বুধবার, ৩০ মার্চ, ২০২২ ০০:০০ টা

নোয়াখালীতে জনসভায় ‘নগদ চৌধুরী’দের প্রতি কঠোর হুঁশিয়ারি

এমপি একরামকে উদ্যোক্তারা ডাকেননি

নোয়াখালী প্রতিনিধি

জিলা স্কুল মাঠে গতকাল অনুষ্ঠিত বিশাল জনসভায় টাকা দিয়ে যারা রাজনীতি নিয়ন্ত্রণ করতে চান সেসব ‘নগদ চৌধুরী’দের বিরুদ্ধে বক্তারা কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, টেন্ডারবাজি আর অপরাজনীতির প্রতিবাদেই হাজার হাজার মানুষ এই জনসভায় হাজির হয়েছেন। জানা গেছে, সভার উদ্যোক্তারা নোয়াখালী-৪ (সদর ও সুবর্ণচর) আসনের এমপি একরামুল করিম চৌধুরীকে এ সভায় দাওয়াত না দেওয়ায় তার অনুরাগীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। পক্ষান্তরে তার বিরুদ্ধবাদীরা দৃশ্যত তাকে ইঙ্গিত করেই ‘নগদ চৌধুরী’ কথাটি উচ্চারণ করেন। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও মুজিববর্ষ উপলক্ষে আয়োজিত এই জনসভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা আওয়ামী লীগ আহ্বায়ক খায়রুল আনাম চৌধুরী সেলিম। প্রধান অতিথি ছিলেন সাবেক এমপি বীর মুক্তিযোদ্ধা মাহমুদুর রহমান বেলায়েত। বিশেষ অতিথি ছিলেন- কেন্দ্রীয় ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, কৃষি ও সমবায় সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আবদুস সবুর।

 বক্তাদের মধ্যে ছিলেন- জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট শিহাব উদ্দিন শাহীন, নোয়াখালী পৌর মেয়র শহীদ উল্যাহ খান সোহেল, মোরশেদ আলম এমপি, আয়েশা ফেরদৌস এমপি, আওয়ামী লীগ নেতা জাহাঙ্গীর আলম, সাবেক এমপি মোহাম্মদ আলী (হাতিয়া), নোয়াখালী শহর আওয়ামী লীগ সভাপতি আবদুল ওয়াদুদ পিন্টু, চাটখিল উপজেলা চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর কবির প্রমুখ।

জনসভায় জেলা আওয়ামী লীগ নেতা গোলাম মহিউদ্দিন লাতু বলেন, এ এলাকার এমপির আমলে আমরা রাজনীতিতে আসিনি। জননেতা আবদুল মালেক উকিলের আমলে রাজনীতিতে এসেছি। আমরা দলে ঐক্য চাই, বিরোধ চাই না।

মোহাম্মদ আলী বলেন, আজকের দিন ঐতিহাসিক দিন। এতদিন এলাকাটি কুখ্যাত বদমাশের জায়গা ছিল। এখন আর সে অবস্থা নেই। একরাম চৌধুরীর নামোল্লেখ করে তিনি বলেন, এই নগদ সাহেব বিভিন্ন উপজেলা থেকে টাকা কালেকশন করেছেন। কিন্তু জেলা আওয়ামী লীগ অফিসকে একটি টাকাও দেন নাই। উনি বছরের পর বছর আবার তাদের বিরুদ্ধে কুৎসাচারও করছেন। সেলিম ও কাদেরকে বাপের সমতুল্য বলেছেন, আবার তাদের বিরুদ্ধে কুৎসাচারও করছেন। তিনি কি আওয়ামী লীগার? তার উচিত দল থেকে সরে দাঁড়ানো। নইলে সদর ও সুবর্ণচরের রাস্তায় দাঁড়ানোর সুযোগও তাকে কেউ দেবে না।

জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক শহীদ উল্যাহ খান সোহেল বলেন, দলে যারা বিশৃঙ্খলা করবে, তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিতে হবে। ওবায়দুল কাদেরের সম্মানহানি যারা করবে আমরা তাদের কাউকে ছাড় দেব না।

জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক শিহাব উদ্দিন শাহীন এমপি একরামের নামোল্লেখ করে বলেন, তিনি বলে বেড়াচ্ছেন, আমার নাকি ইতালিতে মদের দোকান আছে। এটা জঘন্য অপপ্রচার। বরং চৌধুরী সাহেবই মদ খেয়ে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের বিরুদ্ধে বিষোদগার করছেন।

সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এ কে এম শামছুদ্দিন জেহান অভিযোগ করেন, একরাম এমপির মতো তাকেও উদ্যোক্তারা অনুষ্ঠানে দাওয়াত করেননি। বিকালে শুরু হওয়া জনসভা সন্ধ্যা পর্যন্ত চলে। এর ফলে দুই ঘণ্টা ধরে সভা এলাকায় গাড়ি চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। তবে এ বিষয়ে জানতে চাইলে সুধারাম থানার ওসি আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, সড়কে গাড়ি চলাচল বন্ধ থাকার কথা ঠিক নয়। লোকজনের ভিড়ের কারণে গাড়ি ধীরগতিতে চলেছিল।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর