মঙ্গলবার, ১২ এপ্রিল, ২০২২ ০০:০০ টা

মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ পাওয়া আরও দুই শিক্ষার্থীর দায়িত্ব নিল বসুন্ধরা গ্রুপ

প্রতিদিন ডেস্ক

সরকারি মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পাওয়া হতদরিদ্র পরিবারের আরও দুই শিক্ষার্থীর লেখাপড়ার খরচের সম্পূর্ণ দায়িত্ব নিয়েছে দেশের শীর্ষ শিল্পপরিবার বসুন্ধরা গ্রুপ। দুই শিক্ষার্থী হলেন চাঁদপুর সরকারি মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পাওয়া নাটোর সদরের ছাতনী ভাটপাড়া গ্রামের ইটভাটা শ্রমিক আনসার আলীর ছেলে রাকিব হোসেন ও খুলনা মেডিকেল কলেজে সুযোগ পাওয়া কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার চকলক্ষ্মীপুর গ্রামের শাহাদাত হোসেনের ছেলে তাজগীর হোসেন। দারিদ্রতার কারণে লেখাপড়া অনিশ্চিতের বিষয়টি জেনে বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপের পরিচালক কথাসাহিত্যিক ইমদাদুল হক মিলনকে তাদের সহযোগিতা করার কথা জানান। এরআগে রাজশাহী মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পাওয়া বরিশালের বানারীপাড়া পৌর শহরের রিকশাচালক মিজানুর রহমানের মেয়ে সাদিয়া আফরিন হারিছার লেখাপড়ার সম্পূর্ণ দায়িত্ব নিয়েছে বসুন্ধরা গ্রুপ। পাশাপাশি হারিছার আরও তিন বোনের লেখাপড়ার খরচও বহন করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে শিল্পপরিবারটি। এই তিন অধম্য দরিদ্র মেধাবী শিক্ষার্থীর মেডিকেল কলেজে ভর্তি থেকে শুরু করে পাঁচ বছরের এমবিবিএস কোর্সের যাবতীয় খরচ বহন করবে বসুন্ধরা। এতে খুশি তাদের পারিবার ও সংশ্লিষ্ট কলেজের শিক্ষকরা। প্রতিনিধিদের পাঠানো তথ্য-

নাটোর : চাঁদপুর সরকারি মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পাওয়া নাটোর সদরের ছাতনী ভাটপাড়া গ্রামের ইটভাটা শ্রমিক আনসার আলীর ছেলে রাকিব হোসেনের লেখাপড়ার সম্পূর্ণ দায়িত্ব নিয়েছে দেশের শীর্ষ শিল্পপরিবার বসুন্ধরা গ্রুপ। স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রায় পাঁচ বছর আগে সড়ক দুর্ঘটনায় আনছার আলীর মেরুদে র হাড় ভেঙে যাওয়ায় তিনি পরিশ্রমের কাজ করতে পারেন না। সন্তানের ভবিষ্যৎ চিন্তা করে ২০০ টাকা হাজিরায় ইটভাটায় কাজ করেন। রাকিব মাধ্যমিকের পর উচ্চমাধ্যমিকেও গোল্ডেন জিপিএ-৫ পাওয়ায় এলাকাবাসী আশা করেছিল ভালো কিছু করবে। সবার আশা পূরণ করে এবার সে চাঁদপুর মেডিকেল কলেজে এমবিবিএসে ভর্তির সুযোগ পেয়েছে। এনিয়ে এলাকার মানুষ খুশি হলেও হতাশায় পড়েছিলেন রাকিবের বাবা আনসার আলী ও মা আজেদা বেগম। রাকিবের বাবা আনছার আলী বলেন, আল্লাহ বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যানের ভালো করবেন নিশ্চয়ই। আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করি বসুন্ধরা গ্রুপ যেন আরও ভালো কাজ করতে পারে।  কুমিল্লা : ভ্যানে গাছের চারা বিক্রি করে মেডিকেলে পড়ার সুযোগ পাওয়া কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার চকলক্ষ্মীপুর গ্রামের শাহাদাত হোসেনের ছেলে তাজগীর হোসেনের পড়াশোনার দায়িত্ব নিয়েছে দেশের শীর্ষ শিল্পগোষ্ঠী বসুন্ধরা গ্রুপ। ২০১৭ সালের মার্চে মা তাছলিমা বেগমের মৃত্যু হয়। মায়ের শেষ ইচ্ছে পূরণে ক্লাসের ফাঁকে আর ছুটির দিনে ভ্যানে গাছের চারা বিক্রি করে মাধ্যমিকের খরচ বহন করেছেন তিনি। উচ্চমাধ্যমিকে খরচ বেড়ে যাওয়ায় পাশাপাশি শুরু করেন সকাল-বিকাল টিউশনি। গত ১ এপ্রিল মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেন তাজগীর। জাতীয় মেধাতালিকায় ২৫৯৫ তম হয়ে তাজগীর খুলনা মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পান। তাজগীর হোসেন বলেন, বসুন্ধরা গ্রুপ আমার পড়াশোনার দায়িত্ব নিয়েছে, এ খবর আমার জন্য অনেক আনন্দের। মায়ের স্বপ্ন পূরণে এগিয়ে আসায় বসুন্ধরার প্রতি অনেক কৃতজ্ঞতা। আমি মানবিক ডাক্তার হয়ে দেশ ও মানুষের সেবা করতে চাই।

সর্বশেষ খবর