শনিবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২২ ০০:০০ টা

মসজিদের ইমাম পরিবর্তন নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষে আহত ১৫

নিজস্ব প্রতিবেদক, বগুড়া

মসজিদের ইমাম পরিবর্তন করা নিয়ে বগুড়ার শেরপুরে দুই পক্ষের মধ্যে তুমুল সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয়পক্ষের অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন। গতকাল বেলা ১টার দিকে জুমার নামাজের সময় উপজেলার কুসুম্বী ইউনিয়নের দারগ্রাম জামে মসজিদে এ ঘটনা ঘটে। আহতদের মধ্যে গুরুতর দুজনকে স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। তারা হলেন- দারগ্রামের মফিজ উদ্দিনের ছেলে সাইদুল ইসলাম ও মজিবর রহমানের ছেলে আবদুল হান্নান। এদিকে এ ঘটনার পর থেকে ওই এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। যে কোনো সময় আবারও ভয়াবহ রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কা করা হচ্ছে। তবে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সাচ্চু বিশ্বাসের নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে অবস্থান নিয়েছে বলে জানা গেছে। মসজিদ পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক সৈকত হোসেন ও সদস্য ফারুক হোসেন বলেন, কিছুদিন ধরেই দারুগ্রাম জামে মসজিদের স্থানীয় বাসিন্দা মাওলানা আবদুল করিম ইমাম হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন।

প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্তসহ জুমার নামাজ পড়ান তিনি। কিন্তু তারাবির নামাজের জন্য নতুন ইমাম নিয়োগ দেওয়ার দাবি তোলেন মসজিদের মুসল্লিরা। একপর্যায়ে মুসল্লিদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে তারাবির নামাজের জন্য ইমাম নিয়োগ দেওয়া হয়। আর এ ইমাম নিয়োগ দেওয়া নিয়ে দারুগ্রামের মানুষ দুভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েন। এমনকি আগের ইমাম আবদুল করিমকে মসজিদের ইমামতি থেকে বাদ দেওয়ার নির্দেশ দেন। কিন্তু আরেক পক্ষ (করিম হুজুরের সমর্থকরা) তার প্রতিবাদ করেন। ফলে দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধ চরম আকার ধারণ করে। উভয়পক্ষের বিরোধ নিষ্পত্তি করতে জুমার নামাজের পর সমঝোতা বৈঠক ডাকা হয়েছিল। কিন্তু নামাজের জন্য মসজিদে এসেই দুই পক্ষের লোকজন সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সাইদুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, মসজিদের ইমাম আবদুল করিম নামাজের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। ঠিক সেই মুহূর্তে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ফেরদৌস, জামিল ও আরিফ তাদের লোকজন নিয়ে করিম হুজুরকে মারার জন্য এগিয়ে যায়। এ সময় তিনিসহ উপস্থিত মসজিদের মুসল্লিরা তাদের বাধা দিলে আমাদের বেধড়ক পেটায়। এতে আমিসহ অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন।

অপরদিকে বক্তব্য জানতে চাইলে অভিযুক্ত জামিল আহম্মেদ মুসল্লিদের ওপর হামলার কথা অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, ইমাম পরিবর্তন করার জন্য একাধিকবার বলার পরও সেটি মানা হয়নি। জুমার নামাজের সময় সেই কথাটি আবারও বলা হয়। কিন্তু সাইদুলসহ কতিপয় ব্যক্তি বিষয়টি নিয়ে বাকবিতন্ডায় জড়িয়ে পড়েন। একপর্যায়ে তাদের সঙ্গে হাতাহাতি ও ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটেছে। এতে তাদের চার থেকে পাঁচজন লোক আহত হয়েছে।

শেরপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সাচ্চু বিশ্বাস ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, সংঘর্ষের পরপর থেকেই ঘটনাস্থলে অবস্থান করছি। বর্তমানে পরিস্থিত স্বাভাবিক রয়েছে। এ ছাড়া এখনো কোনো পক্ষই থানায় লিখিত অভিযোগ দেননি। অভিযোগ পেলে তদন্তপূর্বক দোষীদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর