মঙ্গলবার, ২১ ডিসেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

৭ দশমিক ২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জনের প্রত্যাশা অর্থমন্ত্রীর

নিজস্ব প্রতিবেদক

৭ দশমিক ২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জনের প্রত্যাশা অর্থমন্ত্রীর

চলতি ২০২১-২২ অর্থবছর ৭ দশমিক ২ শতাংশ প্রবৃদ্ধির যে প্রাক্কলন করা হয়েছে তা অর্জনের প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। গতকাল অর্থমন্ত্রীর সভাপতিত্বে ভার্চুয়ালি অর্থনৈতিক-বিষয়ক সংক্রান্ত ও সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা জানান। জিডিপি প্রবৃদ্ধি বিষয়ে তিনি বলেন, ‘বর্তমান অর্থবছরে আমাদের বাজেটের আকার যেটা রয়েছে, সেখানে আমাদের প্রাক্কলিত প্রবৃদ্ধি রয়েছে ৭ দশমিক ২ শতাংশ। আমরা বিশ্বাস করি ৭ দশমিক ২ শতাংশ অর্জন করতে পারব। আপনারা জানেন বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফ সব সময় এ বিষয়ে একটু অন্য রকম। তবে ভালো খবর হলো আমরা ৭ দশমিক ২ অর্জন করতে পারব। আমরা যদি কাছাকাছি সময় দেখি তাহলে আমরা দেখতে পাই প্রতিটা খাতেই আমাদের প্রবৃদ্ধি আছে। ভালোভাবে প্রবৃদ্ধি অর্জন করছি। আমাদের এক্সপোর্টও বেড়েছে। এক্সপোর্টে যা আশা করেছিলাম তার চেয়ে বেশি হয়েছে।’ জনশুমারি প্রকল্প ফেরত দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘দেশে তৈরি করা জিনিস আমরা ব্যবহার করতে চাই।

 সে জন্য আমরা সময় বেশি নিচ্ছি। কারণ মেড-ইন-বাংলাদেশ ইজ অ্যা কনসেপ্ট, ইজ অ্যা ফিলোসফি। আপনাকে বুঝতে হবে ৫০ বছর সামনে রেখে আমরা কিন্তু এ ধরনের ফিলোসফি ধারণ করছি। আমরা ইমপোর্ট করে আনলে সহজেই করা যায়। কিন্তু আমরা ইমপোর্টেড প্রোডাক্ট দেখতে চাই না। আমাদের দেশে যারা সক্ষম এগুলো তৈরির জন্য তাদের সুযোগ দিতে হবে। সে জন্যই সময় বেশি লাগছে। যাতে ভুলভ্রান্তি না হয় সেটি দেখা। দেশীয় কোম্পানিকেই দিতে চাইছি। আমরা চাই যেসব জিনিস দেশে তৈরি হয় সেগুলো আমরা বিদেশ থেকে কম ব্যবহার করব। আমরা নিজের পায়ে দাঁড়ানোর চেষ্টা করব। আমরা দেখতে চাই আমরা কোন জায়গায় পৌঁছাতে পারি।’

পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) বিভিন্ন দেশে রোড শো করার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘রোড শোর আউটকাম তো আছেই। রোড শো করার সঙ্গে সরাসরি কোনো হস্তক্ষেপ হয় বলে বিশ্বাস করি না। আমি বিশ্বাস করি রোড শোর একটি কার্যকারিতা আছে। সারা বিশ্বের মানুষের আগে যে ধারণা ছিল সেটি এখন থাকবে না। এখনো বিশ্বের মানুষ মনে করে আমাদের যে অগ্রগতি, অর্জন, এটা বিস্ময়ের বিষয় নয়, বাস্তবতা। আমি মনে করি আমরা ঠিক জায়গায় আছি।’

অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘অধিকাংশ খাতে প্রবৃদ্ধি আশানুরূপ হলেও বর্তমানে রেমিট্যান্সে (প্রবাসী আয়ে) আমরা একটু পিছিয়ে আছি। রেমিট্যান্স এখন যেভাবে এগোচ্ছে সেভাবে এগোলে ২১ বিলিয়ন ডলার পর্যন্ত আমরা আশা করতে পারি। কিন্তু আমাদের সামনে দুটি ঈদ রয়ে গেছে। ঈদের সময় রেমিট্যান্স বেশি আসে, সেটি বাদ দিয়েই কিন্তু আমরা ২১ বিলিয়ন ডলার প্রত্যাশা করছি। যে রেমিট্যান্স আমরা প্রত্যাশা করছি সেটি যদি পেয়ে যাই তাহলে এ বছর আমরা আশা করি ২৫ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স অর্জন করতে পারব।’

অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘প্রতিটা খাতে আমাদের প্রবৃদ্ধি এগিয়ে আছে, আমরা যথাযথ প্রবৃদ্ধি অর্জন করে যাচ্ছি। আমাদের রপ্তানি বেড়েছে, আমরা যে পরিমাণ আশা করেছিলাম তার চেয়ে বেশি হচ্ছে। নভেম্বরে এক মাসে আমাদের ৩১ শতাংশ রপ্তানি বেড়েছে। গত পাঁচ মাসে (জুলাই থেকে নভেম্বর) আমাদের রপ্তানি প্রবৃদ্ধি ২৪ দশমিক ৩ শতাংশ।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের আমদানি-রপ্তানি ভালো। এটা যেভাবে এগোচ্ছে, আমরা বিশ্বাস করি এ বছর আমাদের ৪৭-৪৮ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি হবে। এর মাধ্যমে নতুন একটি মাইলফলক অর্জন করতে যাচ্ছি আমরা।’

অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘গত ৫০ বছরে আমাদের অনেক অর্জন হয়েছে এটা আমি স্বীকার করি। এ অর্জন একইভাবে হয়েছে তা নয়। আপনারা জানেন আমাদের প্রথম ১০০ বিলিয়ন ডলার জিডিপি অর্জন করতে লেগেছিলে ৩৮ বছর। ৫০ বছরের মধ্যে ৩৮ বছর বাদ দিলে থাকে ১২ বছর। অধিকাংশ অর্জনই হয়েছে এই ১২ বছরে। ২০০৮ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত আমাদের সব অর্জন হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাই। তাঁর নেতৃত্বে এবং সুচিন্তিত মতামতে আমাদের অর্থনীতি যে গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে, আমি বিশ্বাস করি আগামীতে আমরা আরও ভালো কিছু অর্জন করতে পারব। আমাদের লক্ষ্য ২০৩০ সালের মধ্যে উচ্চ-মধ্যম আয়ের দেশে পৌঁছানো। এ ছাড়া ২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত বিশ্বের কাতারে আমাদের শামিল করব।’

সর্বশেষ খবর