বৃহস্পতিবার, ২৪ মার্চ, ২০২২ ০০:০০ টা

তৃণমূলে উত্তপ্ত হচ্ছে বিএনপির রাজনীতি

নিজস্ব প্রতিবেদক, খুলনা

খুলনা বিএনপিতে অভ্যন্তরীণ বিরোধ আবারও মাথাচাড়া দিয়েছে। নগর আহ্বায়ক কমিটির বিরুদ্ধে ধারাবাহিক কর্মসূচি নিয়ে মাঠে থাকার ঘোষণা দিয়েছেন দলের বিদায়ী নগর সভাপতি নজরুল ইসলাম মঞ্জুর সমর্থকরা। এরই মধ্যে ‘মহানগর বিএনপির সাবেক কমিটির নেতৃবৃন্দ’ ব্যানারে ১২ ও ২২ মার্চ চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় তারা আলাদা কর্মসূচি পালন করেছেন। এ ছাড়া ২৬ মার্চ খানজাহান আলী থানা বিএনপির ব্যানারে স্বাধীনতা দিবস উদযাপনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে। এতে উত্তপ্ত হচ্ছে বিএনপির মাঠ পর্যায়ের রাজনীতি।

জানা যায়, খুলনা বিএনপিতে নেতৃত্বের বিভেদ পুরনো। সর্বশেষ ২০২১ সালে ৯ ডিসেম্বর মহানগর সভাপতি নজরুল ইসলাম মঞ্জুসহ কমিটির শীর্ষ সব নেতাকে বাদ দিয়ে নগর আহ্বায়ক কমিটি করা হয়। এর প্রতিবাদে নগর ও থানা কমিটির একটি বড় অংশ পদত্যাগ করে নিষ্ক্রিয় রয়েছে। নগর বিএনপির আহ্বায়ক শফিকুল আলম মনার নেতৃত্বে নতুন আহ্বায়ক কমিটি পদ-পদবির লোভ দিয়েও বিগত সাড়ে তিন মাসে ওয়ার্ড ও থানা বিএনপির এসব নেতাকে দলে ভেড়াতে পারেনি। উপরন্তু পাল্টা কর্মসূচি দিয়ে তারা নিজেদের অবস্থান জানান দিচ্ছেন। জানা যায়, ১২ মার্চ নগর বিএনপির পূর্ণাঙ্গ আহ্বায়ক কমিটির প্রথম সভা দলীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়। একই দিন খালিশপুরে পাল্টা কর্মসূচিতে দোয়া মাহফিলে অংশ নেয় নগরের পাঁচ থানা কমিটির সাবেক সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকরা। খালিশপুর থানা বিএনপির সিনিয়র নেতারা এই কর্মসূচির আয়োজন করেন। একইভাবে ২২ মার্চ মহানগর আহ্বায়ক কমিটি দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে লিফলেট বিতরণ ও স্মারকলিপি প্রদান করে। ওই দিনই খুলনা প্রেস ক্লাবে পাল্টা কর্মসূচিতে দোয়া মাহফিলের আয়োজন করেন মহানগর সাবেক কমিটির নেতারা। দৌলতপুর থানা বিএনপির সাবেক সভাপতি শেখ মোশারফ হোসেন বলেন, চাপিয়ে দেওয়া আহ্বায়ক কমিটি নিয়ে সবার আপত্তি আছে। আলাপ-আলোচনার ভিত্তিতে কমিটি করা হলে বিরোধিতা থাকবে না। নগর বিএনপির কমিটি পরিবর্তন করতে পুরনো কমিটির কাউকেই আহ্বায়ক কমিটিতে রাখা হয়নি। এতে তৃণমূলে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। যাদের নেতৃত্বে আনা হয়েছে তাদের সঙ্গে মাঠের কর্মীদের যোগাযোগ নেই। সোনাডাঙ্গা থানা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এস এম আসাদুজ্জামান মুরাদ বলেন, যেখানে জেলা বিএনপিতে শূন্যতা রয়েছে, সেখানে তাদের দিয়েই মহানগর কমিটি চালানো হচ্ছে। এতে ত্যাগী নেতা-কর্মীদের মধ্যে অসন্তোষ তৈরি হয়েছে। পাল্টা কর্মসূচিতে পরিস্থিতি ক্রমে উত্তপ্ত হচ্ছে। ষড়যন্ত্রের মুখে বঞ্চিতরা সবাই একত্র হয়ে আলাদা কর্মসূচি দিচ্ছেন। গত ২৫ ডিসেম্বর নগরের পাঁচ থানা কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করে নতুন আহ্বায়ক কমিটি। এদিকে মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক শফিকুল আলম মনা বলেন, ‘আমরা তৃণমূল থেকে দল ঢেলে সাজানোর চেষ্টা করছি। বিরোধ নিরসনে ঐক্যের ডাক দেওয়া হয়েছে। সবার জন্য দরজা খোলা আছে। একসঙ্গে কাজ করতে চাইলে তাদের স্বাগত জানানো হবে।’

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর