মঙ্গলবার, ১ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ ০০:০০ টা

বেনাপোলে বন্ধ আমদানি-রপ্তানি

ভারতের পেট্রাপোলে শ্রমিক ধর্মঘট

বেনাপোল প্রতিনিধি

বেনাপোল স্থলবন্দরের সঙ্গে ভারতের পেট্রাপোল বন্দরের সব ধরনের আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য অনির্দিষ্টকালের জন্য গতকাল সকাল থেকে বন্ধ করে দিয়েছে পেট্রাপোল বন্দর ব্যবহারকারী চারটি সংগঠন। পেট্রাপোল বন্দরের সেন্ট্রাল পার্কিং (ল্যান্ড পোর্ট)-এর নতুন ম্যানেজার কমলেশ সাহানীর খামখেয়ালিতে পণ্য আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য ব্যাহত হচ্ছে বলে দাবি চার সংগঠনের। ম্যানেজার তাদের সঙ্গে কথা না বলে নতুন নতুন আইন তৈরি করছেন। তার বিরুদ্ধে পরিবহন কর্মীরা অভিযোগ এনেছেন যে, বিএসএফকে কাজে লাগিয়ে তাদের বন্দর এলাকায় ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। আমদানি-রপ্তানি কাজে নানা হয়রানি বন্ধসহ নতুন ল্যান্ড পোর্ট ম্যানেজার কমলেশ সাহানীর প্রত্যাহারের দাবিতে গত এক সপ্তাহ দফায় দফায় বৈঠক ও বিক্ষোভ সমাবেশ করছেন তারা। গত শনি ও রবিবার তারা মাইকিং করে সবাইকে কাজ থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানান। রবিবারের মধ্যে তাদের দাবি মেনে নেওয়া না হলে সোমবার সকাল থেকে পেট্রাপোল বন্দরে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে বন্দর ব্যবহারকারীরা। ধর্মঘটের ডাক দেওয়া সংগঠনগুলো হলো-বনগাঁ গুডস ট্রান্সপোর্ট অ্যাসোসিয়েশন, বনগাঁ ট্রাক মালিক সমিতি, পেট্রাপোল সিএন্ডএফ এজেন্টস স্টাফ ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন ও বনগাঁ মহকুমা ট্রাক শ্রমিক ইউনিয়ন। পেট্রাপোল এক্সপোর্ট অ্যান্ড ইমপোর্ট অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক প্রদীপ দে বলেন, পার্কিংয়ে তাদের লোকজনকে কাজ করতে দেওয়া হচ্ছে না। ফলে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ করা ছাড়া বিকল্প কোনো রাস্তা নেই। পেট্রাপোল সিএন্ডএফ এজেন্ট স্টাফ ওয়েল ফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক শ্রী কার্তিক চক্রবর্তী বলেন, বিএসএফ পেট্রাপোল আইসিপিতে ঢুকতে বাধা দিচ্ছে পরিবহন কর্মীদের। ফলে সমস্যা হচ্ছে বাণিজ্যের কাজে। আমরা বন্দর কর্তৃপক্ষকে সমস্যা সমাধানের জন্য বলেছিলাম। কিন্তু কর্তৃপক্ষ আমাদের কথা কর্ণপাত করেননি। ফলে পরিবহনের সঙ্গে যুক্ত কর্মীদের আইসিপিতে ঢুকতে দেওয়ার দাবিতে সোমবার সকাল থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্দরে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। যতক্ষণ পর্যন্ত তাদের দাবি মানা না হবে ততক্ষণ পর্যন্ত দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য বন্ধ রেখে তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন বলেও হুমকি দিয়েছেন। ভারতের স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, সাম্প্রতিক সময়ে আইসিপি-পেট্রাপোলে একাধিক চোরাচালানের ঘটনা ঘটেছে। সেই সব নজরে আসতেই, বিএসএফ তাদের নজরদারি এবং সতর্কতা ব্যবস্থা আরও কড়াকড়ি করার জন্য বেশ কয়েকটি পদক্ষেপ নিয়েছে।

বিএসএফ জানিয়েছে, জাল ড্রাইভিং লাইসেন্সধারী চালককে কোনোভাবেই বাংলাদেশে যেতে দেওয়া যাবে না; কারণ এই ধরনের চালকরা জাল ড্রাইভিং লাইসেন্সের ভিত্তিতে শুল্ক বিভাগ থেকে গাড়ির পাস নেয়, যার ভিত্তিতে বিএসএফ ট্রাকগুলোকে বাংলাদেশে প্রবেশের অনুমতি দেয়। ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে সুষ্ঠু বাণিজ্য নিশ্চিতের জন্য, বিএসএফ বনগাঁ ট্রান্সপোর্ট অ্যাসোসিয়েশনকে একটি স্থায়ী অপারেটিং পদ্ধতি অনুসরণ করতে বলেছে। বেনাপোল স্থলবন্দরের উপপরিচালক (ট্রাফিক) মামুন কবীর তরফদার বলেন, ভারতের পেট্রাপোল বন্দরে সে দেশের বন্দর ব্যবহার সংগঠনের ধর্মঘটের কারণে সকাল থেকে দুই দেশের মধ্যে সব ধরনের আমদানি-রপ্তানি বন্ধ রয়েছে। তবে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ থাকলেও আমাদের বন্দরে লোড আনলোড প্রক্রিয়া স্বাভাবিক রয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর