শুক্রবার, ১ এপ্রিল, ২০২২ ০০:০০ টা

চিকিৎসাসেবায় নতুন দুয়ার রাজশাহীতে

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী

উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলের রোগীদের চিকিৎসায় ভরসা রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতাল। এবার এ নগরীতে গড়ে উঠছে দীর্ঘমেয়াদি জটিল রোগের চিকিৎসায় একাধিক বিশেষায়িত হাসপাতাল। সরকারিভাবে বরাদ্দ পাওয়ায় অধিকাংশ হাসপাতালের কাজ শেষ পর্যায়ে। দক্ষ জনবল নিয়োগ করে হাসপাতালগুলো চালু হলে চিকিৎসায় কমবে বিদেশনির্ভরতা।

স্বাস্থ্য দফতর জানায়, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আওতায় ১৫০ শয্যা করে ক্যান্সার, কিডনি ও হৃদরোগ ইউনিট, ২০০ শয্যার সদর হাসপাতাল চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে ক্যান্সার, কিডনি ও হৃদরোগ ইউনিট নির্মাণের ভবন নির্মাণকাজ শুরু হয়েছে। আলাদাভাবে গড়ে উঠছে ২৫০ শয্যার শিশু হাসপাতাল। হাসপাতালটির বহুতল ভবন নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে। চলছে শেষ মহূর্তের কাজ। ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনের সহায়তায় ১৩০ শয্যার হৃদরোগ হাসপাতালের বহুতল ভবন নির্মাণকাজ চলছে। এ ছাড়া ৫০ শয্যার ডায়াবেটিক হাসপাতাল চালু হয়েছে। রাজশাহী শাখা ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক হবিবুর রহমান বলেন, আপাতত তারা ১৩০ শয্যা করলেও ১০ তলা ভবনটির নির্মাণকাজ শেষ হলে ২৫০ শয্যা করা হবে। এখানে হার্টে রিং পরানোর ব্যবস্থা থাকছে। এ ছাড়া হার্টের সব ধরনের চিকিৎসায় থাকছে বিশেষ সুবিধা। রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী বলেন, ক্যান্সার, কিডনি ও হৃদরোগ নিয়ে মানুষ প্রতিনিয়ত হয়রানির শিকার হচ্ছেন। রাজশাহী মেডিকেল কলেজের আওতায় আলাদা তিনটি ইউনিট গড়ে তুলছে সরকার। যা চিকিৎসা ব্যবস্থায় ব্যাপক পরিবর্তন নিয়ে আসবে। বিশেষায়িত হওয়ায় সেবার মান বাড়বে, মানুষের ভোগান্তিও কমবে। জনপ্রতিনিধিরা বলছেন, উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চল থেকে প্রতিদিনই বিপুল পরিমাণ মানুষ চিকিৎসা নিতে ভারত যান। পূর্ণাঙ্গভাবে এ হাসপাতালগুলো চালু করা গেলে বিদেশনির্ভরতা কমবে। রাজশাহী-২ আসনের এমপি ও রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ফজলে হোসেন বাদশা বলেন, মানবিক ও ইতিবাচকভাবে হাসপাতালগুলো চালু করা গেলে, যেসব মানুষ চিকিৎসা নিতে বিদেশে যান, সেটির আর প্রয়োজন পড়বে না। রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, ‘এ হাসপাতালগুলো চালু করা গেলে, প্রতিদিন ভারতে যে পরিমাণ মানুষ চিকিৎসা নিতে যাচ্ছে, তারা হয়তো আর যাবে না। এতে করে অনেক অর্থও বেচে যাবে।’  তবে চিকিৎসক নেতারা বলছেন, স্বাস্থ্য খাত এখনো বিশৃঙ্খল। এটি ঠিক করতে হবে। পাশাপাশি দক্ষ জনবল না বাড়ালে অবকাঠামো গড়ে চিকিৎসা নিশ্চিত করা দুরূহ। রাজশাহী স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক ডা. চিন্ময় কান্তি বলেন, স্বাস্থ্য খাতের যে অবস্থা, তাতে কেবল ভবন বানালেই হবে না। চিকিৎসা ব্যবস্থাকে শৃঙ্খলার মধ্যে নিয়ে আসতে হবে।

আর বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন রাজশাহীর সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ডা. নওশাদ আলী বলেন, দক্ষ জনবল নিয়োগ করা না গেলে এসব হাসপাতাল কাজে আসবে না। নিশ্চয় সরকারের পরিকল্পনায় সেটি আছে। তবে এগুলো চালু হলে চিকিৎসা ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন আসবে। জটিল ও দীর্ঘমেয়াদি কিছু রোগের চিকিৎসাসেবা মানুষের কাছে সহজলভ্য হবে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর