রবিবার, ২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ ০০:০০ টা

সুন্দরবনে ট্যুরিস্ট রাজস্ব ফি বৃদ্ধি

বিপাকে ট্যুর অপারেটররা

নিজস্ব প্রতিবেদক, খুলনা

হঠাৎই সুন্দরবনে দেশি-বিদেশি পর্যটকদের প্রবেশ ও তাদের বহনকৃত যানবাহনের ফি দ্বিগুণের বেশি বাড়ানো হয়েছে। একই সঙ্গে সুন্দরবনে কটকা, কচিখালী, নীলকমল, হিরণ পয়েন্ট, পুষ্পকাঠি মান্দারবাড়িয়া, হলদেবুনিয়া অভয়ারণ্যে প্রবেশ ও সুন্দরবনের অভ্যন্তরে অবস্থানের ক্ষেত্রে রাজস্ব ফি বাড়ানো হয়েছে। বন, পরিবেশ ও জলবায়ু মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী বর্তমানে বর্ধিত হারে রাজস্ব আদায় করছে বন বিভাগ। এতে পূর্বনির্ধারিত রাজস্ব ফি হিসেবে পর্যটকদের প্যাকেজ বুকিং দিয়ে বিপাকে পড়েছেন ট্যুর অপারেটররা।

জানা যায়, সুন্দরবনে দেশি পর্যটকদের তিন দিনের প্যাকেজে রাজস্ব ফি ৫৫০ থেকে ১ হাজার ১০০ আর বিদেশিদের ৫ হাজার ২০০ থেকে প্রায় ১১ হাজার টাকা করা হয়েছে। একই সঙ্গে ভিডিও ক্যামেরা ফি, তীর্থযাত্রীদের প্রবেশ ফিও বেড়েছে। আগে পর্যটক গাইড ফি না থাকলেও এখন তিন দিনের প্যাকেজে ২ হাজার ৭০০ থেকে ২ হাজার ৮০০ টাকা ধার্য করা হয়েছে। এ ছাড়া নতুন ঘোষণায় বনে লঞ্চের প্রবেশ ফি নিবন্ধিত ১ হাজার ৫০০, অনিবন্ধিত ৬ হাজার, হেলিকপ্টার বা সি প্লেন নিবন্ধিত ২০ হাজার, অনিবন্ধিত ৫০ হাজার, স্পিডবোট নিবন্ধিত ৩ হাজার, অনিবন্ধিত ৬ হাজার, অভয়ারণ্য ছাড়া সুন্দরবনের ভিতরে দেশি পর্যটক ১৫০, বিদেশি দিনপ্রতি ২ হাজার টাকা করা হয়েছে। ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন অব সুন্দরবন-টোয়াসের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল আজম ডেভিড জানান, ২০ ফেব্রুয়ারি হঠাৎই বন বিভাগ মৌসুমের মাঝপথে বিভিন্ন খাতে দ্বিগুণ বা কোনো ক্ষেত্রে দ্বিগুণের বেশি রাজস্ব নির্ধারণ করেছে; যা ওইদিন থেকেই তা কার্যকর। এদিকে মৌসুমের শুরুতে রাজস্বসহ সবকিছুর সঙ্গে সংগতি রেখে ট্যুর প্যাকেজের মূল্য নির্ধারণ ও বুকিং দেওয়া হয়েছে। শেষ মুহূর্তে পর্যটকদের কাছ থেকে এ বাড়তি টাকা আদায় করা সম্ভব হচ্ছে না। এ ছাড়া বিগত দিনে রাজস্ব বৃদ্ধির ক্ষেত্রে ও বাস্তবায়নে ট্যুর অপারেটরদের সঙ্গে মতবিনিময় করা হতো। এবার তা-ও করা হয়নি; যা এ শিল্পের বিকাশ ব্যাহত করবে। জানা যায়, বন্যপ্রাণীদের প্রজনন মৌসুমের কথা বলে জুন, জুলাই ও আগস্টে সুন্দরবনে পর্যটক প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয় ২০১৮ সালে। বর্তমানে সুন্দরবনের নদী-খালে পর্যটকবাহী ছাড়া সব ধরনের নৌযান চলাচল করছে। ফলে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন ট্যুর অপারেটররা। তারা বলেন, রাসপূর্ণিমা দিয়ে পর্যটন মৌসুম শুরু হয়। কিন্তু গত বছর জেলে-বাওয়ালিসহ হাজার হাজার পুণ্যার্থী রাসপূর্ণিমা অনুষ্ঠানে অংশ নিলেও পর্যটকদের যেতে বাধা দেওয়া হয়েছে। অথচ পর্যটকরাই ট্যুর অপারেটরদের মাধ্যমে সুসংগঠিতভাবে অংশ নেন। এসব কর্মকাণ্ড পর্যটন শিল্পের বিকাশে অন্তরায়।

টোয়াস সভাপতি মো. মঈনুল ইসলাম জমাদ্দার বলেন, পর্যটকদের সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধির জন্য বন বিভাগের অধীনে পর্যটন সেল খোলা, নতুন পয়েন্ট সৃষ্টির আবেদন করা হয়েছে। এতে বর্তমান স্টেশনগুলোয় চাপ কমবে ও আগ্রহ বাড়বে। কিন্তু এ বিষয়েও উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।

সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তা ড. আবু নাসের মোহসিন হোসেন জানান, বন, পরিবেশ ও জলবায়ু মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী ২২ ফেব্রুয়ারি থেকে রাজস্ব বৃদ্ধির আদেশ কার্যকর। জেলে-বাওয়ালির প্রবেশসহ সব ক্ষেত্রেই রাজস্ব বাড়ানো হয়েছে। এটি কমানোর ক্ষেত্রে স্থানীয়ভাবে বিবেচনার সুযোগ নেই।

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর