বৃহস্পতিবার, ৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ ০০:০০ টা

অ্যাকশনে যাচ্ছে সিলেট সওজ

ভাঙা হবে অর্ধশত ভবন, সহযোগিতা করবে সিটি করপোরেশন

শাহ্ দিদার আলম নবেল, সিলেট

সড়ক ও জনপথের কোটি কোটি টাকার জায়গা দখল করে কেউ নির্মাণ করেছেন বহুতল ভবন, আবার কেউ মার্কেট ও দোকানকোঠা বানিয়ে আদায় করছেন ভাড়া। সড়ক ও জনপথ (সওজ) থেকে স্থাপনা উচ্ছেদে বারবার নোটিস করা হলেও তাতে কেউ কর্ণপাত করেনি। বরং নতুন করে জায়গা দখল নিয়ে কেউ কেউ স্থাপনা নির্মাণ অব্যাহত রেখেছেন। এ অবস্থায় হার্ডলাইনে যাওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে সওজ সিলেট অফিস। সিলেট সিটি করপোরেশনের (সিসিক) সহযোগিতায় এবার তারা মাঠে নামছে উচ্ছেদ অভিযানে। সিলেট-সুনামগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কের আম্বরখানা থেকে টুকের বাজার পর্যন্ত উভয় পাশের সব স্থাপনা উচ্ছেদে শিগগিরই সওজ ও সিসিক যৌথভাবে মাঠে নামার ঘোষণা দিয়েছে। এ অভিযানে দখলদার যতই প্রভাবশালী হোন না কেন কেউ ছাড় পাবেন না বলেও আগাম ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।

সওজ-সূত্র জানান, সিলেট-সুনামগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কের সবচেয়ে ব্যস্ততম অংশ আম্বরখানা থেকে টুকের বাজার পর্যন্ত। প্রায় ৫ কিলোমিটার এ সড়কের উভয় পাশে মূল্যবান জায়গা দখল করে নির্মাণ করা হয়েছে বহুতল অনেক আবাসিক ও বাণিজ্যিক ভবন। কেউ কেউ সড়কের জায়গায় বর্ধিত করেছেন বাসাবাড়ি। বছরের পর বছর ধরে জায়গা দখলের এ মহোৎসব চললেও সওজ কর্তৃপক্ষ অনেকটা নীরব ছিলেন। মাঝেমধ্যে দখলদারদের নোটিস দিলেও প্রভাবশালী দখলদাররা তা আমলে নেননি। সওজ কর্তৃপক্ষও দখল বন্ধ বা দখলদার উচ্ছেদে কোনো অ্যাকশনে যাননি। তবে এবার মহাসড়কটির আম্বরখানা-টুকের বাজার অংশে বড়সড় অভিযান চালানোর উদ্যোগ নিয়েছে সওজ। এ লক্ষ্যে ইতোমধ্যে গণমাধ্যমে উচ্ছেদ অভিযানের গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। ২৬ জানুয়ারি প্রচারিত এ গণবিজ্ঞপ্তিতে সব অবৈধ দখলদারকে স্বেচ্ছায় তাদের স্থাপনা সরিয়ে নিতে এক সপ্তাহ সময় বেঁধে দেওয়া হয়। এ সময়ের পর কাউকে আর নতুন সময় দেওয়া হবে না বলেও গণবিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়। গতকাল সওজের বেঁধে দেওয়া সময়সীমা শেষ হয়েছে। সওজ সিলেট অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মোস্তাফিজুর রহমান জানান, সিলেট-সুনামগঞ্জ মহাসড়কের গুরুত্বপূর্ণ আম্বরখানা-টুকের বাজার অংশে সড়কের জায়গা দখল করে অন্তত অর্ধশত ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। কেউ পুরো ভবন আবার কেউ ভবনের অংশবিশেষ সড়কের জায়গায় নির্মাণ করেছেন। এ ছাড়া আরও অনেক ছোটখাটো স্থাপনা রয়েছে। অবৈধ সব স্থাপনা উচ্ছেদ করে সওজের মূল্যবান জায়গা দখলমুক্ত করতে সিটি করপোরেশনের সহযোগিতায় শিগগিরই অভিযান শুরু হবে। মো. মোস্তাফিজুর রহমান আরও জানান, অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের পরই ওই সড়কে সংস্কার কাজ শুরু হবে। সড়কের যেসব অংশে বেশিদিন পিচ টেকে না, সেসব অংশে ঢালাই দেওয়া হবে। বাকি অংশে খুব ভালো মানের সংস্কার কাজ করা হবে। শিগগির এসব কাজের দরপত্রও আহ্বান করা হবে। নতুন প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী সিটি করপোরেশনের সীমানা টুকের বাজার পর্যন্ত বর্ধিত হয়েছে। তাই বর্ধিত এ অংশের সড়কে ড্রেনেজ নির্মাণের কাজ শুরু করতে যাচ্ছে সিটি করপোরেশন। এ লক্ষ্যে আম্বরখানা-টুকের বাজার অংশের সড়কের উভয় পাশে ড্রেন নির্মাণের জন্য ৩২ কোটি টাকার টেন্ডার করেছে সিসিক। কিন্তু অবৈধ স্থাপনার কারণে ড্রেন নির্মাণ কাজ শুরু করতে পারছে না। সিসিকের প্রধান প্রকৌশলী নূর আজিজুর রহমান জানান, সড়কের উভয় পাশে বিভিন্ন ব্যক্তি ১০ থেকে ২৫ ফুট পর্যন্ত দখল করে রেখেছেন।

 কিন্তু ওই জায়গার মালিক সওজ হওয়ায় সিটি করপোরেশন উচ্ছেদ অভিযানও চালাতে পারছে না। তাই যৌথ উদ্যোগে এবার উচ্ছেদ কার্যক্রম পরিচালনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। কয়েক দিনের মধ্যে সিটি করপোরেশনের সার্ভেয়াররা অবৈধ স্থাপনাগুলো লাল দাগ দিয়ে চিহ্নিত করবেন। এরপর যৌথ উদ্যোগে শুরু হবে উচ্ছেদ।

সর্বশেষ খবর