শনিবার, ১৫ জানুয়ারি, ২০২২ ০০:০০ টা

ঘুড়ি উড়িয়ে ডিজের তালে পুরান ঢাকায় সাকরাইন উৎসব

রাশেদ হোসাইন, জবি

করোনা মহামারির মধ্যেও থেমে নেই উৎসব-উদযাপন। স্বাস্থ্যবিধি মেনে বিভিন্ন বাসার ছাদে ঘুড়ি উড়িয়ে এবং ডিজের তালে পুরান ঢাকার সাকরাইন উৎসব গতকাল উদযাপন করা হয়। পৌষকে বিদায়ের মাধ্যমে নীল আকাশের সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য পুরান ঢাকাবাসীর আয়োজন সাকরাইন উৎসব, যা ঘুড়ি উৎসব নামেও পরিচিত। হরেক রকম রঙিন ঘুড়ি আর নানা ডিজাইনের ছোট-বড় আকৃতির ঘুড়ি ঘুরঘুর করে পুরান ঢাকার আকাশকে রঙিন করে তুলে। কোনো ঘুড়ি মাটিতে লুটিয়ে পড়ছে আবার কেনোটি আকাশে রাজত্ব করছে। কোনো ঘুড়ি দিগন্ত ছাড়িয়ে যায় অন্য দিগন্তে আবার কোনোটি নাটাই ছেড়ে উড়ে যায় আকাশের নীল সীমানায়। বাংলা ও হিন্দি গানের তালে তালে চলতে থাকে ডিজে, বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ে উৎসবের মুখরতা। বাড়ে আকাশে ঘুড়ির সংখ্যাও। ঘুড়ির এই খেলা সকাল থেকে সন্ধ্যা অবদি চলতে থাকে। দিনের আলো শেষে যেমন অন্ধকার নামে তেমনি ঘুড়ি নাটাইয়ের কাছে এসে পৌঁছে সন্ধ্যার লাল আলোতে। শুরু হয় রাতের কসরত।

সন্ধ্যার পর থেকেই শুরু হয়ে যায় আতশবাজি, আগুন নিয়ে খেলা, বড় বড় গ্যাস বেলুন উড়ানো, হরেক রকমের লাইটিং যা অন্ধকার আকাশকে বিভিন্ন আলোয় অলোকিত করে। আর ডিজের তালে তালে চলতে থাকে গান-নাচ। সন্ধ্যা থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত পুরান ঢাকার সূত্রাপুর, মিলব্যারাক, সদরঘাট, নবাবপুর, লালবাগ, চকবাজার, দয়াগঞ্জ, মুরগিটোলা, শিংটোলা, লক্ষ্মীবাজার, ধূপখোলা মাঠ, বংশাল, ওয়ারী, ইসলামপুর, শাঁখারীবাজার, তাঁতীবাজার, রায় সাহেব বাজার এলাকার মানুষ ঘটা করে সাকরাইন পালন করেছে।

বাংলা পৌষ মাসের শেষের দিন ও মাঘ মাসের প্রথম দিন উদযাপন করা হয় পৌষ সংক্রান্তি। বর্তমানে ‘পৌষ সংক্রান্তি’ শুধু ‘সংক্রান্তি’ নামে পরিচিতি লাভ করেছে, আর পুরান ঢাকার মানুষ একে বলে ‘সাকরাইন’। উৎসবটি শুরু হয়েছে ব্রিটিশ আমল থেকেই। পুরান ঢাকার ছেলেমেয়েরা সারা বছর এই ঘুড়ি উৎসবের অপেক্ষায় থাকে। সাকরাইন উৎসবকে পৌষ সংক্রান্ত্রি বা ঘুড়ি উৎসবও বলা হয়। পুরান ঢাকার লক্ষ্মীবাজার ও শাঁখারীবাজার ঘুরে কিছু বাড়িতে ভীষণ শব্দে বাদ্য বাজতে শোনা গেছে। ছাদ থেকে ঘুড়ি উড়ানো হচ্ছে আর তরুণরা বাজনার সঙ্গে নাচছেন, গান গাচ্ছেন।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর