মঙ্গলবার, ১০ মে, ২০২২ ০০:০০ টা
সংসদীয় কমিটি

টুকুকে সভাপতির পদ থেকে অপসারণ দাবি

নিজস্ব প্রতিবেদক

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতির পদ থেকে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকু এমপিকে অব্যাহতি দেওয়ার দাবি জানানো হয়েছে। নিজ নির্বাচনী এলাকায় সন্ত্রাসীদের মদদ প্রদান, ক্ষমতার অপব্যবহার করে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণকরা এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে নিজের জন্য ব্যবহার  করে গণশত্রুতে পরিণত করার অভিযোগে তার পদত্যাগ দাবি করা হয়। গতকাল সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়। একই সঙ্গে শামসুল হক টুকুর ছেলে পাবনার বেড়ার পৌর মেয়র আসিফ শামসের মদদে ধর্মীয় অনুষ্ঠানে সন্ত্রাসী হামলার অভিযোগ আনা হয়। ‘সন্ত্রাস, খুন, দুর্নীতি, চাঁদাবাজি, মাদক ব্যবসা, জবরদখল ও দুর্বৃত্তায়নবিরোধী প্রতিরোধ কমিটি বেড়া-পাবনা’ ব্যানারে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনের আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আবদুস সেলিম লতিফ। এ সময় সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন সংবিধান প্রণয়ন কমিটির সদস্য, সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী ড. অধ্যাপক আবু সাইয়িদ।

 তিনি বলেন, ‘শবে কদরের দিন স্থানীয় কবরস্থান সংলগ্ন ঈদগাহ মাঠে দোয়া মাহফিলের আয়োজন বাতিল করা, পরে আমার বাসভবনে এই দোয়া মাহফিলে পুলিশের সহায়তায় সন্ত্রাসীদের লেলিয়ে দিয়ে হামলা, ভাঙচুর করে দোয়া মাহফিল প- করে শামসুল হক টুকু সংবিধান লঙ্ঘন এবং ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হেনেছেন।’

সাবেক এই তথ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘শামসুল হক টুকু সংবিধান লঙ্ঘন করেছেন। একই সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে জনগণের প্রতিপক্ষ হিসেবে দাঁড় করিয়েছেন। সে কারণে অবিলম্বে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতির পদ থেকে তাকে অপসারণের দাবি করছি।’

এ সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ড. অধ্যাপক আবু সাইয়িদ বলেন, ‘এলাকায় আধিপত্য বিস্তারের জন্য শামসুল হক টুকু পেশাদার খুনি, সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ ও ভূমি দখলকারীদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়ে থাকেন। কারণ পাবনার বেড়ার কুলঘাট থেকে মাসে ২২ লাখ টাকা চাঁদা তোলা হয়। বিচারবিভাগীয় তদন্ত হলে এর সত্যতা বেরিয়ে আসবে।’

তিনি বলেন, ‘আমি ইফতার মাহফিলের আয়োজন করেছিলাম। টুকু সাহেবসহ এলাকার গণ্যমান্য সবাইকে দাওয়াত দিয়েছিলাম। এ অনুষ্ঠানে যখন লোক আসতে শুরু করে তখন টুকু সাহেবের ছেলে তার দলবল নিয়ে ইফতার মাহফিলে আসা লোকজনকে বাধা দেন। যারা মানতে চাননি তাদের মারপিট করেন।’ তিনি বলেন, ‘মাহফিলে যারা এসেছিলেন তারা হামলার শিকার হয়েছেন। নারীদের ওপর অত্যাচার করা হয়েছে। এরা মামলা করতে গেলে থানা মামলা নেয়নি। পরে তারা আদালতে মামলা করেছেন।’

এ সময় নারী নির্যাতনের একটি ভিডিও চিত্রও তুলে ধরেন তিনি। এ ছাড়া আহত ব্যক্তিদের ফোন করে হামলার কথা জানান উপস্থিত সবাইকে।

সংবাদ সম্মেলনে মানবতাবিরোধী অপরাধে মতিউর রহমান নিজামীর মামলার সাক্ষী বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আবদুস সেলিম বলেন, ‘সন্ত্রাসী হামলা থেকে আমিও রেহাই পাইনি। মতিউর রহমান নিজামীর বিরুদ্ধে বিশেষ ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্য দেওয়ার পর পুলিশের উচ্চপর্যায় থেকে আমাকে নিরাপত্তা দেওয়ার নির্দেশ ছিল। এমনকি পুলিশ আমাকে একটি পরিচয়পত্র দিয়েছে। দুঃখের সঙ্গে বলতে হয়, এই নিরাপত্তা কার্ড থাকার পরও জীবনরক্ষায় নিজ গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে থাকতে হচ্ছে। আমার ওপর সন্ত্রাসীদের হামলার আশঙ্কা রয়েছে। আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।’

সংবাদ সম্মেলনে সন্ত্রাসীদের একটি তালিকা তুলে ধরা হয়। তারা হলেন ইয়াসির আরাফাত পিতামৃত হারুন-অর-রশিদ, খালিদ পিতামৃত আবদুর রশিদ, রাকিব পিতা নজরুল ইসলাম, ড্যন পিতামৃত মণি, রায়হান হোসেন পিতা রফিকুল ইসলাম, আতিকুর রহমান পাপ্পু পিতা ফজর আলী, মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন কাজল পিতা শাজাহান আলী, নজরুল ইসলাম পিতামৃত রজব আলী মো. আবদুল হালিম পিতামৃত হযরত আলী মো. আবদুল লতিফ পিতামৃত সৌরভ প্রামাণিক মো. মাসুদ রানা পিতামৃত লোকমান প্রামাণিক আবু সাঈদ পিতামৃত জামাত আলী, আবদুল কাদের পিতামৃত আবদুল সাত্তার, ছাকাত হোসেন হান্নান পিতামৃত আফসার আলী, মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান মণি পিতামৃত একরাম উল্লাহ, মানিক হোসেন পিতামৃত লুৎফর রহমান, মোহাম্মদ হোসেন পিতামৃত আবুল মাস্টার, আবুল হোসেন ময়ছার গীতা ইউনুস আলী খাঁ, রমজান পিতামৃত মমতাজ আলী রাসেল পিতা হাকিম বস, হাসমত মুসল্লি পিতামৃত রুস্তম মুসল্লি, মজিবর রাশেদুল ইসলাম জানকারি আবদুস সবুর পিতামৃত আজমত উল্লাহ বিপ্লব, আকবর আলী পিতা আবদুস সালাম সরদার শফি (খুনের আসামি) পিতামৃত লাল মাস্টার।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর