বৃহস্পতিবার, ৩০ ডিসেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

সুখবরে বছর পার, ছিল শঙ্কাও

ফিরে দেখা - ২০২১ সিলেট

শাহ্ দিদার আলম নবেল, সিলেট

সময়ের গহ্বরে হারিয়ে যাচ্ছে আরেকটি বছর। নতুনের আবাহন এখন চারদিকে। নতুন বছর বরণের আগে পেছনে ফিরে দেখা যাচ্ছে, বিদায়ী বছরটি সিলেটের যোগাযোগ খাতের জন্য সুখবর বয়ে এনেছিল। এ অঞ্চলের মানুষের দীর্ঘদিনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে সিলেট-ঢাকা মহাসড়ক ছয় লেনে উন্নীত করার কাজ শুরু হয়েছে। এ ছাড়া বহুল কাক্সিক্ষত সিলেট-তামাবিল মহাসড়কও উন্নীত হচ্ছে ছয় লেনে। সুখবরের মধ্যে দুর্ভাবনা হয়ে দেখা দিয়েছিল একের পর এক ভূমিকম্প। এর বাইরে বছরের শেষ দিকে এসে সিলেট মহানগর এলাকায় হোল্ডিং ট্যাক্স ও পানির বিল বাড়ানো নিয়ে শোরগোল হয়েছে। জানা গেছে, রাজধানীর সঙ্গে দ্রুত যোগাযোগ এবং অর্থনৈতিক অগ্রগতির স্বার্থে সিলেট-ঢাকা মহাসড়ক ছয় লেনে উন্নীত করার দাবি ছিল সিলেট অঞ্চলের মানুষের। অব্যাহত দাবির মুখে ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে সিলেটে এক সমাবেশে মহাসড়কটি চার লেন করার প্রতিশ্রুতি দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগ ফের ক্ষমতায় আসীন হওয়ার পর সিলেট-১ আসনের সংসদ সদস্য ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন মহাসড়কটি দুটি সার্ভিস লেনসহ ছয় লেনে উন্নীত করার প্রচেষ্টা শুরু করেন। তার প্রচেষ্টায় গতি পায় এ সংক্রান্ত প্রকল্প। চলতি বছরের ১৬ ফেব্রুয়ারি একনেকে প্রকল্পটি অনুমোদন পায়। ১৬ হাজার ৯১৮ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে সড়ক ও জনপথ অধিদফতর। কাজ শেষ হওয়ার মেয়াদ ধরা হয়েছে ২০২৬ সালের ডিসেম্বর মাস। গত ২৪ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঢাকা থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে মহাসড়কটি ছয় লেনে উন্নীতকরণ প্রকল্পে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। এদিকে, সিলেট-তামাবিল মহাসড়কটিও বর্ধিত করছে সরকার। গত ১ সেপ্টেম্বর ৩ হাজার ৫৮৩ কোটি টাকা ব্যয়ে মহাসড়কটি ছয় লেনে উন্নীতকরণ প্রকল্পের অনুমোদন দেয় একনেক। বর্তমানে প্রকল্পটি দরপত্র আহ্বানের অপেক্ষায় রয়েছে। ২০২৫ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে এ প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা। শেষের পথে থাকা বছরে সিলেটের স্বাস্থ্য খাতেও কিছু সুখবর এসেছে। এ অঞ্চলের মানুষের চিকিৎসাসেবার সবচেয়ে বড় আশ্রয়স্থল ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নতুন ১০ তলা ভবনের উদ্বোধন করা হয়েছে।

সেন্ট্রাল অক্সিজেন সংযোগ লাইন স্থাপনের কাজ শুরু হয়েছে। এ হাসপাতালে দেশের প্রথম ‘কক্লিয়ার ইমপ্ল্যান্ট ল্যাবরেটরি’ চালু হয়েছে। এখানে চিকিৎসার মাধ্যমে বধিরদের স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনা হবে।এদিকে, বিদায়ী বছরে সিলেটে দুর্ভাবনার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল একের পর এক ভূমিকম্প। বিশেষ করে বছরের মাঝামাঝি সময়ে পিঠাপিঠি ভূকম্পনে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিল মানুষ। গত ২৯ ও ৩০ মে এবং ৭ জুন- এ তিন দিনে অন্তত নয়বার ভূমিকম্প হয় সিলেট অঞ্চলে। এরপর ৭ জুলাই ফের মাঝারি ভূমিকম্প হয়। সিলেট অঞ্চলে ঘন ঘন ভূকম্পনের পরিপ্রেক্ষিতে জাতীয় পর্যায়ে একটি কারিগরি কমিটি গঠন করা হয়। এ কমিটি সিলেট ঘুরে গিয়ে জানায়, প্রাকৃতিক কারণেই একের পর এক ভূমিকম্প হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা সতর্কবার্তা দিয়ে বলেন, ঘন ঘন ভূমিকম্প বড় কোনো ভূমিকম্পের কারণ হতে পারে। তাই এখনই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ জরুরি।

বছরের শেষ দিকে এসে হোল্ডিং ট্যাক্স এবং পানির বিল বাড়ানোর সিদ্ধান্তের কথা জানায় সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক)। এ নিয়ে নগরবাসীর প্রতিবাদের মুখে পড়েন মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। মাঠ জরিপ শেষ করে গত অক্টোবরের শেষ দিকে সিসিকের পক্ষ থেকে জানানো হয়, প্রায় ১৪ বছর পর নগরীতে হোল্ডিং ট্যাক্স বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। জরিপের মাধ্যমে নতুন প্রায় ২০ হাজার বাসাবাড়িকে ট্যাক্সের আওতায় আনা হচ্ছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর