শনিবার, ২৯ জানুয়ারি, ২০২২ ০০:০০ টা

জেলা পরিষদ ও পৌরসভা বিলে প্রশাসক নিয়োগ নিয়ে ক্ষোভ

অনৈতিক প্রভাব বলয় সৃষ্টির আশঙ্কা বিশেষজ্ঞদের

নিজস্ব প্রতিবেদক

জেলা পরিষদ ও পৌরসভার মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে এবং কোনো কারণে নির্বাচন অনুষ্ঠানে দেরি হলে প্রশাসক নিয়োগ করা যাবে। জাতীয় সংসদে উত্থাপিত ‘জেলা পরিষদ (সংশোধন) আইন-২০২২’ এবং ‘স্থানীয় সরকার (পৌরসভা) (সংশোধন) আইন-২০২২’ শীর্ষক বিল দুটিতে এ বিধান যুক্ত করা হয়েছে। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন রাজনীতিবিদ ও বিশেষজ্ঞরা। তাঁরা বলেছেন, প্রশাসক নিয়োগের এ উদ্যোগ সংবিধান ও স্থানীয় সরকারব্যবস্থার মূল আকাক্সক্ষার পরিপন্থী। এতে পরিষদে অনৈতিক প্রভাব বলয় সৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে। স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ ড. তোফায়েল আহমেদ বলেন, কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ কিংবা দেশের অভ্যন্তরীণ কোনো গোলযোগের কারণে নির্বাচন দেরি হলেও প্রশাসক নিয়োগের দরকার নেই। সে ক্ষেত্রে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি হিসেবে যাঁরা দায়িত্বে থাকবেন, তাঁদের দিয়েই পরবর্তী পরিষদ গঠন না হওয়া পর্যন্ত পরিষদ পরিচালনা করা সমীচীন। নির্বাচিত প্রতিনিধিদের সরিয়ে প্রশাসক নিয়োগ করা হলে সে ক্ষেত্রে জটিলতা আরও বাড়বে। এতে পরিষদে অনৈতিক প্রভাব বলয় সৃষ্টির আশঙ্কা দেখা দিতে পারে।

সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, প্রশাসক নিয়োগের বিধান সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এ ছাড়া প্রশাসক হিসেবে ‘উপযুক্ত ব্যক্তি’ বলতে কী বোঝানো হয়েছে তা-ও অস্পষ্ট। বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমন্বয়ক সাইফুল হক বলেন, প্রশাসক নিয়োগ স্থানীয় সরকারব্যবস্থার আকাক্সক্ষার পরিপন্থী। তাই ওই বিধান রেখে বিল দুটি পাস হলে স্থানীয় সরকারব্যবস্থা আমলাতন্ত্রে বন্দি হয়ে পড়বে।

জানা গেছে, সংসদের চলতি অধিবেশনে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী তাজুল ইসলাম বিল দুটি উত্থাপনের পর তা অধিকতর পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য সংশ্লিষ্ট সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়েছে। জেলা পরিষদ আইনের ৮২ নম্বর ধারা সংশোধনের প্রস্তাব করে বলা হয়েছে, ‘কোনো জেলা পরিষদের মেয়াদ উত্তীর্ণ হলে এবং পরবর্তী পরিষদ গঠিত না হওয়া পর্যন্ত পরিষদের কার্যক্রম সম্পাদনের জন্য সরকার একজন উপযুক্ত ব্যক্তিকে বা প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিযুক্ত কোনো কর্মকর্তাকে প্রশাসক নিয়োগ করতে পারবে। প্রশাসকের মেয়াদ ও অব্যাহতি সরকার কর্তৃক নির্ধারিত হবে।’ পৌরসভা আইনের সংশোধনীতে বলা হয়েছে, বিদ্যমান আইনে পৌরসভার মেয়াদ পাঁচ বছর শেষ হওয়া সত্ত্বেও নতুন পরিষদ প্রথম সভায় মিলিত না হওয়া পর্যন্ত আগের পরিষদ দায়িত্ব পালন করতে পারে। অনেক সময় পৌরসভার মেয়াদ শেষ হলেও বিভিন্ন কারণে রিট মামলা বা অন্য কোনো মামলা করে মেয়াদোত্তীর্ণ পরিষদ অনির্ধারিত সময়ের জন্য পৌর প্রশাসন পরিচালনা করে। ফলে আইনের এ শর্তটি সংশোধনক্রমে মেয়াদোত্তীর্ণ পৌরসভায় নতুন পরিষদ গঠন না হওয়া পর্যন্ত প্রশাসক নিয়োগ করা প্রয়োজন।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর