বৃহস্পতিবার, ২৭ জানুয়ারি, ২০২২ ০০:০০ টা

অবৈধ ট্রাকস্ট্যান্ড বদলে হচ্ছে খাল

নিজস্ব প্রতিবেদক

অবৈধ ট্রাকস্ট্যান্ড বদলে হচ্ছে খাল

দিনের পর দিন অবৈধ দখলে ঢাকার মানচিত্র থেকে অনেকটাই হারিয়ে যেতে বসেছিল এক সময়কার প্রবহমান লাউতলা খাল। খাল ভরাট করে গড়ে উঠেছিল বহুতল ভবন, ট্রাকস্ট্যান্ড, বাজারসহ নানা স্থাপনা। মৃতপ্রায় খালটি আবারও প্রাণ ফিরে পাচ্ছে। রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বসিলা এলাকায় গত রবিবার হঠাৎ করেই লাউতলা খাল উদ্ধার কার্যক্রম শুরু করে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)। ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ওই এলাকার অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে মঙ্গলবার খাল খনন কার্যক্রম শুরু করে উত্তর সিটি।

গতকাল সরেজমিন দেখা যায়, একদিকে চলছে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ, অন্যদিকে চলছে খাল খনন কাজ। তবে অনেক স্থানে খালটি এমনভাবে ভরাট করা হয়েছে যে, বোঝারই উপায় নেই সেখানে কখনো খাল ছিল। যেসব স্থানে খালের অস্তিত্ব কোনো রকমে টিকে আছে, তাও আবর্জনায় ভরাটের পথে। এ ব্যাপারে ডিএনসিসি মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেছেন, অবৈধ দখলদাররা খালগুলো ভরাট করে ফেলায় বর্ষাকাল আসলেই ঢাকায় জলাবদ্ধতা তৈরি হয়। জলাবদ্ধতা নিরসনে মৃত ৪২টি খালকে উদ্ধারে কাজ করছি। খালটি উদ্ধার করতে গিয়ে আমরা বাধার মুখে পড়েছি। তবে মৃত এই খালগুলো আমরা উদ্ধার করবই। যে স্থাপনাই থাকুক না কেন, আমরা সব স্থাপনা উচ্ছেদ করে খাল উদ্ধার করব। ঢাকার প্রতিটি খাল উদ্ধারের জন্য আমরা সরকারের কাছে ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করেছি। তিনি বলেন, খনন শেষে বুড়িগঙ্গার সঙ্গে লাউতলা খালের সংযোগ দেওয়া হবে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সহায়তায় ডিএনসিসির আওতাধীন খালগুলোর সীমানা নির্ধারণ কার্যক্রম চলমান রয়েছে। প্রতিটি খালে সীমানা পিলার স্থাপন, ওয়াকওয়ে নির্মাণ ও যথাযথভাবে রক্ষণাবেক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের তথ্য কর্মকর্তা পিয়াল হাসান বলেন, গতকাল সকাল ৯টা থেকে খাল উদ্ধার কার্যক্রম আবারও শুরু হয়। অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের পাশাপাশি খাল খনন চলছে। এটা চলমান অভিযান। খাল স্বরূপে না ফেরা পর্যন্ত অভিযান চলবে।

বসিলা এলাকায় গত রবিবার পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই লাউতলা খাল উদ্ধার অভিযানে নামে ডিএনসিসি। প্রথম ও দ্বিতীয় দিনের অভিযানে দুটি বহুতল ভবন, একটি ট্রাকস্ট্যান্ড ও একটি কাঁচাবাজারসহ খালের জায়গার ওপর গড়ে ওঠা বেশ কিছু অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়। মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টা থেকে খাল খননের কাজ শুরু করে ডিএনসিসি। এ সময় খালের ওপর থাকা অবৈধ স্থাপনাগুলো উচ্ছেদ করতে সিটি করপোরেশন থেকে কাউকে নোটিস দিয়ে আগে জানিয়ে দেওয়া হবে না বলে জানান মেয়র আতিকুল ইসলাম। ওইদিন খাল খননের কাজ পরিদর্শন করতে গিয়ে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী তাজুল ইসলাম বলেন, ঢাকায় দখল হওয়া ২৬টি খালকে উদ্ধার করতে ইতোমধ্যে একটি প্রকল্প হাতে নিয়ে ঢাকার দুই সিটিকে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ প্রকল্পের মধ্যে খালগুলোর দুই পাশে দৃষ্টিনন্দন পার্ক, ওয়াকওয়ে, শিশুদের জন্য খেলার জায়গা, বয়স্ক নাগরিকদের জন্য ব্যায়ামের জায়গা ও সাইকেলের লেন গড়ে তোলা হবে। খালগুলো উদ্ধার করতে সরকারের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহায়তা করা হবে। ২৬টি খাল ছাড়াও বাকি খালগুলো উদ্ধারের জন্য সিটি করপোরেশনকে দায়িত্ব দেওয়া হবে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর