শুক্রবার, ৪ মার্চ, ২০২২ ০০:০০ টা

শব্দদূষণ রোধে ১০ সুপারিশ

নিজস্ব প্রতিবেদক

শব্দদূষণ রোধে হাসপাতাল ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সামনে হর্ন না বাজানোসহ ১০ দফা সুপারিশ করেছে বায়ুমন্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্র (ক্যাপস) এবং ইকিউএমএস কনসালটিং লিমিটেড। গতকাল আন্তর্জাতিক শ্রবণ দিবস উপলক্ষে প্রতিষ্ঠান দুটি অনলাইনে আয়োজিত ‘প্রাণ প্রকৃতির উপর শব্দদূষণের প্রভাব ও প্রতিকার’ শীর্ষক এক ওয়েবিনারে এসব সুপারিশ তুলে ধরা হয়। সুপারিশ তুলে ধরেন ক্যাপসের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জমান মজুমদার।

সংগঠন দুটির অন্য সুপারিশগুলো হচ্ছে- বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের আওতায় পরিবেশ ক্যাডার ও পরিবেশ পুলিশ নিয়োগ দেওয়া, বিধিমালা সংজ্ঞা অনুযায়ী চিহ্নিত জোনসমূহে (নীরব, আবাসিক, বাণিজ্যিক, শিল্প ও মিশ্র) সাইনপোস্ট উপস্থাপন করা ও তা মানার বিষয়ে নিয়মিত মনিটরিং করা, ৯৯৯-এ কল সার্ভিসের পাশাপাশি অনলাইনে ই-মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে দন্ড প্রদান করা, পরিবেশ অধিদফতরের সঙ্গে বাংলাদেশ পুলিশ, সিটি করপোরেশন, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ, স্থানীয় সরকার এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়সহ অন্যান্য প্রশাসনিক দফতরের সমন্বয় সাধন করা, হাইড্রোলিক হর্ন আমদানি বন্ধ নিশ্চিত করা, হর্ন বাজানোর শাস্তি বৃদ্ধি, চালকদের শব্দ সচেতন করা, উচ্চ শব্দ এলাকায় ইয়ার মাফসহ ব্যক্তিগত সুরক্ষা সামগ্রীর ব্যবহার করা, ছাদ, বারান্দা, খোলা জায়গায় গাছ লাগানো (গাছ শব্দ শোষণ করে) এবং সন্ধ্যার পর ছাদ ও কমিউনিটি হলে গান-বাজনা না করা, ব্লেন্ডার, প্রেশার কুকার ও ভ্যাকুয়াম ক্লিনার ব্যবহার না করা, ড্রিল ও গ্রাইন্ডিং মেশিন এর ব্যবহার সীমিত করা।

ওয়েবিনারে বাংলাদেশ প্রাণীবিজ্ঞান সমিতির প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ড. গুলশান আরা লতিফা বলেন, সবাইকে এক ছাদের নিচে এসে সংবলিতভাবে এই শব্দদূষণ রোধে কাজ করতে হবে এবং এর মাধ্যমে মানুষ ও প্রাণীর নিরাপদ শ্রবণ নিশ্চিত করতে হবে। বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) সাধারণ সম্পাদক শরীফ জামিল বলেন, সব স্তরের মানুষকে সংযুক্ত করে শব্দদূষণ রোধে কাজ করতে হবে। হাইড্রলিক হর্ন বাজানো নিষেধের আগে এর বিকল্প ব্যবস্থা করতে হবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন বলেন, প্রাণ প্রকৃতির ওপর শব্দদূষণের প্রভাব রয়েছে, যেসব এলাকায় শব্দদূষণ বেশি হয় ওই এলাকা থেকে প্রাণীরা অন্য এলাকায় স্থানান্তরিত হয়। ফলে উদ্ভিদের পরাগায়ন ও প্রজনন ব্যাহত হয়।

নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. জাকারিয়া বলেন, শব্দদূষণ নিয়ে নিয়মিত গবেষণা করা প্রয়োজন। এ ছাড়া সরাসরি শব্দদূষণ মনিটরিং ব্যবস্থা গ্রহণ করলে নির্দিষ্ট এলাকায় শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণ সহজ হবে। শ্রবণ ব্যাধি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. নাসিমা খাতুন বলেন, মানুষের স্বাস্থ্যের ওপর শব্দদূষণের বিশেষ প্রভাবটি হলো শ্রবণ শক্তি হ্রাস। স্কুলগামী শিশুদের ওপর শব্দদূষণের প্রভাব বেশি, বর্তমানে অনলাইন প্ল্যাটফরমগুলোতে ক্লাস করার জন্য তারা ইয়ারফোন ব্যবহার করে পাশাপাশি অতিরিক্ত গান-বাজনা ইত্যাদি শোনার ফলে পড়াশোনায় অমনোযোগিতা দেখা দিচ্ছে এবং তাদের খাবারে অরুচি সমস্যা দেখা দিচ্ছে।

সর্বশেষ খবর