তীব্র যানজটে স্থবির হয়ে পড়েছিল রাজধানী। মাত্রাতিরিক্ত যানজট দেখা গেছে হাতিরঝিলের আশপাশ এলাকায়। গতকাল ভোর ৫টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত হাতিরঝিলের আশপাশ এলাকায় যান চলাচল বন্ধ ছিল। এতে রাজধানীর বেশির ভাগ সড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। কোনো কোনো সড়কে ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানজটে আটকে থাকতে হয় অফিসগামী ও সাধারণ যাত্রীদের। গুনতে হয় অতিরিক্ত ভাড়া।
গতকাল সকাল থেকে ভয়াবহ যানজটে রূপ নেয় মহাখালী-উত্তরা সড়কে। এ সড়কে প্রায় ৬ কিলোমিটার দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। উত্তরা থেকে মহাখালী অভিমুখী যাত্রীরা প্রায় ২ ঘণ্টায়ও রাস্তা পাড়ি দিতে পারেননি। তবে সড়কের বিপরীত পাশ বলতে গেলে পুরোটাই ফাঁকা ছিল। যার কারণে বনানী থেকে বিমানবন্দর পৌঁছাতে খুব কম সময় লেগেছে।
তেজগাঁও-মগবাজার-শান্তিনগর-পল্টন-মালিবাগেও সকাল থেকে দেখা যায় অসহনীয় যানজট। তবে তুলনামূলক সচল ছিল ধানমন্ডি-মিরপুর সড়ক। সেসব সড়কে যানবাহনের চাপ থাকলেও ভোগান্তি ছিল না।গতকাল রাজধানীর কর্মজীবী মানুষ ও শিক্ষার্থীরা চরম ভোগান্তির মধ্যে পড়ে। দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করে কোনো যানবাহন না পেয়ে হেঁটেই কর্মস্থলে যান। শিক্ষার্থীদের হেঁটে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যেতে দেখা যায়। বিশেষ করে রোগী হাসপাতালে নিতে গিয়ে অনেক মানুষ বিপদে পড়ে। রাজধানীর বড় মগবাজার গ্রিনওয়ের বাসিন্দা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত শফিকের অফিস বাড্ডায়। বাসা থেকে বের হয়ে মিনিট ছয়েক হেঁটে আসেন মালিবাগ মোড়ে। সেখান থেকে বাসে চেপে বসেন। হাতিরঝিল বন্ধ থাকার বিষয়টি আগেই জানতেন তিনি। ভেবেছিলেন তার পথে খুব একটা প্রভাব ফেলবে না। বাস্তবে ঘটেছে উল্টো। মালিবাগ মোড় থেকে বাস পেয়েছিলেন ঠিকই কিন্তু বেশিদূর এগোয়নি। মিনিট বিশেকের রাস্তায় তার লেগেছে প্রায় ২ ঘণ্টা।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিক বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, দীর্ঘ সময় রাজধানীর হাতিরঝিলের সড়ক বন্ধ ছিল।
এতে যানবাহনের চাপ আশপাশের অন্য সড়কে গিয়ে পড়ে। যা তীব্র যানজট তৈরিতে ভূমিকা রাখে। তবে ম্যারাথনের জন্য হাতিরঝিলের প্রবেশপথগুলোয় যানবাহন চলাচল বন্ধ রাখার তথ্য আগেই জানিয়েছিল ডিএমপি। এমনকি যানজটের আগাম পূর্বাভাস দিয়ে নগরবাসীকে সতর্ক করা হয়েছিল। তার পরও অফিসগামী যাত্রী ও পরিবহনের অতিরিক্ত চাপ এ যানজটকে দীর্ঘায়িত করে।
বাড্ডায় কথা হয় ভিক্টর ক্লাসিক পরিবহনের যাত্রী আনিসুর রহমানের সঙ্গে। তিনি বলেন, পল্টন থেকে উত্তর বাড্ডা পর্যন্ত বেশির ভাগ সিগন্যালে দীর্ঘক্ষণ দাঁড়াতে হয়েছে। অন্য দিন যানজট থাকলেও দুপুরে অনেকটা ফাঁকা থাকে রাজধানীর সড়ক, তবে আজ (সোমবার) চিত্র ভিন্ন। দুপুর গড়িয়েও যানজট কমেনি।
রাজধানীর শেরেবাংলানগর থেকে কর্মস্থল মিন্টো রোডে যাওয়ার উদ্দেশে সকালে মোটরসাইকেলে রওনা হন পুলিশের এক সদস্য। বিজয় সরণি যেতেই দেখেন সড়কে তীব্র যানজট। তাই প্রায় ১ ঘণ্টা তাকে সেখানে আটকে থাকতে হয়েছে। যানজট ঠেলে প্রায় দেড় ঘণ্টা পর কর্মস্থলে পৌঁছান তিনি।
গতকাল বিকালে মেহেদী নামে এক যাত্রী বলেন, সেগুনবাগিচা থেকে ভাটারা পর্যন্ত অ্যাপসচালিত যানের ভাড়া ছিল ৪০০ টাকা। সেখানে যানজটের জন্য গুনতে হয়েছে ৮০০ টাকা।