বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রিক দাবি আদায় ছাড়াও দেশের রাজনীতিতে বড় অবদান রাখে ছাত্র সংগঠনগুলো। কিন্তু রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ঝিমিয়ে পড়ছে রাজনীতি। সব রাজনৈতিক দলের ছাত্র সংগঠনের একই হাল। ২০১৪ সালে সান্ধ্যকোর্স বাতিল দাবির আন্দোনের পর সেভাবে আর কোনো বড় আন্দোলন দেখা যায়নি। ক্ষমতাসীন দলের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগেরও নির্দিষ্ট কিছু দলীয় কার্যক্রম ও সাপ্তাহিক মিছিল ছাড়া উল্লেখযোগ্য কোনো কর্মকান্ড নেই। শিক্ষার্থীদের দাবি-দাওয়ার বিষয়ে সোচ্চার ক্যাম্পাসের বামপন্থি দলগুলোও যেন ঝিমিয়ে পড়েছে।
এক কমিটিতে পাঁচ বছর ছাত্রলীগ : ২০১৬ সালের ১১ ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি হিসেবে গোলাম কিবরিয়া ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে ফয়সাল আহমেদ রুনু দায়িত্ব পান। এর প্রায় ছয় মাস পর পূর্ণাঙ্গ কমিটির অনুমোদন দেয় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। ২০১৭ সালে এ কমিটির মেয়াদ শেষ হয়। বর্তমানে এই কমিটির ৭০ শতাংশ নেতা ক্যাম্পাস ছেড়েছেন। নতুন কমিটি দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই নেতা-কর্মীদের বিতর্কিত কর্মকান্ডে বারবার সমালোচনার শিকার হয়েছে সংগঠনটি। আবাসিক হলে দৌরাত্ম্য, নেতা-কর্মীদের বেপরোয়া আচরণ, সাংবাদিক ও শিক্ষার্থী মারধর, পরীক্ষায় প্রক্সি জালিয়াতিসহ অন্যান্য বিতর্কিত কর্মকান্ডে মেয়াদজুড়ে সমালোচনায় তারা। বর্তমানে সম্মেলনের দাবিতে বিভক্ত হয়ে পড়েছেন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা।
নিষ্ক্রিয় ছাত্রদল : ২০১৪ সালের পর থেকে ঝিমিয়ে থাকা ছাত্রদলের ঘুম ভাঙে গত বছর। গত ১৭ জুন ৩১ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়। তবে দুই বছর মেয়াদি কমিটি গঠন করা হলেও ক্যাম্পাস রাজনীতির মাঠে নিষ্ক্রিয় ছাত্রদল। জাতীয় দিবসে সবার চোখের আড়ালে ঝটিকা মিছিল করেই শেষ সাংগঠনিক কার্যক্রম। গত বছরের শুরুতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে মানববন্ধনের আয়োজন করে তারা। কিন্তু কর্মসূচি শুরুর ৫ মিনিটের মধ্যেই প্রশাসনের বাধায় তাদের কর্মসূচি পন্ড হয়ে যায়। গত কয়েক বছর ধরে সংগঠনটির কর্মকান্ড তো নেই-ই, বলতে গেলে ক্যাম্পাসে অস্তিত্ব সংকটে সংগঠনটি।কর্মী সংকটে বাম দলগুলো : ২০১৭ সালের ২৭ নভেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রমৈত্রীর ১৫ সদস্য বিশিষ্ট নতুন কমিটি ঘোষণা করা হয়। এক বছর মেয়াদি কমিটি দিয়ে চার বছর চলছে। মোটামুটি একই অবস্থা শাখা ছাত্র ইউনিয়ন, ছাত্র ফেডারেশন ও সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের। ক্যাম্পাসের এই চারটি সংগঠন একত্রে প্রগতিশীল ছাত্রজোট নামে পরিচিত। এক সময়কার সোচ্চার এসব সংগঠন সাংগঠনিক কার্যক্রম আয়োজনে আগের চেয়ে অনেক পিছিয়ে। আর যেসব কর্মসূচি আয়োজন করা হলেও সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ দুয়েকজন ছাড়া আর কারও উপস্থিতি নেই সংগঠনগুলোতে। সংগঠনগুলোর কর্মী সংখ্যাও একেবারেই কম। যার সার্বিক প্রভাব পড়ছে সাংগঠনিক কার্যক্রমেও।