মঙ্গলবার, ৪ জানুয়ারি, ২০২২ ০০:০০ টা

কৃত্রিম চরে দখল কীর্তনখোলা

বন্দরের জমিতে হাজারো অবৈধ স্থাপনা, উচ্ছেদের উদ্যোগ নেই

রাহাত খান, বরিশাল

কৃত্রিম চর জাগিয়ে কীর্তনখোলা গ্রাস করছে নদীখেকোরা। নদী ড্রেজিং করে সেই পলি তীরে ফেলে বিশাল বিশাল চর বানিয়ে গড়ে তোলা হয়েছে হাজার হাজার বসতি, মাছের ঘের, ডেইরি ফার্ম, বাগানসহ অনেক কিছু। নদীর সীমানা রেখায় বন্দর কর্তৃপক্ষের জমিতেও  রয়েছে  হাজার  হাজার  অবৈধ  স্থাপনা। 

ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে নদীর অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদে ধারাবাহিক অভিযান চললেও বরিশালে শুধু ‘হচ্ছে’ আর ‘হবে’ বলে সময় সময়

পাড় করছেন সংশ্লিষ্টরা। শুধু দখল নয়, নদীবন্দর এলাকাসহ কীর্তনখোলা নদীর আটটি পয়েন্টে ময়লা-আবর্জনা ফেলে দূষণ করা হচ্ছে। নগরীর প্রবাহমান ২৪টি খাল দূষণে ড্রেন হয়ে গেলেও সেগুলা দিয়ে নগরীর সব বর্জ্য-ময়লা আর বড়-ছোট কল-কারখানার সব কেমিক্যাল বর্জ্য মিশছে কীর্তনখোলা নদীতে। প্রতিদিন সকালে বরিশাল নদীবন্দরে ঢাকা থেকে আগত লঞ্চগুলোর হাজারো যাত্রীর উচ্ছিষ্ট সরাসরি ঝাড়ু দিয়ে ফেলা হয় নদীতে। এতে ক্রমেই স্বচ্ছতা হারিয়ে বিষাক্ত হয়ে উঠছে কীর্তনখোলার পানি। অথচ এ নদীর পানিতে গৃহস্থালি কাজ চলে তীরবর্তী হাজার হাজার নিম্ন আয়ের পরিবারের। বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) বরিশালের সমন্বয়কারী রফিকুল আলম বলেন, ব্রিটিশ আমলে ১৮০০ সালে ডিস্ট্রিক কালেক্টর হেনরি বেভারেজের উদ্যোগে কীর্তনখোলা নদীর ভাঙন থেকে বরিশাল শহর রক্ষায় একটি বাঁধ নির্মাণ করা হয়। পরে ওই বাঁধের ওপর সড়ক নির্মাণ করা হয়েছে। যা নগরীর বান্দ রোড নামে পরিচিত। বাঁধ রোড সংলগ্ন নদীতে চর পড়তে শুরু করলে তৎকালীন কর্তৃপক্ষ ওই পলি অপসারণ না করে বরং মাঝ নদী থেকে পলি ড্রেজিং

করে চরে ফেলে আয়তন বাড়ায়। পোর্টরোড থেকে স্টেডিয়াম হয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড অফিস পর্যন্ত প্রায় ২ কিলোমিটার বিস্তৃত হয় নদী লাগোয়া চর। যে যেভাবে পেড়েছে দখলে নিয়েছে চরের জমি। আশির দশকে কীর্তনখোলা নদীর পোর্ট রোড লাগোয়া এলাকায় প্রায় ২৩ একর জমি নিয়ে জেগে উঠেছে একটি চর। যার নামকরণ করা হয় রসুলপুর চর। পরবর্তীতে চারদলীয় জোট সরকারের সময় নদীর পলি ড্রেজিং করে ওই চরের আয়তন বাড়ানো হয়। মাঝ নদীতে চর জেগে উঠলেও ওই চরের জমির মালিকানা করে নিয়েছে অনেকে।   বিআইডব্লিউটিএর যুগ্ম পরিচালক ও বরিশাল নদীবন্দর কর্মকর্তা মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বরিশাল নদীবন্দরের জমিতে অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদের পরিকল্পনা রয়েছে।

জেলা প্রশাসক জসীম উদ্দিন হায়দার বলেন, সরকারি যে সংস্থার নিয়ন্ত্রণাধীন জমি বা নদী অবৈধ দখল হয়েছে তাদের সবার আগে উদ্যোগী হতে হবে। তারা অবৈধ দখল উচ্ছেদে জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের সহায়তা চাইলে জেলা প্রশাসন সর্বাত্মক সহযোগিতা করতে প্রস্তুত আছে।

সর্বশেষ খবর