শনিবার, ৭ মে, ২০২২ ০০:০০ টা

পদ্মায় রাস্তা তীরে অবৈধ স্থাপনা

দখলদারদের উচ্ছেদ করতে পারছে না প্রশাসন

কাজী শাহেদ, রাজশাহী

দেখে মনে হতে পারে এক গ্রাম থেকে অন্য গ্রামে যাওয়ার পথ। পথ ঠিকই, তবে গ্রাম থেকে গ্রামে যাওয়ার নয়, এটি পদ্মা নদীর পাড় থেকে মাঝ নদী যেতে এভাবে রাস্তা বানানো হয়েছে। এতে বন্ধ হয়ে গেছে পানির স্বাভাবিক চলাচল। এমন একাধিক রাস্তা তৈরি হয়েছে পদ্মার বুকে। রাজশাহীতে পদ্মা নদী নানাভাবে দখল করেছে ৬২৫ জন অবৈধ দখলদার। তৈরি করেছে নানা ধরনের স্থাপনা। নদীর বুকে তৈরি করা হয়েছে চলাচলের পথ। ফলে নদীর নাব্য হারিয়ে গতিপথ পরিবর্তন হয়ে যেতে পারে। ঝুঁকি তৈরি হচ্ছে নদী তীরবর্তী এলাকায়। শুধু তাই নয়, রাজশাহীতে পদ্মা নদীর পাড় দখল করে গড়ে উঠছে অবৈধ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। বিশেষ করে সিটি করপোরেশনের তৈরি করা বিনোদন কেন্দ্রের পাশে এ ধরনের প্রতিষ্ঠান গড়ার হিড়িক পড়েছে। পদ্মার পাড়ে এ রকম শতাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও পারিবারিক স্থাপনা গড়ে উঠেছে। এ ব্যাপারে কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় নদী দখলের প্রবণতা বাড়ছে। অথচ বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিআইএ) নিয়ম অনুযায়ী নদীতীর থেকে ১৫০ মিটারের মধ্যে কেউ কোনো স্থাপনা নির্মাণ করতে পারবে না।  জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন রাজশাহী জেলা কমিটির সদস্য জামাত খান বলেন, ‘পদ্মা নদীকে বলা হয় রাজশাহীর প্রাণ। এই প্রাণ দিন দিন আমরা ধ্বংস করে দিচ্ছি। জেলা কমিটির সভায় এ নিয়ে আমরা কথা বলি। প্রশাসনের চেয়েও দখলদাররা শক্তিশালী। রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় চলছে এই দখল। পদ্মা নদীতে চলাচলের জন্য রাস্তা করা হয়েছে। এটি কতটা ধ্বংসাত্মক কাজ, সেটি বন্যার সময় টের পাওয়া যাবে। প্রাকৃতিক প্রবাহ এভাবে রোধ করা ঠিক হয়নি।’ পদ্মা নদীর পাড় দখল করে আছে, এমন দখলদারদের চিহ্নিত করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। দখলদারের তালিকা তুলে দেওয়া হয়েছে জেলা প্রশাসকের কাছে। অথচ একটি স্থাপনাও উচ্ছেদ হয়নি। বরং দিন দিন দখল বাড়ছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রধান প্রকৌশলী জহিরুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা তালিকা জেলা প্রশাসনকে দিয়েছি। তারা ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে সহযোগিতা না করলে আমরা উচ্ছেদ করব কীভাবে। তারা যখন সহযোগিতা করবে, তখন উচ্ছেদ করা সম্ভব হবে। আমাদের নির্বাহী প্রকৌশলীরা জেলা প্রশাসকের দফতরে হওয়া সভাগুলোতে এ নিয়ে নিয়মিত কথা বলছেন।

জেলা প্রশাসক আবদুল জলিল বলেন, দখলদারদের উচ্ছেদে তারা নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছেন। উচ্চ আদালতের একটি আদেশের কারণে সেটি আপাতত বন্ধ আছে। নদী দখল ও দূষণ বন্ধে শিগগিরই অভিযান পরিচালনার কথা জানিয়েছেন তিনি।

সর্বশেষ খবর