শুক্রবার, ২১ জানুয়ারি, ২০২২ ০০:০০ টা
প্রবাসী যাত্রীরা ভুগছেন টোকেন যন্ত্রণায়

চট্টগ্রাম বিমান অফিসে হয়রানি

সাইদুল ইসলাম, চট্টগ্রাম

সৌদি আরব, ওমান, আরব আমিরাতসহ বিভিন্ন দেশের প্রবাসীরা ফিরতি টিকিট ‘ইস্যু’সহ নানা বিষয়ে চট্টগ্রাম বিমান অফিসে আসছেন প্রতিদিন। এদের ‘টোকেন’ নেওয়ার পর দায়িত্বশীল বিমান কর্মকর্তাদের সঙ্গে দেখা করতে হয়। টোকেন ইস্যুতেই চলছে অনিয়ম, ঘুষ ও বিড়ম্বনা। গতকাল বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সরেজমিন এসব চিত্র দেখা গেছে ষোলশহর অবস্থিত বিমান অফিসে।

এমনিতেই বিমানে টিকিট পেতে চলছে নানা হয়রানি। কোনো কোনো যাত্রীর ভিসার মেয়াদও শেষ হয়ে যাচ্ছে। এ অবস্থায় চলমান করোনা পরিস্থিতিতে আতঙ্ক-টেনশনের মধ্যে বিমান অফিসে এসে সেবার নামে পড়তে হয় ভোগান্তিতে। বিমান কর্মকর্তাদের সঙ্গে দেখা করতে লাগে টোকেন। প্রতিদিন ২০০ থেকে ৩০০ টোকেন দেওয়া হয়। ভোর থেকেই অপেক্ষা করে টোকেন নিয়ে সিরিয়াল অনুযায়ী দেখা করতে হয়। এতেই চলে অনিয়ম আর ঘুষ বাণিজ্য। এ অনিয়মের নেপথ্যে আছেন কতিপয় আনসার সদস্য। দেরিতে এসেও টাকা দিলেই টোকেন মিলে যায়। অথচ ভোর থেকে অপেক্ষায় থাকা অনেকে প্রহর গুনতেই থাকেন। গতকাল দুপুরের দিকে ডিউটি করছিলেন দুই আনসার সদস্য। সকাল থেকে ষোলশহর বিমান অফিসের সামনে টিকিট-প্রত্যাশীদের মূল ফটকের বাইরে লাইনে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। প্রবাসীরা রোদের মধ্যে ফুটপাথে ও সড়কে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করেন টিকিটের জন্য। এ সময় অনেক প্রবাসী বলেন, এই আনসার সদস্যদের টাকা দিলেই টোকেন মেলে কিন্তু ভিতরে গিয়েও প্রত্যাশিত কাজ না হলে পরদিন আবারও আসতে হয়। আবার অনেককেই এক সপ্তাহ পরে আসতে বলা হচ্ছে।

সন্দ্বীপ থেকে আসা একজন ওমানপ্রবাসী জানান, তিনি সকাল ৯টায় এসে ১১টায়ও টোকেন পাননি। এক আনসার সদস্যকে ২০০ টাকা দেওয়ার পর টোকেন দিয়ে অফিসের ভিতরে ঢুকেছিলেন। সেখানে নানা সমস্যার কারণে কাজ না হওয়ায় রবিবার ফের আসতে বললেন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা। তিনি বলেন, ‘রবিবারও টোকেনটা টাকা দিয়ে নিতে হবে কি না সেই চিন্তায় আছি।’

বাংলাদেশ বিমান চট্টগ্রামের এয়ারপোর্ট ম্যানেজার ও ষোলশহর বিমান অফিসের ম্যানেজার (অতিরিক্ত দায়িত্বরত) ছিদ্দীকুর রহমান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘বিমান অফিসে শৃঙ্খলা বজায় রাখতে স্টাফদের প্রতিনিয়ত নির্দেশনা থাকে। তা ছাড়া প্রবাসী বা যাত্রী সেবায় যাতে কোনো ত্রুটি না হয় সেজন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি সব সময়।’ তিনি বলেন, ‘টোকেনের বিষয়ে আমরা অবগত নই। কিছু বিষয় স্বাস্থ্য বিভাগ ও সিভিল অ্যাভিয়েশন বিভাগ দেখছে। তবে ঘোলশহর বিমান অফিসে কোনো ধরনের সমস্যা হলে বা অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ লাইনে দাঁড়ানো আবুধাবিগামী যাত্রী নিজাম বলেন, ‘করোনার আগে ছুটি কাটাতে দেশে এসেছিলাম। চার বছর পর দেশে আসি। কিন্তু করোনার কারণে কভিড পরীক্ষা নিয়ে কড়াকড়ি ও বিমান টিকিট না পাওয়ার কারণে কর্মস্থলে যেতে পারছি না।’ আরেকজন টিকিটপ্রত্যাশী রহমত উল্লাহ বলেন, ‘বিমান অফিসে এখন সৌদি আরব, ওমান ও আবুধাবির টিকিটের চাহিদা বেশি। কিন্তু ফ্লাইট কম। তার ওপর দুর্ভোগের শেষ নেই।’

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর