শুক্রবার, ১৭ ডিসেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

এখনো তাঁর নাম শহীদ মুক্তিযোদ্ধার তালিকায়

জীবিত প্রমাণ করতে ঘুরছেন প্রশাসনের দ্বারে দ্বারে

নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট

১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে তিনি সিলেটের এমসি কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্র। ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী। দেশ-মাতৃকাকে হানাদার মুক্ত করতে ভারতের করিমগঞ্জ চলে যান। প্রশিক্ষণ নিয়ে ফিরে দেশ শত্রুমুক্ত করার সংগ্রামে যুক্ত হন। এক পর্যায়ে ধরা পড়েন পাকবাহিনীর হাতে। প্রায় ৩ সপ্তাহ পরে মুক্ত হন মৌলভীবাজার জেলার রাজনগর উপজেলার রাজাপুরের এই বীরমুক্তিযোদ্ধা আবদুল হান্নান। তিনি এখনো বেঁচে আছেন। মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তার নাম রয়েছে শহীদ মুক্তিযোদ্ধার তালিকায়। তিনি নিজেকে জীবিত প্রমাণে ঘুরছেন প্রশাসনের দ্বারে দ্বারে। সর্বশেষ গত ১৮ জানুয়ারি মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের এ সংক্রান্ত একটি আবেদন করেছেন। তবে এখনো তিনি রয়ে গেছেন ‘শহীদ’ মুক্তিযোদ্ধা হিসেবেই। আবদুল হান্নান জানান, ভারতে প্রশিক্ষণ শেষে দেশে ফিরে শ্রীমঙ্গলের সাতগাঁওয়ে পাকিস্তানি সেনাদের ঘেরাওয়ের মুখে পড়েন তিনি ও তার দলের মুক্তিযোদ্ধারা। কৌশলগত কারণে ফের ভারতে চলে যান তারা। নভেম্বরের দিকে ফের দেশে ফিরে মুক্তিযোদ্ধাদের আশ্রয় ও প্রশিক্ষণের জন্য ক্যাম্প তৈরির কাজ শুরু করেন তিনিসহ ছয় সদস্যের দল। একপর্যায়ে দুই সহযোদ্ধাসহ তিনি ধরা পড়ে যান পাকবাহিনীর হাতে। মৌলভীবাজার জেলা সদরে পাকিস্তানি সৈন্যদের ব্রিগেড হেডকোয়ার্টারে বন্দি রাখা হয় তাদেরকে।

 ২০ দিন নির্যাতনের পর ছেড়ে দেওয়া হয় তাদেরকে। ২০১২ সালে তালিকায় নাম ওঠাতে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেন। ২০১৪ সালে মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা মাঠপর্যায়ে যাচাই-বাছাইয়ের লক্ষ্যে গঠিত কমিটি তথ্য-উপাত্ত ও কাগজপত্র দেখে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তাঁর নাম তালিকাভুক্ত করার সিদ্ধান্ত নেয়। সেই তালিকা জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলে পাঠানো হয়। ২০১৭ সালে জানলেন তাঁর নাম জীবিত মুক্তিযোদ্ধা নয়, শহীদ মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় উঠেছে।

আবদুল হান্নান জানান, মুক্তিযুদ্ধে শহিদ ছিফাত মিয়া ও দানু মিয়ার সঙ্গে তার নাম পাঠানো হয়েছিল। তাই হয়তো ভুলে তার নামও শহিদ মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় লিপিবদ্ধ হয়ে গেছে। এরপর থেকে আবদুল হান্নান নিজেকে জীবিত মুক্তিযোদ্ধা প্রমাণে প্রশাসনের বিভিন্ন দফতরে ধর্ণা দিয়ে যাচ্ছেন। কাজ হচ্ছেনা ।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর