রবিবার, ২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ ০০:০০ টা
খুলনা-মোংলা

রেললাইনের কাজ শেষ হচ্ছে ডিসেম্বরে

শেখ আহসানুল করিম, বাগেরহাট

খুলনা-মোংলা রেললাইন নির্মাণকাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে। করোনা মহামারিতে নির্মাণকাজে কিছুটা ভাটা পড়লেও আবার গতি ফিরেছে। এরই মধ্যে রেললাইন টেলিকমিউনিকেশন সিগনালিং ও রূপসা নদীতে সেতু নির্মাণসহ প্রকল্পের সার্বিক ভৌত অবকাঠামোর কাজ ৯০ শতাংশ শেষ হয়েছে। বাকি কাজ শেষ করতে আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় লাগবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

ডিসেম্বরের মধ্যে খুলনা-মোংলা রেললাইনের কাজ শেষের পর প্রধানমন্ত্রী সময় দিলে যে কোনো দিন চালু হবে রেলপথ। খুলনা-মোংলা রেলপথ চালু হলে বিশে^র রেল সংযোগবিহীন একমাত্র আন্তর্জাতিক সমুদ্রবন্দরের দুর্নাম ঘুচবে মোংলা বন্দরের। অন্যদিকে দেশের আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যের দ্বিতীয় লাইফ লাইন মোংলা বন্দরের ব্যবসা-বাণিজ্য বেড়ে যাবে কয়েক গুণ। গতকাল বিকালে মোংলায় ঝটিকা সফরে এসে খুলনা-মোংলা রেললাইন নির্মাণকাজ পরিদর্শন শেষে বাংলাদেশ রেলওয়ে বিভাগের মহাপরিচালক ধীরেন্দ্রনাথ মজুমদার সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান। বাংলাদেশ রেলওয়ে বিভাগের মহাপরিচালক জানান, যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন ও মোংলা বন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানি বৃদ্ধি করতে খুলনা থেকে মোংলা বন্দর পর্যন্ত রেললাইন প্রকল্পটি ২০১০ সালের ২১ ডিসেম্বর জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় অনুমোদন পায়। জমি অধিগ্রহণ, রেললাইন ও রেল সেতু নির্মাণসহ সমগ্র প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৩ হাজার ৮০১ কোটি ৬১ লাখ টাকা। এরপর পাঁচবার সময় বাড়িয়ে সর্বশেষ ২০২২ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় বৃদ্ধির করা হয়েছে।

এরই সঙ্গে ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ৪ হাজার ২৬০ কোটি ৮৮ লাখ ৫৯ হাজার টাকা। খুলনার ফুলতলা থেকে মোংলা পর্যন্ত ৬৪ দশমিক ৭৫০ কিলোমিটার ব্রডগেজ রেললাইন নির্মাণকাজ শেষের মধ্য দিয়ে মোংলা সমুদ্রবন্দরকে বিদ্যমান রেলওয়ে নেটয়ার্কের সঙ্গে সংযুক্ত করা সম্ভব হবে।

খুলনা-মোংলা রেললাইন নির্মাণকাজের প্রকল্প পরিচালক (পিডি) মো. আরিফুজ্জামান জানান, রেলপথের কিছু অংশ, রেল সেতুর পাঁচ শতাংশ ও ফিনিশিং ওয়ার্ক বাকি আছে। তবে নতুন ডিজাইনের ৯টি রোড আন্ডারপাস নির্মাণ, পাইলের লেনথ সংখ্যা বৃদ্ধি ও মাটির কাজসহ নতুন কিছু কাজ সংযোজন হয়েছে। সে হিসেবে পূর্বের একশ শতাংশ কাজের সঙ্গে আরও ১২ শতাংশ কাজ বেড়েছে। বর্তমানে রেললাইনের মূল ভৌত অবকাঠামো কাজ ৯০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। ২০২২ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে বাকি কাজ শেষ হবে। করোনাকালে ভারত থেকে মালামাল আসতে ও নানা সংকটে শুরুতেই নির্মাণকাজে বিলম্ব হয়েছে।

মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ মূসা জানান, ডিসেম্বরে চলমান এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে বিশে^র রেলসংযোগবিহীন একমাত্র আন্তর্জাতিক সমুদ্রবন্দরের দুর্নাম ঘুচবে মোংলা বন্দরের। মোংলা বন্দরের গতি আরও সঞ্চার হবে। পদ্মা সেতু চালুর ফলে রাজধানী ঢাকার সব থেকে কাছের এই বন্দর দিয়ে ব্যবসা-বাণিজ্য কয়েক গুণ। মোংলা বন্দরের সঙ্গে রেলপথে যুক্ত হবে উত্তরাঞ্চলের পঞ্চগড় ও বাংলাবান্ধা হয়ে ভারতের শিলিগুড়ির রেল যোগাযোগ। ফলে দেশের মধ্যেসহ কম খরচে ভারত, নেপাল ও ভুটানের মালামাল পরিবহন সহজ হবে। এতে এই বন্দরের আমদানি-রপ্তানি বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে কন্টেইনার সার্ভিসও বাড়বে।

 

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর