শুক্রবার, ২১ জানুয়ারি, ২০২২ ০০:০০ টা

ক্ষমতাসীনরাই অর্থ পাচার করে লবিস্ট নিয়োগ করেছে : বিএনপি

নিজস্ব প্রতিবেদক

বিএনপি দাবি করেছে তারা নয়, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগই অর্থ পাচার করে বিদেশে লবিস্ট নিয়োগ করেছে। গতকাল বিকালে এক সংবাদ সম্মেলনে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন এ দাবি করেন। তিনি বলেন, বিএনপি বিদেশে লবিস্ট নিয়োগ করেনি। বরং আওয়ামী লীগ নিজেদের অপকর্ম ঢাকতে ২০০৪ সাল থেকেই যুক্তরাষ্ট্রে বিভিন্ন লবিস্ট ফার্মের সঙ্গে অর্থের বিনিময় চুক্তি করে। আওয়ামী লীগের এই অর্থের উৎস ও লবিস্ট নিয়োগ নিয়ে নিরপেক্ষ তদন্তের দাবিও জানান তিনি। বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশানের কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলনে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও সেলিমা রহমান উপস্থিত ছিলেন। ড. মোশাররফ হোসেন বলেন, সরকারি দল অভিযোগ করেছে বিএনপি নাকি লবিস্ট নিয়োগ করেছে। দেশ থেকে কীভাবে অর্থ পাঠানো হয়েছে, তাও তারা বলেছে। তিনি বলেন, আমরা চাই কেন্দ্রীয় ব্যাংক সেটা ইনকোয়ারি করুক। তাদেরটাও (আওয়ামী লীগ) ইনকোয়ারি করুক। তিনি বলেন, বিএনপি বাংলাদেশ থেকে লবিস্ট নিয়োগ করেনি। এ জন্য বাংলাদেশ থেকে অর্থও কোথাও যায়নি। প্রবাসীরা এদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি, সরকারের নিপীড়ন-নির্যাতনের বিষয়ে সেসব দেশে বিক্ষোভ প্রকাশ কিংবা নিজেদের মনের কথা সেখানকার প্রতিনিধির কাছে বলতে পারেন।

মোশাররফ বলেন, সরকারের মন্ত্রীদের দাবি তারাও (আওয়ামী লীগ) কোনো লবিস্ট নিয়োগ করেনি। পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেছেন, একটা জনসংযোগ প্রতিষ্ঠানকে কিছু দায়িত্ব দিয়েছেন। কিন্তু তথ্য প্রমাণ বলে সম্পূর্ণ ভিন্ন কথা।

আওয়ামী লীগের পক্ষে যুক্তরাষ্ট্রে প্রথম লবিস্ট ‘অ্যালক্যাডে এন্ড ফো’কে নিয়োগ দেওয়া হয় ২০০৪ সালের ২৯ নভেম্বর। যা কার্যকর হয় ১ জানুয়ারি ২০০৫ থেকে। ২০০৫, ২০০৬, ২০০৭ সালে এই লবিস্ট ফার্মকে চুক্তি স্বাক্ষরকারী হিসেবে আওয়ামী লীগের একজন নেতার মাধ্যমে মাসে ৩০ হাজার ডলার করে দেওয়া হয়। লবিস্ট ফার্মকে প্রায় সাড়ে ১২ লাখ ডলার অর্থাৎ ১০ কোটি টাকার বেশি দেওয়া হয়েছে।

ড. মোশাররফ আরও বলেন, সরকার অত্যাচার, গুম, খুন, মানবাধিকার ও গণতান্ত্রিক অধিকার হরণের ঘটনা ধামাচাপা দিতে লবিস্ট নিয়োগে দেশবাসীরই ট্যাক্সের টাকা ব্যয় করছে। স্বচ্ছ তদন্ত করে এর রিপোর্ট জনসমক্ষে প্রকাশ করার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, এ ব্যাপারে কেঁচো খুঁড়তে গেলে আরও বড় বড় সাপ বেরিয়ে আসবে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম সারির দুটি লবিস্ট ফার্ম ‘অ্যালক্যাডে এন্ড ফো’ এবং ‘ফ্রিডল্যান্ড’-এর সঙ্গে আওয়ামী লীগের এক নেতার চুক্তির তথ্য প্রমাণ তুলে ধরেন ড. মোশাররফ। তিনি বলেন, বহু বছর ধরে নিয়মিত চুক্তিতে কাজ করা লবিস্ট প্রতিষ্ঠান বিজিআর ছাড়াও গত বছরের সেপ্টেম্বরে দুই দেশের শীর্ষ পর্যায়ের বৈঠকের আয়োজন ও সফর বিনিময়ের লক্ষ্যে মাত্র ১ মাসের জন্য ৪০ হাজার ডলার ফিতে নিয়োগ করা হয়েছিল আরেকটি লবিস্ট প্রতিষ্ঠান ফ্রিডল্যান্ডারকে। তিনি বলেন, সরকারের লবিস্ট নিয়োগের তথ্য গোপন করায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর প্রকাশ্য ক্ষমা চাওয়া উচিত।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর