শুক্রবার, ৭ জানুয়ারি, ২০২২ ০০:০০ টা
মন্ত্রিসভায় অনুমোদন

পিপিপি কর্তৃপক্ষের ক্ষমতা কমল

নিজস্ব প্রতিবেদক

অর্থ সংশ্লিষ্ট কর্মকান্ডের ক্ষেত্রে সরকারের অনুমোদন নিতে হবে সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্ব (পিপিপি) কর্তৃপক্ষকে। এমন সব বিধান যুক্ত করে ‘বাংলাদেশ সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্ব (সংশোধন) আইন, ২০২১’-এর খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। গতকাল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে ভার্চুয়াল মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। গণভবন প্রান্ত থেকে প্রধানমন্ত্রী এবং সচিবালয়ের মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে মন্ত্রীরা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বৈঠকে যোগ দেন। বৈঠক শেষে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম প্রেস ব্রিফিংয়ে এ অনুমোদনের কথা জানান। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘আইনের ৪, ৮, ৯, ১০, ১১, ২৩, ২৬, ৩৬, ৩৭, ৪১ ও ৪৫-এই ধারাগুলো হয়তো প্রতিস্থাপন হবে অথবা বিলুপ্ত হবে। বোর্ড অব গভর্নেসের মিটিংয়ে সব সময় প্রধানমন্ত্রী সভাপতিত্ব করেন। যদি তিনি না থাকেন, সে ক্ষেত্রে ভাইস চেয়ারম্যান সভায় সভাপতিত্ব করতে পারবেন, এমন একটি নিয়ম আনা হচ্ছে। ভাইস চেয়ারম্যান হচ্ছেন অর্থমন্ত্রী। কর্তৃপক্ষের কর্মচারীরা সরকারি কর্মচারী হিসেবে বিবেচিত হবেন না। আগের আইনে পিপিপি কর্মচারীদের সরকারি কর্মচারী হিসেবে ডিক্লেয়ার করা ছিল। কিন্তু এটি তো সংবিধিবদ্ধ একটা অর্গানাইজেশন। সুতরাং তারা সরকারি অর্গানাইজেশন হিসেবে বিবেচিত হবেন না।

বঙ্গোপসাগরে হবে বায়ুবিদ্যুৎ প্রকল্প : ‘মুজিব জলবায়ু সমৃদ্ধি পরিকল্পনা, ২০২০-২০৩০’ প্রণয়ন করতে যাচ্ছে সরকার। এই পরিকল্পনার আওতায় বঙ্গোপসাগরের মহীসোপানে হবে একটি বায়ুবিদ্যুৎ প্রকল্প। এ সংক্রান্ত প্রস্তাব মন্ত্রিসভা বৈঠকে উপস্থাপন করা হলে তা অনুমোদন পায়নি। এটিকে আরও পর্যালোচনা করতে বলেছে মন্ত্রিসভা। এ প্রসঙ্গে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, এটা (মুজিব জলবায়ু সমৃদ্ধি পরিকল্পনা) আজকে অনুমোদিত হয়নি। পর্যবেক্ষণ দেওয়া হয়েছে। কারণ একটি বিষয় হলো যে কোনো নীতি, স্ট্র্যাটেজি বা চুক্তিতে যদি আর্থিক বিষয় থাকে, তাহলে ফাইন্যান্সের একটা ভেটিং নিয়ে আসতে হবে। এটা ফাইন্যান্সের ভেটিং ছিল না। সে জন্য কিছু কিছু অবজারভেশন আছে, সেগুলো দেখে আর ফাইন্যান্সের কাছ থেকে ভেটিং নিয়ে তারপরে আবার উপস্থাপন করতে হবে। এই সমৃদ্ধি পরিকল্পনার প্রধান উদ্দেশ্য হচ্ছে টেকসই সমৃদ্ধি, জ্বালানি আমদানি নির্ভরতা কমানো, কর্মস্থান জোরদার করা এবং প্রচলিত জীবনযাপনের উন্নয়নের মাধ্যমে ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ সমৃদ্ধি নিশ্চিত করা। এ জন্য জাতীয় উন্নয়ন পরিকল্পনা, আর্থিক নীতি ও কাঠামোর মধ্যেই পরিকল্পনাটি কীভাবে বাস্তবায়ন করা যায়, এর একটি স্ট্র্যাটেজি দেওয়া হয়েছে। এখানে প্যারিস চুক্তির লক্ষ্য বাস্তবায়নের বিষয়ও আনা হয়েছে। একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো পরিকল্পনাটির মাধ্যমে বাংলাদেশের বঙ্গোপসাগরের মহীসোপানে (সমুদ্রের দিকে এবং পানির নিচে উপকূলীয় স্থলভাগের বর্ধিত অংশ) ৪ গিগাওয়াট একটি বায়ুবিদ্যুৎ নেটওয়ার্কের প্রজেকশন দেখানো হয়েছে। প্রায় ৮০ বিলিয়ন ডলারের ইনভেস্টমেন্ট করতে হবে এখানে এবং আমাদের জিডিপিতে প্রায় ৫০ বিলিয়ন ডলার অ্যাড হবে। এই স্ট্র্যাটেজি নিয়ে এটি এখানে নিয়ে আসা হয়েছিল।

জাহাজ দেয়নি পাকিস্তান, চুক্তি বাতিল : চুক্তি হওয়ার পর ৩৩ বছর পেরিয়ে গেলেও দুটি কনটেইনার জাহাজ সরবরাহ করেনি পাকিস্তান। তাই পাকিস্তানের সঙ্গে থাকা চুক্তিটি গতকালের বৈঠকে বাতিল করেছে মন্ত্রিসভা। এ বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের জন্য দুটি কনটেইনার কেনার জন্য ১৯৮৮ সালের ১৩ অক্টোবর মন্ত্রিসভা পাকিস্তানের সঙ্গে ৫০ মিলিয়ন ডলারের একটি চুক্তি করেছিল। আজ পর্যন্ত তারা দেয়নি। পাকিস্তান সরকার তাদের করাচি শিপইয়ার্ডকে ৮ দশমিক ৮৫ মিলিয়ন ডলার দিয়ে দিয়েছিল। আমরাও টাকা দেইনি। চুক্তিটির এত দিন গত হওয়ার পরও কিছু হয়নি বলে মন্ত্রিসভা চুক্তিটি বাতিল করে দিয়েছে। এ ছাড়া বাংলাদেশ ও কাতারের মধ্যে থাকা কর এবং রাজস্ব সংক্রান্ত একটি চুক্তির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে বলেও জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর