রবিবার, ১০ এপ্রিল, ২০২২ ০০:০০ টা

ছেলেরা নিজের মাকে মেরে তাড়িয়ে দিল!

নিজস্ব প্রতিবেদক, বগুড়া

মা গুলজান বেওয়াকে (৮০) মারপিট করে বাড়ি থেকে বের করে দেয় ছেলেরা। এরপর গত শুক্রবার রাতে তাকে বগুড়া শহরের কলোনি তাজমা সিরামিক ফ্যাক্টরির সামনে দেখতে পেয়ে সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা সমর কুমার পালকে খবর দেন এক ব্যক্তি। নির্বাহী কর্মকর্তা তখন নির্যাতিত মাকে নিজ গাড়িতে করে নিয়ে যান এবং তার আশ্রয়ের ব্যবস্থা করে দেন।

ছেলেদের পৈশাচিকতার শিকার মা গুলজান বগুড়ার গাবতলী উপজেলার সুখান পুকুর এলাকার তিওরগ্রামের বাসিন্দা। গত শুক্রবার রাত ১১টায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, মা গুলজান কলোনি তাজমা সিরামিকের সামনে যাত্রী ছাউনিতে বসে আছেন। সঙ্গে একটি ব্যাগ। তাতে কিছু জিনিসপত্র। শরীরে নির্যাতনের চিহ্ন। তার চারপাশে লোকজনের ভিড়। বগুড়া সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা সমর পাল এ সময় কথা বলছিলেন তার সঙ্গে।

গুলজান জানান, তার স্বামী মারা গেছেন অনেক আগে। তিন ছেলে হযরত আলী, হোসেন আলী, মোহাম্মদ আলী ও এক মেয়ের বিয়ে হয়েছে। বাড়িতে ছেলেরা তাকে ঠিকভাবে খেতে দেয় না, যত্ন করে না। তাই বেঁচে থাকার তাগিদে নানা জায়গায় গুলজান ভিক্ষা করেন। ভিক্ষা করে পাওয়া চাল ও টাকা দিয়েই জীবিকা নির্বাহ করেন। কিন্তু ছেলেরা তারপরেও তাকে মারপিট করেছে। শরীরে এর চিহ্ন রয়েছে। গুলজান জানান, তাকে দুই দিন আগে মেরে বাড়ি থেকে বের করে দেয় ছেলেরা।

গুলজান বাড়ি ফিরতে চান কি না- এমন প্রশ্নে কান্না জড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, ‘না। ছেলেদের ভয় লাগে।’ এ বিষয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সমর কুমার পাল উল্লেখ করেন, রাত ১০টার পর একজন তাকে ফোন করে জানান যে, এক বৃদ্ধ মা তাজমা সিরামিকের সামনে যাত্রী ছাউনিতে বসে আছেন। তার ছেলেরা নাকি তাকে মেরে বের করে দিয়েছে। এমন খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে তিনি ছুটে এসেছেন ঘটনাস্থলে। এসে তিনি মায়ের সঙ্গে কথা বলেন। নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, কথা বলে ঘটনার বিস্তারিত জানতে পারি। আমি তাকে সদর উপজেলায় নিয়ে যাচ্ছি। তার খাবার ও থাকাসহ যতেœর ব্যবস্থা করা হবে।’

এরপর শুক্রবার রাতেই গুলজানকে বগুড়া সরকারি শিশু পরিবার কেন্দ্রে প্রেরণ করা হয়েছে। নির্বাহী কর্মকর্তা জানান, তার জন্য যথাযথ সব ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তিনি আরও জানান, গুলজানের সার্বিক তত্ত্বাবধান তিনিই করবেন।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর