বৃহস্পতিবার, ২৭ জানুয়ারি, ২০২২ ০০:০০ টা
সংক্ষিপ্ত

পুলিশকে উন্নত দেশের উপযোগী করে তোলা হচ্ছে : আইজিপি

নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশ পুলিশকে ২০৪১ সালের উন্নত দেশের উপযোগী করে গড়ে তুলতে তথ্যপ্রযুক্তির ব্যাপক ব্যবহারের মাধ্যমে পুলিশের সক্ষমতা বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে ভবিষ্যতে পুলিশে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স, রোবট, ড্রোন ইত্যাদি অত্যাধুনিক প্রযুক্তি সংযোজন করা হবে। গতকাল পুলিশ সপ্তাহের চতুর্থ দিনে রাজধানীর রাজারবাগ পুলিশ অডিটোরিয়ামে দিনব্যাপী ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ এসব কথা বলেন।

এ সময় পুলিশের আধুনিকায়নে বিভিন্ন ইউনিট থেকে পাওয়া প্রস্তাবের বিষয় তুলে ধরেন পুলিশ সদর দফতরের ডিআইজি মো. হায়দার আলী খান। তিনি বলেন, দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা বিধান, আইনশৃঙ্খলা রক্ষা, অপরাধ দমন, সন্ত্রাস মোকাবিলা, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা এবং বাংলাদেশ পুলিশকে ২০৪১ সালের উন্নত দেশের উপযোগী জনবান্ধব ও পেশাদার বাহিনী হিসেবে গড়ে তোলার ক্ষেত্রে পুলিশের আধুনিকায়ন প্রয়োজন। বাংলাদেশ পুলিশের সেবা জনগণের কাছে পৌঁছে দিতে প্রতিটি ইউনিয়ন ও পৌরসভার ওয়ার্ডে বিট পুলিশিং কার্যালয় স্থাপন, সাইবার অপরাধ দমনে স্বতন্ত্র সাইবার ইউনিট প্রতিষ্ঠা ইত্যাদি বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।

পুলিশের সক্ষমতা বাড়ানোর মূল লক্ষ্য জনগণের কাছে দ্রুত সেবা পৌঁছে দেওয়া। আমরা বাংলাদেশ পুলিশকে জনতার পুলিশ, জনবান্ধব পুলিশ হিসেবে গড়ে তুলতে কাজ করছি।

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবিপ্রবি) আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের অভিযোগের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে পুলিশের হামলা ও হয়রানি। এমন প্রশ্নের জবাবে ডিআইজি হায়দার আলী বলেন, এটি তদন্তসাপেক্ষ। পুলিশ সদর দফতর তদন্ত করছে। যদি তদন্তে শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশি হয়রানি বা হামলার সত্যতা পাওয়া যায় তাহলে দায়ীদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

শাবিপ্রবির আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সাত দিন পর অনশন ভাঙিয়েছেন অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল। সেখানে তিনি বলেছেন, আমিও ১০ হাজার টাকা দিলাম। পারলে পুলিশ আমাকে গ্রেফতার করুক। এমন পরিস্থিতিতে তাকেও গ্রেফতার পুলিশ করবে কি না জানতে চাইলে ডিআইজি হায়দার আলী খান বলেন, এটি অবশ্যই তদন্তের বিষয়। তদন্ত যারা করছেন, তদন্তে যদি অভিযোগ পাওয়া যায় তাহলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

তাহলে কি শাবিপ্রবির বর্তমান বিব্রতকর পরিস্থিতি সম্পর্কে পুলিশ সদর দফতর অবগত নয়? সাংবাদিকের করা সম্পূরক আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এখানে বিব্রতকর পরিস্থিতি কি না তা পুলিশের বলার কিছু নেই। বিশ্ববিদ্যালয় স্বতন্ত্র বিছু নিয়ম-কানুন আছে। তাদের নিজস্ব ব্যবস্থাপনা বিভাগ রয়েছে। পুলিশ শুধু ল অ্যান্ড অর্ডার ম্যানেজমেন্ট ও আইনশৃঙ্খলার বিষয়টি দেখে। তাও বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রশাসনের আমন্ত্রণেই পুলিশ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়োজিত হয়।

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, পুলিশ হামলা ও হয়রানি করেছে শিক্ষার্থীদের। সেটি পুলিশ সদর দফতর তদন্ত করছে কি না বা কারও দায় দেখছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, অবশ্যই পুলিশ সদর দফতর দেখছে, বিভাগীয় তদন্ত করছে। তদন্তসাপেক্ষে যদি কোনো অভিযোগ প্রমাণিত হয় তাহলে দায়ীদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

পুলিশের ডোপ টেস্টের পর ৩৭ জনের চাকরি হারিয়েছে। এসব বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে ডিআইজি হায়দার আলী বলেন, পুলিশ সদস্যদের মধ্যে যাকে সন্দেহ হচ্ছে তাকে ডোপ টেস্ট (মাদকাসক্তি পরীক্ষা) করানো হচ্ছে। ডোপ টেস্টে ধরা পড়লে পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। ডোপ টেস্টে এখন পর্যন্ত ৩৭ জন চাকরিচ্যুত হয়েছেন। তিনি বলেন, অভিযোগ উত্থাপিত হলে অথবা যেকোনো সময় তা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হয়। একই সঙ্গে পুলিশের বিভাগীয় ব্যবস্থা চালু থাকে এবং নিয়মিত মামলা হয়। সুতরাং যেকোনো পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে মাদকের অভিযোগ পাওয়া গেলে তাৎক্ষণিকভাবে যথাযথভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হয়।

বাংলাদেশ পুলিশ দেশে প্রথমবারের মতো ডোপ টেস্ট চালু করেছিল জানিয়ে ডিআইজি হায়দার আলী খান বলেন, সরকারের অন্য কোনো বিভাগ আমাদের মতো সেভাবে ডোপ টেস্ট চালু করতে পারেনি। অর্থাৎ কোনো মাদকাসক্ত আমাদের পুলিশে যোগদান করে কি না সেটি আমরা প্রথমেই চেক করি। পরবর্তীতে প্রতিনিয়ত এ ডোপ টেস্ট করা হয়ে থাকে। কেউ যদি ডোপ টেস্টে ধরা পড়ে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়। মাদকাসক্ত প্রমাণিত হওয়ায় এখন পর্যন্ত কয়েকজন সদস্যের বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে অর্থাৎ তারা চাকরিচ্যুত হয়েছে। ডোপ টেস্টে এখন পর্যন্ত ৩৭ জন সদস্য চাকরিচ্যুত হয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর