বৃহস্পতিবার, ৩১ মার্চ, ২০২২ ০০:০০ টা

সুপ্রিম কোর্টের নতুন ১২ তলা ভবনের উদ্বোধন আজ

আরাফাত মুন্না

সুপ্রিম কোর্টের নতুন ১২ তলা ভবনের উদ্বোধন আজ

দেশের সর্বোচ্চ আদালতে আজ উদ্বোধন হচ্ছে নতুন ১২ তলা ভবন -বাংলাদেশ প্রতিদিন

দেশের সর্বোচ্চ আদালতে আজ উদ্বোধন হচ্ছে নতুন ১২ তলা ভবন। নতুন এ ভবনে বিচারপতিদের জন্য ৫৬টি চেম্বার ও ৩২টি এজলাস (আদালত কক্ষ) রয়েছে। এজলাস সংকট দূর করার পাশাপাশি সুপ্রিম কোর্টকে আধুনিক ও নান্দনিক করতে এই ১২ তলা ভবন নির্মাণে উদ্যোগ নিয়েছিল সরকার। নতুন ভবন নির্মাণ বিচারপ্রার্থী ও বিচার বিভাগের জন্য সুখবর বলে মনে করছেন আইনজীবীরা। তারা বলেন, এখন নতুন বিচারক নিয়োগ দিয়ে আদালত সংখ্যা বাড়ানো যাবে। এতে কমবে মামলাজট। জানা গেছে, নতুন এ ভবন উদ্বোধনের পর পরই হাই কোর্ট বিভাগে আরও বিচারপতি নিয়োগ দেওয়া হবে। আজ সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হয়ে ‘বিজয়-৭১’ নামের নতুন এ ১২ তলা ভবন উদ্বোধন করবেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়কমন্ত্রী আনিসুল হক। প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, হাই কোর্ট ও আপিল বিভাগ নিয়ে পরিচালিত হচ্ছে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট। এর মধ্যে হাই কোর্টে নিম্ন আদালত থেকে আসা মামলার সংখ্যা বেড়ে যাওয়া এবং সংশ্লিষ্ট অফিসগুলোতে পর্যাপ্ত স্থান না থাকায় প্রয়োজনীয় কাগজপত্র স্তূপ করে রাখা হয়। এতে পড়তে হয় নানা সমস্যায়। বিচারপতিদের জন্য পর্যাপ্ত চেম্বার না থাকায় দাফতরিক কাজও ব্যাহত হচ্ছে। এসব সংকট কাটাতে নতুন এই ১২ তলা ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। সুপ্রিম কোর্ট সূত্র জানায়, সুপ্রিম কোর্টের এনেক্স এক্সটেনশন (বর্ধিত) ভবন নির্মাণে বরাদ্দ দেওয়া হয় ১৫৮ কোটি ৪ লাখ ২২ হাজার টাকা। যার পুরোটাই বহন করছে সরকার। এনেক্স ভবনের পশ্চিম পাশে ১৮ হাজার ১৩৪ বর্গমিটার জায়গায় নির্মিত হচ্ছে এ ভবন। এতে বিচারপতিদের চেম্বার ও এজলাস ছাড়াও ২০টি অফিসকক্ষ এবং সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসনের দাফতরিক কক্ষ রয়েছে। ভবনটিতে রয়েছে দুটি লিফট, আধুনিক জেনারেটর ও বিদ্যুতের সাব-স্টেশন। ২০১৮ সালে শুরু হয় প্রকল্পটির কার্যক্রম। ওই বছরের ৮ মার্চ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে একনেক সভায় অনুমোদন মেলে প্রকল্পের। ২০১৯ সালের মার্চ থেকে শুরু হয় নির্মাণকাজ। মূল কাজ শেষ হয় ২০২১ সালের ৩০ ডিসেম্বর। আইন ও বিচার বিভাগ এবং গণপূর্ত অধিদফতর প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করে। তখন বলা হয়েছিল, ২০২০ সালের মধ্যে শেষ হবে প্রকল্পের কাজ। কিন্তু মহামারির কারণে কাজ পিছিয়ে পড়ে। সবশেষ গত বছর শেষ হয় ভবন নির্মাণ। নতুন ভবনের বিষয়ে জানতে চাইলে অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, বিচারপ্রার্থীদের জন্য দ্রুত ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা প্রতিটি রাষ্ট্রের দায়িত্ব। আমাদের দেশে কিন্তু মামলার স্তূপ জমে গেছে। আদালত সংকট রয়েছে। বিচারক সংকট রয়েছে। তিনি বলেন, বিচারক সংকট দূর করতে হলে নতুন আদালতও প্রয়োজন। বর্তমান সরকার সে বিষয়টি অনুধাবন করেই সুপ্রিম কোর্টে নতুন এ ভবন নির্মাণ করে দিয়েছে। বিচারপ্রার্থীরা সরাসরি এর উপকারভোগী হবেন। এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ব্যারিস্টার এ বি এম আলতাফ হোসেন বলেন, এজলাস না থাকলে প্রয়োজন হলেও বিচারক নিয়োগ দেওয়া সম্ভব নয়। এখন এজলাস হয়েছে, প্রয়োজন অনুযায়ী বিচারক নিয়োগ দিয়ে মামলাজট কমানোর উদ্যোগ নেওয়া যাবে। নতুন এ ভবন মামলাজট নিরসনের উদ্যোগ বলেই মনে করছি।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর