শুক্রবার, ১৭ ডিসেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

কলকাতায় উপ হাইকমিশনে বিজয় দিবসের অনুষ্ঠান

কলকাতা প্রতিনিধি

কলকাতার বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশন প্রাঙ্গণে বিজয় দিবসের দুই দিনের অনুষ্ঠান শুরু হয়েছে গতকাল। অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার স্পিকার বিমান ব্যানার্জি। উপস্থিত ছিলেন উপ-হাইকমিশনার তৌফিক হাসান, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক শফি আহমেদ, মুক্তিযুদ্ধ সম্মাননাপ্রাপ্ত সাংবাদিক দিলীপ চক্রবর্তী প্রমুখ। 

বিজয় উৎসবে কলকাতার জনপ্রিয় গায়ক অনুপম রায়সহ খ্যাতনামা শিল্পীদের অংশগ্রহণে সাংস্কৃৃতিক অনুষ্ঠানের পাশাপাশি মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক আলোকচিত্র ও তথ্যচিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়।

বিমান ব্যানার্জি বলেন ‘বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে কেন্দ্র করে যে আবেগ তাদের মধ্যে আছে, সেই আবেগ ভারতে নেই।’

বাংলাদেশের আতিথেয়তা ও আন্তরিকতার প্রশংসা করেন তিনি। সেই সঙ্গে তার উপলব্ধি সে দেশে হিন্দুদের সংখ্যা কমে যাচ্ছে, এটা ভাবা দরকার।

তার আশঙ্কা- ভারতের ইতিহাসকে বিকৃত করার একটা চেষ্টা চলছে। আগামী দিনে বাংলাদেশের ক্ষেত্রেও কী হবে জানা নেই। যাই হোক, বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে সযত্নে লালন-পালন করতে হবে, কারণ কিছু সাম্প্রদায়িক শক্তি এটাকে নষ্ট করতে চায়। ভারতের ইতিহাসকে যেভাবে বিকৃত করার চেষ্টা হচ্ছে, ভবিষ্যতে বাংলাদেশেও এ রকম প্রচেষ্টা হতে পারে, এ ব্যাপারে আমাদের সজাগ থাকতে হবে। দুই বাংলার মৈত্রী যেন অটুট থাকে।

মিয়ানমার থেকে আসা রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়া নিয়ে বাংলাদেশের প্রশংসা করে তিনি বলেন ‘মিয়ানমার থেকে যে লাখ লাখ রোহিঙ্গা মুসলিম বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে তাতে দেশের অর্থনীতিতে একটা প্রভাব পড়ছে। এই চাপ সামলানোর ক্ষমতা অনেক দেশেরই নেই, কিন্তু তারপরও যেভাবে বাংলাদেশ সরকার এই রোহিঙ্গাদের আশ্রয়ের ব্যবস্থা করেছে তা অভূতপূর্ব।’

এদিনের বক্তব্য রাখার সময় ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে তিস্তার পানি বণ্টন প্রসঙ্গটিও উঠে আসে বিমান ব্যানার্জির গলায়। তিনি বলেন ‘যাই হোক, বিষয়টি নিয়ে মমতা ব্যানার্জি বেশ উদ্বিগ্ন। তিনি দিল্লির সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছেন। মমতা ব্যানার্জি চান বাংলাদেশের যেমন উন্নয়ন হয়, তেমনি পশ্চিমবঙ্গও উন্নয়নের রূপরেখা তৈরি করে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে পারে।’

পদ্মার ইলিশের সুখ্যাতি করে ব্যানার্জি বলেন ‘এর স্বাদই আলাদা। কলকাতার মানুষের জিভে এখনো জল আসে। বাংলাদেশে গিয়ে ইলিশ খেয়েছি এবং তার সঙ্গে কচুশাক- অসাধারণ লেগেছে। মুখে এখনো স্বাদ লেগে রয়েছে।’

গতকাল সকালে ভারতীয় সেনাবাহিনীর পূর্বাঞ্চলীয় সদর দফতর কলকাতার ফোর্ট উইলিয়ামে পালিত হয় মহান বিজয় দিবস। সকালে ফোর্ট উইলিয়ামের মূল ফটকের সামনে শহীদ স্মৃতিস্তম্ভে ফুলেল শ্রদ্ধা জানানো হয়।

ভারতের পক্ষে শহীদ বেদিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান ভারতের তিন বাহিনীর (স্থল, নৌ ও বিমান বাহিনী) পূর্বাঞ্চলীয় শাখার প্রধান। এ ছাড়াও বীর শহীদদের শ্রদ্ধা জানান দেশটির সাবেক সেনা কর্মকর্তারা।

বিকালে কলকাতার ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল চত্বরে বিজয় দিবস উপলক্ষে ‘লাইট অ্যান্ড সাউন্ড’, ব্যান্ড কনসার্টসহ একাধিক বর্ণিল অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

এদিকে টুইট করে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি লেখেন ‘৫০তম বিজয় দিবসে, আমি ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনী, মুক্তিযোদ্ধা ও বীরাঙ্গনাদের মহান বীরত্ব ও আত্মত্যাগের কথা স্মরণ করি। আমরা একসঙ্গে অত্যাচারী শক্তির বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছি এবং তাকে পরাজিত করেছি। ঢাকায় ভারতের রাষ্ট্রপতির উপস্থিতি প্রত্যেক ভারতীয়র কাছে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ।’

এদিন সকালে সল্টলেকের সেক্টর-ফাইভে ভিসা আবেদন কেন্দ্রের উদ্বোধন করেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন। তিনি ঢাকা থেকে ভার্চুয়াল মাধ্যমে এ ভিসা আবেদন কেন্দ্রের উদ্বোধন করেন।

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর