রবিবার, ১৯ ডিসেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

শামীম ওসমানের আবেগাপ্লুত একাত্তরের বর্ণনা

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি

শামীম ওসমানের আবেগাপ্লুত একাত্তরের বর্ণনা

‘নৌকার সামনে পাট, পেছনে পাট, মাঝে মা, বাবা, দুই ভাই ও দুই বোনের সঙ্গে ভারতে যাচ্ছিলেন ছোট শামীম ওসমান। হঠাৎ পাকিস্তানি গানবোট সামনে এসে হাজির। এরই মধ্যে বাবা ও দুই ভাই মা এবং দুই বোনের গলায় গামছা পেঁচিয়ে ধরলেন, সিদ্ধান্ত হলো ধরা পড়লে শ্বাসরোধ করে নিজেরাই নিজেদের হত্যা করবেন, তার পরেও ধর্ষিত হতে দেবেন না। এরপর হুমড়ি খেয়ে পড়বেন, যা হয় হবে। এটার নামই স্বাধীনতা।’  একাত্তরে স্বাধীনতাযুদ্ধে এমন ভয়ংকর অভিজ্ঞতার কথা বলতে গিয়ে গত শুক্রবার রাতে নারায়ণগঞ্জ ক্লাবের এক অনুষ্ঠানে আবেগে আপ্লুত হয়ে এভাবেই বলেন নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য শামীম ওসমান। ঐতিহ্যবাহী নারায়ণগঞ্জ ক্লাবের উদ্যোগে একাত্তরে মহান স্বাধীনতাযুদ্ধে অংশ নেওয়া ৩৭ সদস্য ও তাঁর পরিবারকে সংবর্ধনা দেওয়ার জন্য এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। অনুষ্ঠানে শামীম ওসমান আরও বলেন, ‘আমার বাবা মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ছিলেন। বঙ্গবন্ধুর পরিবারকে মুক্ত করতে গিয়ে আমার বাবা গুলি খেয়েছিলেন। রেডিও বাংলাদেশ, হাই কোর্ট, বাংলাদেশ টেলিভিশনেও প্রথম পতাকা উত্তোলন করেছেন তিনি। তখন তো রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি ছিল না। এখন তো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি। তার পরেও কবরস্থানে গিয়ে দেখেছি, মুক্তিযোদ্ধাদের কবরের কী করুণ পরিস্থিতি। আমার বাবা-মায়ের কবর আমি পরিষ্কার করেছি। এখন কিছু মুক্তিযোদ্ধার কবরের ইটও নাই। ১০০-১৫০ কবরে শ্মশানের মাটি পড়েছে। কার কবর কোনটা, চেনার উপায় নেই। হয়তো মোহাম্মদ আলী ভাইও চুপ করে গিয়ে দেখে এসেছেন। হয়তো ভেবেছেন, আমার কবরেরও এই অবস্থা হবে ভবিষ্যতে! আমি কিন্তু কাউকে দোষারোপ করিনি, এখনো করছি না।’

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর