বুধবার, ১২ জানুয়ারি, ২০২২ ০০:০০ টা

খুলনায় লাফিয়ে বাড়ছে করোনা চট্টগ্রামে ডবল সেঞ্চুরি

নিজস্ব প্রতিবেদক, খুলনা ও চট্টগ্রাম

খুলনায় লাফিয়ে বাড়ছে করোনা চট্টগ্রামে ডবল সেঞ্চুরি

খুলনা বিভাগের ১০ জেলায় করোনাভাইরাসের সংক্রমণ হার লাফিয়ে বাড়ছে। এক সপ্তাহে নমুনা পরীক্ষার ভিত্তিতে করোনা শনাক্ত বেড়েছে তিনগুণ। আক্রান্তের অধিকাংশই খুলনা, যশোর ও কুষ্টিয়ার সীমান্ত এলাকার বাসিন্দা। এদিকে শনাক্তকরণ মেশিন না থাকায় তাদের কেউ ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত কি না নিশ্চিত হওয়া যায়নি। জানা যায়, খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাটসহ দেশের দক্ষিণাঞ্চলের কয়েক হাজার মানুষ ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে অবস্থান করছেন। এদের অনেকেই কাজের সন্ধানে পাসপোর্ট ছাড়া দালালের মাধ্যমে ভারতের দিল্লি, মাদ্রাজ, মুম্বাই, কলকাতাসহ বিভিন্ন স্থানে অবস্থান করছেন। চিকিৎসাজনিত কারণেও অনেকে ভারতে রয়েছেন। বর্তমানে ভারতে করোনা পরিস্থিতি ভয়াবহ হওয়ায় তারা দেশে ফিরতে শুরু করেছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সাতক্ষীরার সীমান্ত কেরাগাছি, লক্ষীদারি, কাকডাঙ্গা, ভাটিয়ালি, পদ্মসাখড়া, যশোরের সীমান্ত বেনাপোলের পুটখালি, উত্তর বাহাদুরপুরসহ বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে লোকজন বিনা পাসপোর্টে যাতায়াত করছে। অবৈধ প্রবেশ বন্ধ করতে না পারলে দক্ষিণাঞ্চলে করোনা ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকরা। খুলনা মেডিকেল কলেজের উপাধ্যক্ষ ডা. মেহেদী নেওয়াজ বলেন, ‘সংক্রমণের হার বৃদ্ধি পাচ্ছে, এরই মধ্যে খুলনায় শনাক্তের হার তিনগুণ বেড়েছে। গতকাল ১৩৯ জনের নমুনা পরীক্ষায় ১২ জন শনাক্ত হয়। এর আগে শনাক্ত তিন থেকে চারজনের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকত।’ তিনি বলেন, সাতক্ষীরার কালীগঞ্জ থেকে শুরু করে যশোর বেনাপোল পর্যন্ত বিশাল সীমান্ত এলাকায় অবৈধ যাতায়াত রয়েছে। এই অবৈধ যাতায়াত বন্ধ করতে না পারলে পরিস্থিতি ভয়াবহ হতে পারে।

চট্টগ্রামে সংক্রমণে শূন্য থেকে ডাবল সেঞ্চুরি : চট্টগ্রামে ৪ ডিসেম্বর করোনাভাইরাসে কোনো সংক্রমণ ছিল না। ৩৮ দিন পর সংক্রমণে ডাবল সেঞ্চুরি পার করল গতকাল। এক দিনেই নতুন আক্রান্ত ২০৭ জন এবং মারা যান একজন। মাঝে ১৬ ডিসেম্বর দুজন শনাক্ত হন। বর্তমানে চট্টগ্রামে প্রতিদিনই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে করোনা সংক্রমণ। তিন মাস ধরে ৩ ডিজিটের নিচেই ছিল সংক্রমণ, ছিল না মৃত্যু। চট্টগ্রামে দ্রুত সংক্রমণ বৃদ্ধিতে তৈরি হয়েছে শঙ্কা ও আতঙ্ক। পক্ষান্তরে কোথাও মানা হচ্ছে না স্বাস্থ্যবিধি। সর্বত্রই উপেক্ষিত সরকার নির্দেশিত বিধিনিষেধ। ফলে বাড়ছে ঝুঁকি, আতঙ্ক। চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াছ চৌধুরী বলেন, ‘১০ দিন ধরে চট্টগ্রামে সংক্রমণ বাড়ছে। তবে করোনা প্রতিরোধে সরকার ইতোমধ্যে নতুন নির্দেশনা জারি করেছে। তাই সবাইকে অবশ্যই সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। এ ব্যাপারে কোনো অবহেলা করা যাবে না।

 কেউ অবহেলা করলে সবাইকে চরম খেসারত দিতে হবে।’

চিকিৎসকদের সংগঠন ওয়াই স্যাবের ফাউন্ডার প্রেসিডেন্ট ডা. হামিদ হোছাইন আজাদ বলেন, ‘গণপরিবহন, বাজার, বিনোদন কেন্দ্র, হাসপাতালসহ সর্বত্রই এখন স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষিত। তাই এখন থেকেই মাস্ক পরাসহ সব স্বাস্থ্যবিধি সবাইকে অবশ্যই মানতে হবে। নিজ থেকেই সচেতন হতে হবে। না হয় সংক্রমণ বৃদ্ধি আরও দ্রুতগতিতে শুরু হলে তা প্রতিরোধ করা দুরূহ হয়ে পড়বে।’

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর