শুক্রবার, ৪ মার্চ, ২০২২ ০০:০০ টা

খুলনায় ৯৮ ভাগ ভবনই অগ্নিঝুঁকিতে

বহুতল ভবন, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে নেই অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা

সামছুজ্জামান শাহীন, খুলনা

শীতের শেষে হঠাৎ করেই খুলনায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা বেড়েছে। গত চার দিনে বহুতল ভবনসহ ছয়টি স্থানে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এতে পঁচিশটির বেশি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও ১০টি বসতঘর পুড়ে বহু ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বিল্ডিং কোড না মেনে অপরিকল্পিতভাবে ভবন নির্মাণের কারণে ক্ষয়ক্ষতি বাড়ছে।

জানা যায়, ২৮ ফেব্রুয়ারি মহানগরীর ক্লে রোডের র?হিমা কম?প্লেক্সের চতুর্থ তলায় ইলেকট্রনিক্স পণ্যের দোকা?নে আগুন লাগে। কিন্তু ভবনটির সিঁড়ি অপেক্ষাকৃত সরু ও চারপাশে সারি সারি দোকান থাকায় পানি নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছানো সম্ভব ছিল না। পরে চতুর্থ তলার জানালার কাঁচ ভেঙে সেখান থেকে ভিতরে পানি দেওয়া হয়।

বৃহত্তর খুলনা উন্নয়ন সংগ্রাম সমন্বয় কমিটির সভাপতি শেখ আশরাফ-উজ্জামান জানান, শহরের ৯৮ ভাগ ভবনে নেই অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা। আইন থাকা সত্ত্বেও ফায়ার সার্ভিসের বসবাসের উপযোগী ছাড়পত্রও নেই অধিকাংশ ভবনে। ফলে বিপণি বিতান, মার্কেট, বহুতল ভবন ও বস্তি এলাকার মানুষ অগ্নিকাণ্ডের ঝুঁঁকিতে রয়েছেন। খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (কেডিএ) কর্মকর্তারা বলছেন, সাততলা ভবন বা তদূর্ধ্ব ভবনের ক্ষেত্রে ফায়ার সার্ভিস বিভাগ থেকে আলাদা সার্টিফিকেট নিতে হয়। সেখানে বিকল্প সিঁড়ির ব্যবস্থা থাকবে। সিঁড়িতে ফায়ার  প্রোটেকশন ডোর (অগ্নিপ্রতিরোধক দরজা), ফায়ার অ্যালার্মিং সিস্টেম ও প্রতি তলায় ফায়ার এক্সিটিংগুইসার (ছোট সিলিন্ডার) থাকতে হবে। কিন্তু খুলনায় ২২তলা ডেল্টা ভবন, সিটি ইন হোটেল, সিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ হাতে গোনা কয়েকটি ভবন ছাড়া কোথাও অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা নেই। এদিকে পরপর কয়েকটি অগ্নিকাণ্ডের পর ঝুঁকিতে থাকা ভবন, কারখানা, বিপণি বিতান, হাসপাতাল চিহ্নিত করার কাজ শুরু করেছে ফায়ার সার্ভিস।

নাগরিক নেতা আইনজীবী বাবুল হাওলাদার বলেন, অধিকাংশ বহুতল ভবন নিয়ম মেনে করা হয়নি। ফায়ার সার্ভিসের অনুমোদন নেওয়া হয়েছে যেনতেনভাবে। আবাসিক ভবনে, বাজার এলাকায় পানির কোনো রিজার্ভার নেই। ফলে আগুন লাগলে ভয়াবহ অবস্থা তৈরি হয়। ফায়ার সার্ভিস বা কেডিএ এ বিষয়ে পদক্ষেপ না নেওয়ায় দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়ছে।

জানা যায়, খুলনার বড় মার্কেটগুলোর আশপাশে পানির উৎস এবং ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি প্রবেশের জন্য পর্যাপ্ত রাস্তা নেই বলে অগ্নিদুর্ঘটনা ঘটলেই হিমশিম খেতে হয় ফায়ার সার্ভিসকে।

খুলনা ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সহকারী পরিচালক মো. আসাদুজ্জামান বলেন, পুরনো ভবনগুলোতে কোনো সেফটির ব্যবস্থা না থাকায় সেখানে ঝুঁকি বেশি। অধিকাংশ ভবনে আন্ডারগ্রাউন্ড রিজার্ভার নেই। নগরীর দৌলতপুর, নিউমার্কেট, বড় বাজার এলাকাসহ বহুতল ভবনের আশপাশে পানির কোনো উৎস নেই। যা দুর্ঘটনা প্রতিরোধের সময় বড় ধরনের সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর