ্জুর

ব্যাংক ম্যানেজারসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক, খুলনা

খুলনার দৌলতপুরে ব্যবসায়ী শেখ অহিদুল ইসলামের কোনো আবেদন ছাড়াই ব্যাংকে তার নামে ৯০ লাখ টাকার ঋণ মঞ্জুর হয়েছে। তিন মাস ধরে সেখানে লেনদেনও হয়েছে। সাতক্ষীরার এনআরবিসি ব্যাংক কলারোয়া শাখায় এ ঘটনা ঘটেছে। বিষয়টি জানাজানি হলে গ্রাহকদের মধ্যে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়। এদিকে এ ঘটনায় জড়িত ব্যাংক ম্যানেজারসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে খুলনার দৌলতপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী। পুলিশ থানায় জিডি করে দুদককে অবহিত করেছে। অভিযুক্তরা হচ্ছেন- এনআরবিসি ব্যাংক কলারোয়া শাখার ম্যানেজার মোশারেফ হোসেন, ম্যানেজার অপারেশন শাহেদ শরীফ, জুনিয়ার অফিসার বদিয়ার রহমান, ব্যবসায়ী আবদুল হালিম শেখ এবং অজ্ঞাত ব্যাংক কর্মকর্তা। যারা পরস্পরের যোগসাজশে জাল-জালিয়াতি করে এ ঋণ মঞ্জুর করেছে। জানা যায়, শেখ অহিদুল ইসলাম দৌলতপুরের রাজিব মটরসের স্বত্বাধিকারী ও খুলনা জেলা ট্রাক মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক। প্রায় এক বছর আগে পার্শ¦বর্তী ব্যবসায়ী রাব্বী এন্টারপ্রাইজের আবদুল হালিম শেখ এনআরবিসি ব্যাংকে হিসাব খোলার কথা বললে তিনি ব্যাংকের ফরমে স্বাক্ষর করেন।

কিন্তু কোনো টাকা জমা না দেওয়ায় বিষয়টি মনে রাখেননি। গত নভেম্বরে অহিদুল ইসলাম খুলনার ব্র্যাক ব্যাংকে ক্রেডিট কার্ড নেওয়ার জন্য আবেদন করেন। নিয়মানুযায়ী বাংলাদেশ ব্যাংক তার নামে অন্য ব্যাংকে ঋণ আছে কি না অনুসন্ধান করে। এ সময় ব্যাংকের সিআইবি প্রতিবেদনে তার নামে সাতক্ষীরার কলারোয়ার এনআরবিসি শাখায় ৯০ লাখ টাকার টাইম লোন (আর্নেস্ট মানি) পাওয়া যায়। যা গত ০৬/০৯/২০২১ তারিখে নেওয়া হয়েছে। যার মেয়াদ শেষ হবে ২০২২ সালে ৩ জানুয়ারি। এই ঋণ হিসাবে ০৬/০৯/২০২১ থেকে ০৮/১১/২০২১ পর্যন্ত ৯৭ লাখ ৭০ হাজার টাকার লেনদেন করা হয়েছে। ব্যাংক থেকে চেক বই গ্রহণ, পে-অর্ডার এমনকি ব্যাংকের সুদও পরিশোধ করা হয়েছে। ভুক্তভোগী শেখ অহিদুল ইসলাম জানান, তিনি কোনো দিন ওই ব্যাংকে যাননি। হিসাব খোলার ফরম ছাড়া ব্যাংকের অন্য কোনো কাগজে স্বাক্ষর করেননি। কোনো লেনদেন বা চেক বইয়ের জন্য আবেদনও করেননি। সেখানে ৯০ লাখ টাকার ঋণ নেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। তিনি আরও বলেন, ব্যাংকের ম্যানেজার এখন তাকে বারবার ফোন করে ক্ষমা চাচ্ছেন এবং অভিযোগ না করার জন্য অনুরোধ করছেন। দুর্নীতি দমন কমিশন খুলনা উপ-পরিচালক নাজমুল আহসান বলেন, এ অভিযোগটি তারা পেয়েছেন, প্রধান কার্যালয়ের অনুমতির পর তদন্ত শুরু করবেন। এনআরবিসি ব্যাংক কলারোয়া শাখা ম্যানেজার মোশারেফ হোসেন জানান, ব্যাংকে অহিদুল ইসলামের অভিযোগের পর এ টাকা সমন্বয় করে দেওয়া হয়েছে এবং গ্রাহকের কোনো অভিযোগ নেই বলে তিনি দাবি করেন।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর