সোমবার, ১১ এপ্রিল, ২০২২ ০০:০০ টা

বগুড়ায় অবাধে পলিথিন উৎপাদন ও বাজারজাত

আবদুর রহমান টুলু, বগুড়া

বগুড়ায় অবাধে পলিথিন উৎপাদন ও বাজারজাত

বগুড়ায় অবাধে উৎপাদন ও বাজারজাত হচ্ছে নিষিদ্ধ পলিথিন ও ওয়ানটাইম প্লেট। প্রশাসনের নাকের ডগায় যত্রতত্র পরিবেশবিধ্বংসী পলিথিন ব্যবহার হচ্ছে। হাটবাজার, ওষুধের দোকান, শপিং মল, হোটেল-রেস্টুরেন্ট থেকে শুরু করে সবখানেই অবাধে পলিথিন ব্যাগ ব্যবহার চলছে। বগুড়ায় শতাধিক পলিথিন কারখানা রয়েছে। উৎপাদন ও বাজারজাত বন্ধে স্থায়ী কোনো পদক্ষেপ নেই। জানা যায়, বগুড়া শহর ও শহরতলির বিভিন্ন এলাকায় কিছুটা আড়াল করে পলিথিন কারখানা খোলা হয়েছে। শতাধিক কারখানায় রাতদিন তৈরি হচ্ছে পলিথিনের বিভিন্ন সামগ্রী। কারখানা থেকে উৎপাদিত পলিথিন বগুড়া শহরের প্রায় সব ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে ব্যবহার হচ্ছে। একশ্রেণির কারখানা মালিক প্লাস্টিকের বস্তাও তৈরি করছে। বগুড়া প্রেসপট্টি ও বিভিন্ন মার্কেটে পলিথিন ছাপিয়ে নানা ধরনের মোড়ক তৈরি করা হচ্ছে।

পরিবেশ অধিদফতর রাজশাহী বিভাগীয় কার্যালয় বগুড়া সূত্রে জানা গেছে, পলিথিন উৎপাদন ও বাজারজাতে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও মানা হচ্ছে না বগুড়ায়। সূত্র জানান, বগুড়ায় পলিথিন উৎপাদন ও বাজারজাতকরণের কোনো অনুমোদিত কারখানা নেই। অথচ বেশ কয়েকটি কারখানায় পলিথিন উৎপাদন হচ্ছে। এসব কারখানার মালিক স্থানীয় প্রশাসন, পরিবেশ অধিদফতর ও বিভিন্ন সংস্থাকে ম্যানেজ করে দীর্ঘদিন ধরে পলিথিন উৎপাদন করে দেশের বিভিন্ন জেলায় বাজারজাত করছেন। পরিবেশ অধিদফতর বিভিন্ন সময় অভিযান চালিয়ে জরিমানা আদায় ও পলিথিন জব্দ করলেও অনেক কারখানা জরিমানা পরিশোধ করে আগের মতোই উৎপাদন ও বাজারজাতের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। এ ছাড়া অবৈধভাবে ওয়ানটাইম প্লেট, গ্লাস ও বাটি উৎপাদন ও বাজারজাত চলছে বগুড়া জেলায়। উৎপাদন সহজ ও সস্তায় পাওয়া যায় বলে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ওয়ানটাইম প্লেট ব্যবহার দিন দিন বেড়েই চলেছে। অভিযোগ, জেলার আদমদীঘির সান্তাহারের বিআইআরএস প্লাস্টিক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড নামে ওয়ানটাইম প্লেট ও গ্লাস তৈরির ফ্যাক্টরিতে পরিবেশ ও বিএস?টিআইর ছাড়পত্র ছাড়াই পণ্য উৎপাদন করা হচ্ছে। শুধু তাই নয়, সেখানে মানা হয়নি ফায়ার সার্ভিসের নীতিমালা এবং কাজ করানো হয় কিশোর শ্রমিকদের দিয়ে। আর এ কারখানায় নানা অব্যবস্থাপনার কারণেই সেখানে অগ্নিকান্ডে ১৪ ডিসেম্বর দুই কিশোর শ্রমিকসহ পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। এর পরও অনুমোদনহীন কারখানাটি চালু করা হয়েছে।

কারখানার ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সান্তাহার পৌরসভার মেয়র তোফাজ্জল হোসেন ভুট্টু ফ্যাক্টরির ছাড়পত্র আছে বলে দাবি করেন। উৎপাদনের ছাড়পত্র আছে কি না জানতে চাইলে বলেন, ‘আমরা টাকা জমা দিতে গিয়েছিলাম। কিন্তু পরিবেশ অধিদফতর নেয়নি।’ পরিবেশ অধিদফতর বগুড়ার পরিচালক সুফিয়া নাজিম জানান, বিআইআরএস প্লাস্টিক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড কর্তৃপক্ষ পরিবেশ ছাড়পত্র না নিয়ে শুধু একটি অবস্থানগত ছাড়পত্র নিয়েছিলেন। যাতে সেখানে কারখানা করা যায়। কিন্তু তারা সেখানে কোনো পণ্য উৎপাদনের ছাড়পত্র নেননি। এ ছাড়া বাংলাদেশ পরিবেশ আইনজীবী সমিতির আবেদনের পর উচ্চ আদালত কারখানাগুলোয় ওয়ানটাইম প্লেট উৎপাদন বন্ধ করার আদেশ দিয়েছিল। কিন্তু উৎপাদন বন্ধ করেনি ওই কারখানা। বিএসটিআই বগুড়া অফিসের পরিদর্শনকারী কর্মকর্তা (সিএম) প্রকৌশলী জুনায়েদ আহমেদ বলেন, ‘ওয়ানটাইম প্লেট ও গ্লাস স্বাস্থ্যসম্মত নয়। তাই আমরা তাদের লাইসেন্স দিইনি।’

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর