মঙ্গলবার, ৮ মার্চ, ২০২২ ০০:০০ টা

বিএসএমএমইউতে বৈষম্যের শিকার নারী অধ্যাপক

নিজস্ব প্রতিবেদক

কর্তৃপক্ষের অসহযোগিতায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) অধ্যাপক ডা. জাহানারা আরজু বৈষম্যের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকাংশ শিক্ষকের ভিআইপি রুমে অফিস থাকলেও এই শিক্ষক বরাদ্দ পেয়েছেন জরাজীর্ণ-পরিত্যক্ত ও অপরিচ্ছন্ন একটি রুম। বৈষম্যের শিকার হয়ে এই অধ্যাপক ইউনিট প্রধান হওয়া থেকেও বঞ্চিত হয়েছেন। এমনকি অধ্যাপক হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার পর তাকে সরকারি বেতন স্কেল দিতে অস্বীকৃতি জানানোর অভিযোগও রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের বিরুদ্ধে। জানা যায়, বিএসএমএমইউর কার্ডিওলজি বিভাগের এই অধ্যাপক বাথরুম সংযুক্ত অফিস কক্ষের জন্য দীর্ঘদিন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে আবেদন করেও কোনো সাড়া পাননি। কয়েক দফা আবেদনেও সাড়া না পেয়ে তিনি বিষয়টি নিয়ে হাই কোর্টে রিট করেন। হাই কোর্ট গত ৬ ডিসেম্বর রিটের আদেশে জাহানারা আরজুর আবেদনটি ১৫ দিনের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেয়। পাশাপাশি দ্রুত জাহানারা আরজুর জন্য  শৌচাগার সংযুক্ত, স্বাস্থ্যসম্মত অফিস কক্ষ নিশ্চিত করতে নির্দেশ দেওয়া হয়। বিএসএমএমইউ প্রশাসন হাই কোর্টের ওই রুলও অমান্য করেছে।

ফলে গত ফেব্রুয়ারিতে পুনরায় হাই কোর্টে আবেদন করেন ডা. জাহানারা আরজু। তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালতের আদেশ প্রতিপালন না হওয়ায় বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, রেজিস্ট্রার ও কার্ডিওলজি বিভাগের চেয়ারম্যানের প্রতি আদালত অবমাননার রুল দিয়েছে হাই কোর্ট। গত ২০ ফেব্রুয়ারি বিচারপতি মামনুন রহমান ও বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামানের সমন্বয়ে গঠিত হাই কোর্ট বেঞ্চ এ রুল দেয়।

আদালত অবমাননার রুল জারির পর গত ২৪ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার এ বি এম আবদুল হান্নান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্ডিওলজি বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক জাহানারা আরজুর নামে ডি-ব্লকের ৪০৯ নম্বর কক্ষটির বরাদ্দ বাতিল করা হলো। একই সঙ্গে তাকে বেতার ভবনের হাইজিনিক বাথরুমসহ ৮২ নম্বর কক্ষটি বরাদ্দ দেওয়া হলো।’

জানা যায়, বরাদ্দকৃত এই রুমটি এই বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল চত্বরের বাইরে, রাস্তার অপর পাশে। প্রায় পরিত্যক্ত হয়ে যাওয়া ভবনের এই রুম শ্যাওলা জমে বেহাল অবস্থায় রয়েছে। ওয়াশ রুমের অবস্থা আরও ভয়াবহ। তাছাড়া এই রুমের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্ডিওলজি বিভাগের দূরত্বও কম নয়। এই রুমকে ভীতিকর, অস্বাস্থ্যকর এবং নিরাপত্তাহীন আখ্যা দিয়ে উপাচার্য বরাবর চিঠি দিয়েছেন ডা. জাহানারা আরজু। চিঠিতে তিনি লিখেন, প্রায় পরিত্যক্ত ভবনে ভীতিকর ও অস্বাস্থ্যকর একটি কক্ষ তার নামে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এই রুম অফিস হিসেবে ব্যবহার করলে নারী ডাক্তার হিসেবে আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগব বলে মনে করি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. এ বি এম আবদুল হান্নান জানান, উনি যেভাবে চাচ্ছেন কোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা  সেভাবেই ব্যবস্থা নিচ্ছি। আদালত যেভাবে বলবে, আমরা সেভাবেই কাজ করব।

সর্বশেষ খবর