বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলার খেজুরবাড়িয়া গ্রামে বৃহস্পতিবার রাতে আবারও হানা দেয় সুন্দরবনের রয়েল বেঙ্গল টাইগার। ভোলা নদী ভরাট হয়ে যাওয়ায় সুন্দরবন সংলগ্ন এই লোকালয়ে মাঝেমধ্যেই ঢুকে পড়ছে বাঘ। ফলে এই চার গ্রামের মানুষ আছেন চরম আতঙ্কে। বনরক্ষীদের একটি দল গ্রামবাসীকে সঙ্গে নিয়ে বাঘ সুন্দরবনে ফিরিয়ে নিতে টহল দেওয়া শুরু করেছে।
শরণখোলার ধানসাগর ইউনিয়নের মেম্বার আবুল হোসেন খান জানান, সুন্দরবন থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার দূরত্বে তাদের বাড়িসংলগ্ন মাছের ঘের। তার ছেলে শাহিন খান বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে ঘের পাহারা দিতে যান। এ সময় টর্চের আলোতে একটি বাঘকে ঘেরের মধ্যে বসে থাকতে দেখেন। ছেলের চিৎকারে তিনি এগিয়ে এলে পালিয়ে যায়। তবে বাঘটি বনে ফিরে গেছে না লোকালয়ে লুকিয়ে আছে তা তিনি নিশ্চিত করে বলতে পারেননি। এরপর থেকে রাতভর বনরক্ষী ও গ্রামবাসী মিলে পাহারা দিচ্ছেন। সুন্দরবনের ধানসাগর স্টেশন কর্মকর্তা মো. আবদুস সবুর জানান, লোকালয়ে বাঘ ঢুকে পড়ার খবরে পাহারা দেওয়া হচ্ছে। বাঘটি লোকালয়ে পাওয়া গেলে নিরাপদে ফিরিয়ে দেওয়া হবে। ভোলা নদী ভরাট হয়ে যাওয়ায় গ্রামের সঙ্গে মিশে যাওয়ায় প্রায়ই শরণখোলা উপজেলায় সুন্দরবন সংলগ্ন রাজাপুর, দাসেরভারানি, খেজুরবাড়িয়া, টগড়াবাড়ি এলাকায় বাঘ ঢুকে পড়ছে। বৃহস্পতিবার রাতে সুন্দরবন সংলগ্ন এলাকার লোকালয়ে আবুল হোসেন মেম্বারের মাছের ঘেরে বাঘ দেখতে পাওয়ার আগে ৩১ মার্চ রাজাপুর গ্রামের সোবাহান হাওলাদারের বাড়িতে ঢুকে একটি মহিষকে আক্রমণ করে বাঘ। এভাবে লোকালয়ে বাঘ এসে প্রায়ই হানা দিচ্ছে। এ ঘটনায় চার গ্রামের মানুষের মধ্যে চরম বাঘ আতঙ্ক বিরাজ করছে। লোকালয়ে আসা বাঘ যাতে মানুষের হাতে মারা না পড়ে ও সুন্দরবনে ফিরিয়ে নেওয়া যায় সেজন্য বনরক্ষী ও গ্রামবাসী মিলে পাহারা দেওয়া হচ্ছে। বন বিভাগ সব সময় সতর্ক রয়েছেন। লোকালয়ে বাঘ ঢুকে পড়ার বিষয়ে খুলনা সার্কেলের বন সংরক্ষক (সিএফ) মিহির কুমার দো বলেন, গত ২৮ মার্চ বন বিভাগের এক সভায় লোকালয়ে যাতে বাঘসহ বন্যপ্রাণী প্রবেশ করতে না পারে সেজন্য সুন্দরবনের শরণখোলা ও চাঁদপাই রেঞ্জের ৬০ কিলোমিটার লম্বা বেড়া দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এখন অর্থ ছাড় পাওয়া গেলে আগামী এক বছরের মধ্যে এ কাজ শুরু হবে। এ ছাড়া সুন্দরবন সুরক্ষা প্রকল্পের মাধ্যমে ভোলা নদী পুনঃখনন করা হবে বলেও তিনি জানান।
