ঢাকা থেকে বরগুনাগামী অভিযান-১০ লঞ্চে ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় বরগুনা আদালতে দায়ের করা মামলায় লঞ্চ মালিক মো. হাম জালাল শেখকে জামিন দিয়েছে আদালত। গতকাল বরগুনার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মোহাম্মদ মাহবুব আলম তার জামিন মঞ্জুর করেন। একই সঙ্গে আসামির রিমান্ড আবেদন নামঞ্জুর করে দিয়েছে আদালত।

জানা যায়, অভিযান-১০ লঞ্চ গত ২৩ ডিসেম্বর ঢাকা থেকে বরগুনার উদ্দেশে ছেড়ে এসে রাত ৩টার দিকে ঝালকাঠি সুগন্ধা নদীতে হঠাৎ আগুন লাগে। মুহূর্তের মধ্যে লঞ্চটিতে আগুন ছড়িয়ে যায়। এতে ৪৭ জন যাত্রী মারা যায় এবং ৭২ জন যাত্রী আহত হয়ে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হন। বহু যাত্রী নিখোঁজ রয়েছে। এ ঘটনায় জনস্বার্থে তরুণ আইনজীবী ইউপি মো. নাজমুল ইসলাম নাসির বাদী হয়ে বরগুনা চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ২৬ ডিসেম্বর লঞ্চের মালিক মো. হাম জালাল শেখকে আসামি করে একটি মামলা করেন। ঢাকার সূত্রাপুর থানায় দাখিলকৃত একটি মামলায় গত ২৭ ডিসেম্বর লঞ্চটির মালিককে গ্রেফতার করা হয়। গত ৪ জানুয়ারি বরগুনা থানার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক শহিদুল ইসলাম বরগুনা চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে লঞ্চ মালিককে দৃশ্যত গ্রেফতার দেখানোর আবেদন করেন। চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মুহাম্মদ মাহবুব আলম ওই দিন মালিককে আদালতে দৃশ্যত (শ্যোন অ্যারেস্ট) গ্রেফতার দেখানো হয়।

আসামি পক্ষের আইনজীবী এম মজিবুল হক কিসলু বলেন, আদালতে বলেছি, একই বিষয় নিয়ে একাধিক আদালতে মামলা চলতে পারে না। নৌযান-সংশ্লিষ্ট মামলার বিচার করার জন্য অভ্যন্তরীণ নৌ চলাচল অধ্যাদেশ ১৯৭৬-এর ধারা ৪৭ অনুযায়ী নৌ আদালত প্রতিষ্ঠিত করা হয়। উক্ত অধ্যাদেশের ৭৩ ধারা অনুযায়ী নৌযান-সংশ্লিষ্ট মামলার বিচার করার জন্য নৌ আদালতই উপযুক্ত। সেই আদালতে আসামি গ্রেফতার আছে। সেখানেই তার বিচারকার্য সম্পন্ন হবে। আমরা আদালতে আরও বলেছি বাংলাদেশ সংবিধানের ৩৫ (২) অনুচ্ছেদে বলা আছে, এক অপরাধের জন্য কোনো ব্যক্তিকে একাধিকবার ফৌজদারিতে সোপর্দ ও দণ্ডিত করা যাবে না। এ ছাড়া লঞ্চের ফিটনেস, রুট পারমিট সবকিছু সঠিক ছিল। আসামি একজন বয়স্ক লোক। ঘটনার সময় তিনি ঘটনাস্থল-লঞ্চে ছিলেন না। সার্বিক বিবেচনায় আদালতের বিচারক একজন বয়স্ক আসামিকে জামিন দিয়েছেন।

মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের কোর্ট উপ-পরিদর্শক (সিএসআই) জহিরুল ইসলাম বলেন, আমি জামিনের বিরোধিতা করেছি। তদন্তকারী কর্মকর্তা আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাত দিনের রিমান্ড চেয়েছিল। রিমান্ড আবেদন নামঞ্জুর করেন বিচারক।