মঙ্গলবার, ২৫ জানুয়ারি, ২০২২ ০০:০০ টা

খুলনায় বাবা-মা ও মেয়েকে হত্যার তদন্তে ধূম্রজাল

মূল হোতারা ধরাছোঁয়ার বাইরে

নিজস্ব প্রতিবেদক, খুলনা

খুলনার কয়রায় একই পরিবারের বাবা-মা ও মেয়েকে হত্যার তদন্তে ধূম্রজাল তৈরি হয়েছে। হত্যায় জড়িত প্রকৃত আসামিরা এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে বলে অভিযোগ করেছে নিহতদের পরিবার। তারা বলছেন, এ ঘটনায় গ্রেফতার হওয়া আসামি আবদুর রশিদের বিভ্রান্তিকর তথ্যে প্রকৃত ঘটনা ধামাচাপা দেওয়া হচ্ছে।

গ্রেফতারকৃতদের বাড়ি গিয়ে তাদের সাংসারিক কাজে ব্যবহৃত দা, কুড়াল সংগ্রহ করছে পুলিশ। গ্রেফতার হওয়া প্রতিবেশী আবদুল ওহাব ও তার স্ত্রী তাসলিমা খাতুনের মেয়ে কলেজছাত্রী সামছুন্নাহার জানান, ২৩ জানুয়ারি বিকালে বাড়ি থেকে ডিবি পুলিশ তাদের সাংসারিক কাজে ব্যবহৃত দা নিয়ে গেছে। আরও কয়েকজনের বাড়ি থেকে দা ও কুড়াল নিয়ে গেছে। পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য লাগবে বলে তাদের জানানো হয়েছে। অন্যায়ভাবে তাদের ফাঁসানোর চেষ্টা চলছে। পুলিশ এলাকার লোকের কথা শুনতে চাচ্ছে না। হত্যার আগের সন্ধ্যায় হাবিবুল্লাহর বাড়িতে বাইরের লোকজন এসেছিল। সন্ধ্যায় হাবিবুল্লাহর স্ত্রী-মেয়েকে রাস্তায় দেখে জিজ্ঞাসা করলে তারা বলেছিল- আমার বাড়িতে মেহমান আসবে, তারা পথ চিনতে পারে কি না তাই দাঁড়িয়ে আছি। পুলিশ কখনো পরকীয়া সম্পর্ক, কখনো তক্ষক সাপের ব্যবসার কথা বলছে।

তবে তদন্ত কর্মকর্তা ও জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা উজ্জল কুমার দত্ত বলেন, আদালতে দুই আসামির স্বীকারোক্তি অনুযায়ী হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। ভিকটিম হাবিবুল্লাহ খুব ভালো লোক ছিল না। তার নামেও মামলা ছিল। তার ওপর বিভিন্নভাবে এলাকার মানুষের রাগ ছিল। সে রাগের বহিঃপ্রকাশ এক রাতে ঘটানো হয়। তিনটা মানুষকে মারতে সেখানে ১০-১২ জনের উপস্থিতি ছিল।

জানা যায়, আবদুর রশিদ আদালতে জবানবন্দিতে বলেছেন, গ্রেফতার হওয়া অপর আসামি জিয়াউর রহমান ও প্রতিবেশী রাজিয়া সুলতানার অবৈধ সম্পর্কে বাধা দেওয়ায় হাবিবুল্লাহকে হত্যার পরিকল্পনা করা হয়। ২০২১ সালে ২৫ অক্টোবর রাতে হাবিবুল্লাহ (৩৬), তার স্ত্রী বিউটি খাতুন (৩২) ও মেয়ে হাবিবা খাতুন টুনিকে (১২) কুপিয়ে হত্যা করা হয়। পরদিন বাড়ির পাশে পুকুর থেকে তাদের লাশ উদ্ধার হয়।

এদিকে নিহত হাবিবুল্লাহর শাশুড়ি ও বিউটি বেগমের মা কুলসুম খানম বলেন, ‘রশিদ আসল খুনির নাম বলেনি। রশিদ যদি আসল খুনির নাম কয়, পিন ব্যবসার তথ্য বের হয়ে আসবে।’ নিহত বিউটি খাতুনের বোন সীমা বলেন, দুলাভাইকে শাকিল ও বাবু নামের দুজনের সঙ্গে ফোনে পিন নিয়ে কথা বলতে শুনেছি। পিন বেচাকেনায় ঝামেলা থেকে এ ঘটনা ঘটতে পারে বলে তিনি মনে করেন।

হত্যাকান্ডে জড়িত সন্দেহে এ পর্যন্ত মোট ১৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এর মধ্যে বামিয়া গ্রামের আবদুর রশিদ গাজী (৩৪) ও সাইফুল ইসলাম বাবুল (৪৫) দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর