বুধবার, ২৬ জানুয়ারি, ২০২২ ০০:০০ টা

স্বামী হত্যায় যাবজ্জীবন স্ত্রীসহ তিনজনের

আদালত প্রতিবেদক

আমেরিকা প্রবাসী স্বামী সাইদ হাসান বাদলকে হত্যার অভিযোগে করা মামলায় স্ত্রী শেফালীসহ তিনজনকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়েছে আদালত। গতকাল ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-৪ এর বিচারক জেসমিন আরা বেগম এ রায় ঘোষণা করেন। কারাদন্ডের পাশাপাশি প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও এক মাসের কারাভোগের আদেশ দেওয়া হয়েছে। কারাদন্ডপ্রাপ্ত অন্য দুই আসামি হলেন- শেফালীর আত্মীয় নয়ন ও আক্কাস ব্যাপারী। এদিন আদালত আসামিদের উপস্থিতিতে এ রায় ঘোষণা করে। রায় ঘোষণার পর তাদের সাজা পরোয়ানা দিয়ে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেয় আদালত। মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, সাইদ হাসান বাদল (৪০) ১৯৯২ সাল থেকে ২০০৮ সালের ২ নভেম্বর পর্যন্ত স্যার সলিমুল্লাহ মিটফোর্ড হাসপাতালের অ্যাকাউন্স সেকশনে অফিস সহকারী হিসেবে কর্মরত ছিলেন। সাইদ কর্মরত থাকাকালীন ১৯৯৯ সালে ওই হাসপাতালে কর্মরত এমএলএসএস শেফালী (৫০) গোপনে সাইদকে বিয়ে করেন। বিয়ের পর তাদের ঘরে কন্যাসন্তান বৃথি (১৩) জন্মগ্রহণ করে। ২০০৮ সালের অক্টোবরে সাইদ আমেরিকায় চলে যান। আমেরিকায় থাকাকালে সাইদ হাসান তার মেয়ে বৃথির যাবতীয় খরচ বহন করতেন। কিন্তু স্ত্রীর সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি হয়। সাইদের আরেক ভাই ইঞ্জিনিয়ার জয়েব হাসানসহ ২০১২ সালের ১ জানুয়ারি আমেরিকা থেকে নগদ ১০ হাজার ইউএস ডলার ও মালামালসহ বিমানবন্দরে পৌঁছান। এ সময় তার ভাতিজা জাহিদ হাসান প্রাইভেট কার নিয়ে তাকে রিসিভ করতে যায়।

সাইদ দেশে আসার খবর শুনে তার স্ত্রী শেফালীও বিমানবন্দরে যান। সেখান থেকে সাইদ হাসান বাদলকে রিসিভ করে জাহিদ হাসানের প্রাইভেট কারে নেওয়া হয়। এরপর মালামালের লাগেজসহ আসার সময় শেফালী বাদলকে শসা খাওয়ান। ওইদিন মিটফোর্ড হাসপাতালের ব্লাড ব্যাংকের পূর্বদিকে টিনশেডে জাহিদ হাসানকে রেখে শেফালী ও বাদল মালামালের লাগেজসহ শেফালীর বাসায় চলে যান। পরে শেফালী বাদলের ভাতিজা জাহিদ হাসানকে জানান, বাদল অসুস্থ। তাকে মিটফোর্ড হাসাপাতালে নিতে হবে। বাদলকে অচেতন অবস্থায় হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক বাদলকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় সাইদের ভাই ডা. শহিদ হাসান কোতোয়ালি থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।

২০২১ সালের ২৪ জুন দন্ডবিধি ৩০২/৩৪ ধারায় আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল হয়। একই বছরের ১৯ জুলাই আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র আমলে নেয় আদালত। একই বছরের ৩০ আগস্ট আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে আদালত। বিচার চলাকালীন বিভিন্ন সময় ১৬ জন আদালতে সাক্ষ্য দেন।

সর্বশেষ খবর