বৃহস্পতিবার, ৩১ মার্চ, ২০২২ ০০:০০ টা

নতুনে বদলে গেল সিলেট বিএনপি

শাহ্ দিদার আলম নবেল, সিলেট

সিলেট জেলা বিএনপির কাউন্সিল অধিবেশনে নিজেদের ‘ক্যারিশমা’য় পুরনো নেতৃত্ব সরিয়ে দিয়ে জয় করে নিয়েছেন দলের নেতৃত্ব। কাউন্সিলে ভোটযুদ্ধে বিজয়ীরা সব বিভেদ ভুলে দলের নেতা-কর্মীদের ঐক্যবদ্ধ করে সামনে এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন। চমক দেখিয়ে সভাপতি পদে যুবদলের সাবেক কেন্দ্রীয় সহসভাপতি আবদুল কাইয়ূম চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক পদে জেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক এমরান আহমদ চৌধুরী ও সাংগঠনিক সম্পাদক পদে জেলা বিএনপির সদস্য শামীম আহমদ নির্বাচিত হয়েছেন। তাঁদের কাছে ধরাশায়ী হয়েছেন সদ্য সাবেক কমিটির নেতারা। সিলেট জেলা বিএনপির বহুল কাক্সিক্ষত দ্বিবার্ষিক কাউন্সিল হয়েছে মঙ্গলবার। কাউন্সিলে সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী ছিলেন নয় নেতা। কাউন্সিলে ভোট গ্রহণ শেষে রাতে ঘোষণা করা হয় ফলাফল। ফলাফল ঘোষণার আগ পর্যন্ত দলীয় নেতা-কর্মীদের মধ্যে ছিল টানটান উত্তেজনা। বিশেষ করে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে সদ্য সাবেক কমিটির নেতারাই বহাল থাকছেন কি না এটাই ছিল উত্তেজনার মূল কারণ। ফলাফল ঘোষণার সময় দেখা যায় পুরনো নয়, নতুনের প্রতিই আস্থা রেখেছেন তৃণমূলের কাউন্সিলররা। জেলার আওতাধীন ১৮ ইউনিটের ১ হাজার ৮১৮ কাউন্সিলরের নির্বাচনে সদ্য সাবেক কমিটির সভাপতি হেভিওয়েট প্রার্থী আবুল কাহের চৌধুরী শামীমকে পরাজিত করে সভাপতি নির্বাচিত হন যুবদলের সাবেক কেন্দ্রীয় সহসভাপতি আবদুল কাইয়ূম চৌধুরী। তাঁর বিজয় ছিল সবচেয়ে বেশি চমক জাগানিয়া। সিলেট জেলা বিএনপির রাজনীতিতে অনেকটা নবাগত কাইয়ূম চৌধুরী। কাউন্সিলের আগে গঠিত আহ্বায়ক কমিটির সদস্য হিসেবে জেলা বিএনপির রাজনীতিতে তাঁর অভিষেক। অভিষেকেই তিনি নির্বাচিত হয়েছেন সভাপতি। স্বল্প সময়ে তৃণমূলের আস্থা অর্জন প্রসঙ্গে কাইয়ূম চৌধুরী জানান, নির্বাচনী প্রচারণায় নেমে তিনি দলীয় কার্যালয় স্থাপন, ইউনিয়ন থেকে শুরু করে জেলা পর্যন্ত সকল পর্যায়ের নেতা-কর্মীর ডাটাবেস ও ওয়েবসাইট তৈরি এবং রাজনৈতিক মামলায় জর্জরিত অসচ্ছল নেতা-কর্মীদের আইনি সহায়তা দেওয়ার জন্য একটি সেল গঠনের প্রতিশ্রুতি দেন।

পাশাপাশি ইলিয়াস আলীকে অক্ষত অবস্থায় ফেরত পাওয়ার দাবিতে জোরালো কর্মসূচি ও সিলেটের উন্নয়নে সাইফুর রহমানের অবদানের কথা সাধারণ মানুষের কাছে পুনরায় পৌঁছে দেওয়ার ব্যাপারে উদ্যোগ নেওয়ার কথা দেন। কাইয়ূম বলেন, তাঁর এ প্রতিশ্রুতিতে নেতা-কর্মীরা মনে করেছেন তাঁকে দিয়েই দলীয় কার্যক্রম গতিশীল, আধুনিকায়ন ও দলকে সাধারণ মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছানো যাবে। এ ছাড়া খালেদা জিয়ার মুক্তি ও তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনার আন্দোলনের নেতৃত্বে তাঁকে যোগ্য মনে করায় দলীয় নেতা-কর্মীরা তাঁর প্রতি আস্থা রেখেছেন। দায়িত্ব নেওয়ার পর দলের মধ্যে ঐক্য স্থাপন করে সবাইকে একই ছাতার নিচে নিয়ে আসাই হবে তাঁর প্রথম ও প্রধান কাজ- এমনটা জানান কাইয়ূম চৌধুরী।

সাধারণ সম্পাদক পদে সদ্য সাবেক কমিটির সাধারণ সম্পাদক আলী আহমদকে পরাজিত করে বিজয়ী হন সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক এমরান আহমদ চৌধুরী। নিজের বিজয় প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ছাত্ররাজনীতি থেকে শুরু করে বিএনপি পর্যন্ত দলের সব দুঃসময়ে তিনি রাজপথে ছিলেন। নেতা-কর্মীরা সব সময় তাঁকে পাশে পেয়েছেন। তাই তৃণমূল নেতা-কর্মীরা মনে করেছেন তাঁকে নির্বাচিত করলে তাঁদের সহযাত্রী হিসেবেই কাছে পাবেন। এজন্য তৃণমূলের আস্থা তাঁর পক্ষেই ছিল। এখন ইলিয়াস আলীকে অক্ষত অবস্থায় ফিরে পাওয়া এবং খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি ও তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনার আন্দোলনই তাঁর কাছে মুখ্য বলে জানান এমরান। তবে এজন্য সবার আগে দলের মধ্যকার বিভেদ মুছে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করার পরিকল্পনার কথা জানান তিনি।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর