সোমবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২২ ০০:০০ টা

চিকিৎসক হিসেবে আত্মগোপনে ছিলেন ফাঁসির দন্ডপ্রাপ্ত জেএমবি নেতা

নিজস্ব প্রতিবেদক

হোমিও চিকিৎসকের আড়ালে জঙ্গি তৎপরতায় সক্রিয় ছিলেন সানোয়ার হোসেন (৪৪)। এক পর্যায়ে হয়ে উঠেন নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন জামায়াতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশের (জেএমবি) ইসাবা গ্রুপের (সামরিক শাখা) সক্রিয় সদস্য। আত্মগোপনে থেকেই চালিয়ে যাচ্ছিলেন সাংগঠনিক কার্যক্রম। ২০১২ সালে আরেক জঙ্গি সালমান হত্যা মামলায় মৃত্যুদন্ডের সাজাপ্রাপ্ত হন। আত্মগোপনে থেকেও শেষ রক্ষা হয়নি। অ্যান্টি টেরোরিজম ইউনিট (এটিইউ)’র একটি দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শনিবার বিশেষ অভিযান চালিয়ে নওগাঁর পত্নীতলা থানার নজিপুর এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে। এটিইউর পুলিশ সুপার (মিডিয়া) মোহাম্মদ আসলাম খান বলেন, গ্রেফতার সানোয়ার চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল উপজেলার মল্লিকপুর এলাকার চাঁদপাড়ার মৃত এরশাদ আলীর ছেলে। আমরা তাকে খুঁজছিলাম।

 সানোয়ার চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার নাচোল থানায় ২০১২ সালের ২৬ এপ্রিল দায়ের হওয়া ১৬ নম্বর মামলার মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি।

তিনি আরও বলেন, আমাদের কাছে হঠাৎ খবর আসে সানোয়ার নওগাঁর পত্নীতলা থানার ছোট চাঁদপুর এলাকায় আবদুল্লাহ নামে আত্মগোপন করে আছেন। সেখানে তিনি রাজমিস্ত্রি হিসেবে কাজ করেন। পাশাপাশি ভেড়া লালন-পালন করেন। পরে শুরু হয় তথ্যের যাচাই-বাছাই। এক পর্যায়ে সবকিছু নিশ্চিত হয়েই তাকে গ্রেফতার করা হয়। সানোয়ার ১০ বছর ধরে চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও নওগাঁর বিভিন্ন এলাকায় আত্মগোপনে থেকে পুরাতন জেএমবিকে সক্রিয় করার চেষ্টা চালাচ্ছিলেন। তার বিরুদ্ধে চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল থানায় সন্ত্রাস বিরোধী আইনে দুটি গ্রেফতারি পরোয়ানা আছে। তাছাড়া গোমস্তাপুর থানার একটি মামলায় অভিযুক্ত তিনি।

এটিইউ সূত্র বলছে, সানোয়ার ২০০০ সালের পরে শায়খ আবদুর রহমানের নেতৃত্বে জেএমবির সদস্যভুক্ত হন। তখন তিনি হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক হিসেবে নাচোল ও গোমস্তাপুরে জেএমবির প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০০৭ সালে ২৯ মার্চ শায়খ আবদুর রহমানের কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারে ফাঁসির কিছু দিন পর মাওলানা সাইদুর রহমান জেএমবির আমির হন। পরবর্তীতে তারা তাদের কার্যক্রম অব্যাহত রাখেন। তাদের অন্তঃকোন্দলের কারণে ২০১২ সালের ২৬ এপ্রিল জেএমবির স্বঘোষিত আমির সালমানকে চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল থানার খুলশী বোড়িয়া আমবাগান এলাকায় কৌশলে ডেকে নিয়ে হত্যা করেন। তার মাথা ও দেহ দুই জায়গায় ফেলে দেন। পরবর্তীতে গ্রেফতার আ. শাকুর ও জাহাঙ্গীরের দেওয়া তথ্য মতে, মহানন্দা নদীর তীর থেকে পুঁতে রাখা সালমানের মাথাটি উদ্ধার করা হয়।

প্রসঙ্গত, গত ২০১৯ সালের ২৫ নভেম্বর চাঁপাইনবাবগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত সালমান হত্যা মামলায় গ্রেফতার সানোয়ারসহ তিনজনের মৃত্যুদন্ড প্রদান করেন।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর