শুক্রবার, ২১ জানুয়ারি, ২০২২ ০০:০০ টা

শীতে জবুথবু উত্তরের মানুষ

প্রতিদিন ডেস্ক

শীতে জবুথবু উত্তরের মানুষ

হিমেল হাওয়া আর ঘন কুয়াশায় কাঁপছে খেটে খাওয়া মানুষ। ছবিটি গতকাল লালমনিরহাটের চর রাজপুত এলাকা থেকে তোলা -বাংলাদেশ প্রতিদিন

শীতে জবুথবু উত্তরের মানুষ। শৈত্যপ্রবাহ আর হিমশীতল বাতাসে ওই অঞ্চলের গবাদি পশুগুলোও কাঁপছে।

দিনাজপুর প্রতিনিধি জানান, দিনাজপুরসহ কয়েক জেলায় মৃদু শৈত্যপ্রবাহ অব্যাহত রয়েছে। হাড়কাঁপানো কনকনে শীতে বিপর্যস্ত এ জনপদের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। মানুষের পাশাপাশি গবাদি পশুগুলোও শীতে কাহিল হয়ে পড়েছে। নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে হাঁস, মুরগি, গরু-ছাগল। বিভিন্ন উপজেলা হাসপাতালের তথ্যমতে, প্রতিদিন গড়ে ২৫-৩০ জন ভুক্তভোগী মানুষ তাদের পশুর চিকিৎসা নিতে যাচ্ছেন। খামার মালিকদের শুকনো খাবার, গোয়ালে তাপের ব্যবস্থা রাখাসহ পশুর গায়ে চটের বস্তা জড়িয়ে রাখার পরামর্শ দিয়েছেন  জেলা প্রাণিসম্পদ অফিস। বিভিন্ন গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই খামারিরা গরুগুলো গোয়ালঘরে বেঁধে রেখেছেন। প্রচন্ড শীতে এসব পশু শুকিয়ে গেছে। শীতের কবল থেকে রক্ষা করতে পশুগুলোকে চটের বস্তা জড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। হাতে গোনা কিছু মানুষ তাদের ছাগলকে পুরাতন কাপড় পরিয়ে রক্ষার চেষ্টা করলেও অধিকাংশ ছাগলেরই যত্ন নিতে পারছেন না। লালমনিরহাট প্রতিনিধি জানান, হিমেল হাওয়ায় আর ঘন কুয়াশায় কাঁপছে লালমনিরহাটের মানুষ। গত কয়েক দিন থেকেই জেঁকে বসেছে শীত। প্রতি দিনই কমছে তাপমাত্রা। ঘন কুয়াশা আর হিমেল হাওয়ায় জবুথবু হয়ে পড়েছে জনজীবন। প্রচন্ড শীতে কাবু হয়ে পড়েছেন খেটে খাওয়া মানুষ, শিশু ও বৃদ্ধরা। গতকাল সারা দিনই সূর্যের দেখা মেলেনি লালমনিরহাটে। ঠান্ডা বাতাসে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ বাড়ছে। চরম ভোগান্তিতে পড়েছে লালমনিরহাটে তিস্তা-ধরলা অববাহিকার ৬৩ চরের খেটে খাওয়া মানুষ। শীতে দুর্ভোগে পড়েছে ১৩টি নদ-নদী তীরবর্তী ৬৩টি চরের প্রায় লক্ষাধিক নিম্ন আয়ের মানুষ। এই শীতে খেটে খাওয়া মানুষ কাজকর্ম না পেয়ে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন।  লালমনিরহাট জেলা সিভিল সার্জন ডা. নির্মলেন্দু রায় জানান, হাঁপানি,  অ্যাজমা, নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে পাঁচ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে শিশু ও বয়স্ক ১১৪ জন রোগীর ভর্তি রয়েছেন। শীতের তীব্রতার সঙ্গে বাড়ছে শীতজনিত রোগের প্রকোপ। কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি জানান, ঘন কুয়াশা আর কনকনে ঠান্ডায় গত কয়েক দিন জনজীবন কাহিল হয়ে পড়েছে।

স্থানীয় আবহাওয়া অফিস জানায়, গতকাল সকালে জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ তাপমাত্রা গত এক সপ্তাহে সবচেয়ে সর্বনিম্ন বলে জানানো হয়। সারা দিন সূর্যের দেখা মেলেনি। গবাদি পশু গরু-ছাগলসহ শিশু ও বৃদ্ধরা নিদারুণ কষ্টে আছে। এ ছাড়া সদ্য বেড়ে ওঠা আলুসহ নানা সবজি ও বোরো বীজতলাও নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়েছে। জেলার ১৬টি নদ-নদী অববাহিকায় ৪০৫টি চর ও দ্বীপচর এলাকায় এই শীতে কষ্টে রয়েছেন লাখ লাখ মানুষ।

তাদের প্রয়োজন পর্যাপ্ত শীতবস্ত্র। অতিরিক্ত ঠান্ডায় প্রতিদিন শীতজনিত রোগী হাসপাতালগুলোতে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছে।

পঞ্চগড় প্রতিনিধি জানান, পঞ্চগড়ে সূর্যের দেখা মিলছে না। মেঘলা আকাশ আর হিমেল বাতাসে কনকনে শীত বিরাজ করছে এই জেলায়। গতকাল বিকালে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি শীতের তীব্রতা বাড়িয়ে দেয়। আবহাওয়া অফিস বলছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এই জেলার ওপর দিয়ে। উত্তরের হিমেল হাওয়ায় কাহিল হয়ে পড়েছে জনজীবন। সন্ধ্যার পর বৃষ্টির মতো শিশির পড়ছে। ঠান্ডার তীব্রতায় কয়েকটি লেপ-কম্বল দিয়ে গা ঢাকা দিতে হচ্ছে। সাধারণ মানুষ পড়ছেন দুই-তিনটা শীতের কাপড়। স্থবির হয়ে পড়েছে অফিস আদালতের কার্যক্রম। কার্যক্রম শুরু হচ্ছে দুপুর ১২টার পর। হাট-বাজারে ভিড় কমে গেছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর