শনিবার, ১৮ ডিসেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

খুলনায় পাল্টাপাল্টি শোডাউনে বিএনপির দুই পক্ষ

বিভ্রান্তিতে নেতা-কর্মীরা ব্যক্তিবিশেষের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার অভিযোগ মঞ্জু সমর্থকদের

নিজস্ব প্রতিবেদক, খুলনা

তৃণমূলে নিজেদের আধিপত্য প্রমাণ করতে খুলনায় পাল্টাপাল্টি শোডাউন করেছে বিএনপির দুই পক্ষ। সদ্যবিদায়ী সভাপতি নজরুল ইসলাম মঞ্জুর নেতৃত্বে মহানগরীর গল্লামারী স্বাধীনতাসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন বিভিন্ন থানা ও ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা। সমাবেশ ও মিছিলে নগরীতে বিদায়ী সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান মনি, সিনিয়র যুগ্মসম্পাদক অধ্যক্ষ তারিকুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন। অন্যদিকে কেন্দ্র-ঘোষিত আহ্বায়ক কমিটিতে মনা-জহির-তুহিনের নেতৃত্বে দলীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ ও নগরীতে শোভাযাত্রা বের হয়। কর্মসূচিতে একই মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন সাবেক ছাত্রনেতা রকিবুল ইসলাম বকুল। দলের মঞ্জু অনুসারীদের অভিযোগ, মূলত তাঁর কারণেই কেন্দ্র-ঘোষিত আহ্বায়ক কমিটি চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। ১৬ ডিসেম্বর সকাল ও বিকালে পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি পালিত হয়। এসব কর্মসূচি ঘিরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও নানা মন্তব্য-পাল্টা মন্তব্য ছড়িয়ে পড়ে। এতে তৃণমূলের ত্যাগী নেতা-কর্মীরাও অস্বস্তি ও বিভ্রান্তিতে পড়েছেন। জানা যায়, ঘোষিত নতুন আহ্বায়ক কমিটির মনা-জহির-তুহিনের নেতৃত্বে নগরীতে শোভাযাত্রার পর তাদের অনুসারীরা বলছেন, ‘নবগঠিত খুলনা মহানগরী ও জেলা বিএনপির বিজয় দিবসের বিশাল মিছিল প্রমাণ করে কমিটি পুনর্গঠনে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সিদ্ধান্ত সঠিক-সময়োপযোগী।’ অনেকে সাবেক ছাত্রনেতা রকিবুল ইসলাম বকুলকে ‘হ্যামিলনের বাঁশিওয়ালা’ দাবি করে বড় কর্মসূচি বাস্তবায়নে প্রশংসা করেন। এর জবাবে মঞ্জু সমর্থকরা ফেসবুকে পাল্টা স্ট্যাটাস দিয়ে ‘বাজারে টাকা দিলে অনেক রকমের অদ্ভুত কথা শোনা যায়’ বলে মন্তব্য করেছেন। এ নিয়ে দলের বাইরেও হাসি-তামাশার সৃষ্টি হচ্ছে। জানা যায়, ৯ ডিসেম্বর মহানগরী সভাপতি নজরুল ইসলাম মঞ্জুসহ শীর্ষ সব নেতাকে বাদ দিয়ে কেন্দ্র-ঘোষিত আংশিক কমিটিতে জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি শফিকুল আলম মনাকে আহ্বায়ক করা হয়। এ ছাড়া তরিকুল ইসলাম জহিরকে সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক ও শফিকুল আলম তুহিনকে সদস্যসচিব করা হয়েছে। এর পরই বিএনপিতে বিভক্তি তৈরি হয়। এদিকে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগ তুলে নজরুল ইসলাম মঞ্জুকে ‘শোকজ’ করেছে কেন্দ্র। তবে মঞ্জু বলেন, ‘আমি দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ করিনি। আক্রমণাত্মক কথাও বলিনি। আমি শুধু ঘোষিত কমিটি পুনর্মূল্যায়নের দাবি জানিয়েছি।’ এদিকে ঘোষিত নগর কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক তরিকুল ইসলাম জহির বলেন, ‘নজরুল ইসলাম মঞ্জু আমাদের নেতা। তাঁকে সঙ্গে নিয়েই আমরা চলতে চাই। নগর আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণার পর দলে সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে আমরা কথা বলেছি। ঐক্যবদ্ধ বিএনপি গঠনে সবাইকে নিয়ে কাজ করতে চাই।’

তবে মঞ্জু সমর্থক ও নগর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যক্ষ তারিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা মনে করি দলের সাংগঠনিক প্রক্রিয়ায় কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে নজরুল ইসলাম মঞ্জুকে একত্রিত করে তাঁর যৌক্তিক দাবি বিবেচনা করা উচিত।

দীর্ঘ আন্দোলন সংগ্রামে যাদের ত্যাগ রয়েছে আলাপ-আলোচনার ভিত্তিতে যার যার প্রাপ্ত সম্মানজনক পদ দিয়ে কমিটি পুনর্বিবেচনা করা গেলে সংকট উত্তরণ হবে। একই সঙ্গে ব্যক্তিবিশেষের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার জায়গা থেকে সরতে হবে। অন্যথায় দল ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর