রবিবার, ১৫ মে, ২০২২ ০০:০০ টা
বরিশালে বাজুসের সভায় বক্তারা

সায়েম সোবহান আনভীরের নেতৃত্বে জুয়েলারি ব্যবসায় ফিরবে হারানো ঐতিহ্য

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল

সায়েম সোবহান আনভীরের নেতৃত্বে জুয়েলারি ব্যবসায় ফিরবে হারানো ঐতিহ্য

গতকাল বাজুস বরিশাল জেলা কমিটির মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখছেন বাজুস স্ট্যান্ডিং কমিটি অন ডিস্ট্রিক্ট মনিটরিং -এর চেয়ারম্যান ডা. দিলীপ কুমার রায় -বাংলাদেশ প্রতিদিন

বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সায়েম সোবহান আনভীরের নেতৃত্বে আগামীতে জুয়েলারি শিল্প আরও সমৃদ্ধ হবে। স্বর্ণশিল্পের হারানো ঐতিহ্য আবারও ফিরে আসবে। আগামীতে ডিলারদের কাছ থেকে স্বর্ণের বার কিনে ব্যবসা করতে হবে স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের। মেড ইন বাংলাদেশ লেখা স্বর্ণালঙ্কার বিদেশে রপ্তানি করে রাজস্ব আয়ে পোশাকশিল্পকেও ছাড়িয়ে যাবে বাংলাদেশ। গতকাল বরিশাল নগরের সদর রোডের বিডিএস মিলনায়তনে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস) বরিশাল জেলা কমিটি আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় এসব মন্তব্য করেন বক্তারা। বক্তারা বলেন, দেশের সব স্বর্ণ ব্যবসায়ীকে এক কাতারে আনতে হবে। তাদের ঐক্যবদ্ধ করতে হবে। বাজুসের সদস্য হলে সেই স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের সব দায়দায়িত্ব নেবে বাজুস। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাজুস স্ট্যান্ডিং কমিটি অন ডিস্ট্রিক্ট মনিটরিংয়ের চেয়ারম্যান ডা. দিলীপ কুমার রায় বলেন, বাংলাদেশের স্বর্ণ ব্যবসা একেবারে তলানিতে চলে গিয়েছিল। স্বর্ণ ব্যবসায় সুদিন ফিরিয়ে আনতে ব্যবসায়ীদের অনুরোধে দেশের শীর্ষ শিল্পপরিবার বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীর বাজুসের দায়িত্ব নিয়েছেন। ঠিকানাবিহীন বাজুসকে সারা দেশে ছড়িয়ে দিয়েছেন। বসুন্ধরার মধ্যে সুপরিসর দৃষ্টিনন্দন অফিস দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘দেশের স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল স্বর্ণ নীতিমালার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সময়োপযোগী স্বর্ণ নীতিমালা করেছেন। স্বর্ণশিল্পের হারানো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে এ নীতিমালা সময়োপযোগী। আমাদের দেশের স্বর্ণকাররা বিদেশে গিয়ে স্বর্ণ তৈরি করে সুনাম কুড়িয়েছেন। আগামীতে মেড ইন বাংলাদেশ লেখা স্বর্ণালঙ্কার বিদেশে রপ্তানি হবে। পোশাকশিল্পের অনেকেই এখন স্বর্ণশিল্পে বিনিয়োগ করছেন। আগামীতে ডিলারদের কাছ থেকে স্বর্ণের বার কিনে অলংকার বানাবেন ব্যবসায়ীরা। এতে সারা দেশে এক দরে স্বর্ণ বিক্রি হবে। প্রধানমন্ত্রী এ শিল্পকে গুরুত্ব দিয়েছেন। বাণিজ্যমন্ত্রী স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের ৫% ভ্যাট কমিয়ে ২% করার জন্য এনবিআরকে অনুরোধ করেছেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশে জুয়েলারি ফেয়ার কল্পনায়ও ছিল না। সায়েম সোবহান আনভীর বাজুসের দায়িত্ব নেওয়ার পর দেশে প্রথমবারের মতো গোল্ড ফেয়ার করে দেশ-বিদেশে প্রশংসা কুড়িয়েছেন। এই ফেয়ারের ফলে দেশের স্বর্ণশিল্প জেগে উঠেছে। স্বর্ণ ব্যবসা সুসংহত করতে চলতি বছরের শেষের দিকে ঢাকায় স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের মহাসম্মেলন হবে। বাজুসের সদস্য না হলে আগামীতে কেউ স্বর্ণ ব্যবসা করতে পারবেন না। স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা সিআইপি মর্যাদা পাবেন। দুই মাসের মধ্যে বিনামূল্যে বাজুসের সদস্য হওয়া যাবে। তিন মাসের মধ্যে জেলায় বাজুসের নতুন কমিটি গঠনের নির্দেশনা দেন তিনি। অনুষ্ঠানের অতিথি বাজুস স্ট্যান্ডিং কমিটি অন ল মেম্বারশিপের ভাইস চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমান বলেন, স্বর্ণ ব্যবসা বিশ্ব অর্থনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত। বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীরের নেতৃত্বে স্বর্ণ ব্যবসা আলোর মুখ দেখেছে। তার আহ্বানে সারা দেশের স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা এক কাতারে শামিল হচ্ছেন। ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে ঐক্যবদ্ধতার বিকল্প নেই বলে বক্তব্যে মন্তব্য করেন তিনি। অতিথির বক্তব্যে বাজুস স্ট্যান্ডিং কমিটি অন ডিস্ট্রিক্ট মনিটরিংয়ের সদস্য সচিব জয়নাল আবেদীন খোকন বলেন, সব স্বর্ণ ব্যবসায়ীকে বাজুসের অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। স্বর্ণ ক্রয়-বিক্রয়ের সময় গ্রাহকের জাতীয় পরিচয়পত্র, ছবি ও মুঠোফোন নম্বর মেমোতে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। স্বর্ণশিল্পের উন্নয়নে আগামীতে গোল্ডব্যাংক প্রতিষ্ঠার দাবি জানান তিনি। অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে বাজুস বরিশালের সহসভাপতি শেখ মোহাম্মদ মুসা সব স্বর্ণ ব্যবসায়ীকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান। স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সুরক্ষায় বাজুস কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের সহযোগিতা কামনা করেন তিনি। এ ছাড়া অনুষ্ঠানে অতিথির বক্তব্য রাখেন বাজুস স্ট্যান্ডিং কমিটি অন ল মেম্বারশিপের সদস্য সচিব মো. রিপনুল হাসান এবং বাজুস স্ট্যান্ডিং কমিটি অন ডিস্ট্রিক্ট মনিটরিংয়ের সদস্য পবিত্র চন্দ্র ঘোষ। বাজুস জেলা কমিটির সহসভাপতি নুরুল আমীন ও সাধারণ সম্পাদক মো. আলী খান জসিমের সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় স্থানীয় স্বর্ণ ব্যবসায়ী মো. শাহজাহান, মো. মিরাজুল হক, মো. আনোয়ার হোসেন, অরুণ কুমার কর্মকার, তরুণ কুমার কর্মকার প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। পরে উন্মুক্ত আলোচনায় স্থানীয় স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা তাদের নানা সমস্যা তুলে ধরে সেগুলো সমাধানের জন্য কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের হস্তক্ষেপ কামনা করেন। অনুষ্ঠানে অতিথিদের ক্রেস্ট দিয়ে শুভেচ্ছা জানানো হয়। বরিশাল মহানগর ও জেলার ১০ উপজেলার প্রায় ১০০ জন স্বর্ণ ব্যবসায়ী এই মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর