বুধবার, ১৮ মে, ২০২২ ০০:০০ টা

এক কমিটিতেই ১৯ বছর পার

চট্টগ্রাম জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ কর্মীরা হতাশ

সাইদুল ইসলাম, চট্টগ্রাম

এক কমিটিতেই ১৯ বছর পার

চট্টগ্রাম নগরের পর দুই জেলা (উত্তর ও দক্ষিণ) স্বেচ্ছাসেবক লীগের কমিটি নিয়ে নেতাদের দৃষ্টি এখন কেন্দ্রের দিকে। ২০০৩ সালের পর আর কমিটি না হওয়ায় একপ্রকার হতাশ হয়ে পড়েছেন জেলার ত্যাগী ও যোগ্য নেতারা। এরই মধ্যে নগর কমিটি গঠনের পর তৎপর হয়ে উঠেছেন চট্টগ্রাম উত্তর ও দক্ষিণ জেলার নেতারা। তবে নতুন কমিটি বা নতুন নেতৃত্ব পেতে চট্টগ্রাম উত্তর ও দক্ষিণ জেলার শীর্ষ নেতাদের দৃষ্টি এখন কেন্দ্রীয় কমিটির দিকে। কেন্দ্রের ইঙ্গিত পেলেই কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া শুরু করবেন বলেও জানান জেলার নেতারা। জানা গেছে, সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব নিয়ে দীর্ঘ বছরেও চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি করতে পারেননি দুই নেতা। এতে দীর্ঘ বছর ধরেই কমিটি না হওয়ায় নেতৃত্ব শূন্যতায় আওয়ামী লীগের এই সহযোগী সংগঠনটি। স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক নাফিউল করিম চৌধুরী নাফা বলেন, সংগঠনকে আরও শক্তিশালী করতে চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন জেলায় নতুন কমিটি গঠন, দীর্ঘ বছরের কমিটি বাতিল, নিষ্ক্রিয় কমিটি বিলুপ্তিসহ নানা কাজ করছেন কেন্দ্রীয় নেতারা। এরই মধ্যে চট্টগ্রাম নগরের আংশিক কমিটির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া চট্টগ্রাম উত্তর জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের কমিটি নেই দীর্ঘ বছর ধরেই। এতে উত্তর ও দক্ষিণ জেলা কমিটির বিষয়ে কেন্দ্রীয় নেতাদের পরামর্শক্রমে জেলার শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে কমিটির বিষয়ে আলোচনা করা হবে। এতে জেলার আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাসহ দায়িত্বশীলদের সঙ্গে সহসাই বৈঠক করে কমিটির বিষয়ে কী করা যায়, সেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানান তিনি। চট্টগ্রাম উত্তর জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সভাপতি শওকত আলম বলেন, ২০০৩ সালের দিকে কমিটি হয়েছিল। মেয়াদ শেষে নতুন কমিটি না হওয়ায় আমি পদ থেকে পদত্যাগ করেছি। কমিটি মানেই নতুন নেতৃত্ব তৈরি হওয়া। এখানে কমিটি হয়নি বলেই নতুন নেতৃত্বও তৈরি হয়নি। নতুন কমিটি গঠন করলে সংগঠন আরও শক্তিশালী হবে বলে জানান তিনি।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক নেতা বলেন, দীর্ঘ বছর কমিটি না হওয়ায় হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন নেতা-কর্মীরা। সাংগঠনিক অবস্থাও দায়সারাভাবে চলছে। দ্রুত কমিটি গঠনের মাধ্যমে নতুন নেতৃত্ব তৈরি করা জরুরি। দীর্ঘ বছর কমিটি না হওয়ায় ত্যাগী, নির্যাতিত, জেল-জুলুমের শিকার এমন নেতাও হচ্ছেন পদ-বঞ্চিত। জেলার নেতারা এখন শুধু কেন্দ্রীয় নেতাদের দিকে তাকিয়ে আছেন, কবে, কখন সম্মেলন বা নতুন কমিটি গঠনের নির্দেশনা দিবেন। সহসাই কমিটি গঠনের বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়া দরকার বলে মনে করছেন নেতা-কর্মীরা। দলীয় সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের কমিটি হয়েছিল সর্বশেষ ২০০৩ সালে। এই কমিটির সভাপতি ছিলেন শওকত আলম এবং সাধারণ সম্পাদক ছিলেন বেদারুল ইসলাম বেদার। এরপর আর কোনো কমিটি আলোর মুখ দেখেননি নেতা-কর্মীরা। এতে নেতা-কর্মীরা হতাশ হয়ে পড়েছেন। অন্যদিকে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নাম ঘোষণার পাঁচ বছর পরেও হয়নি পূর্ণাঙ্গ কমিটি।

বর্তমান সভাপতি মোহাম্মদ জুবায়ের সাতকানিয়া পৌরসভার মেয়র এবং সাধারণ সম্পাদক গালিব চৌধুরী বাঁশখালী উপজেলা চেয়ারম্যান। দুজনেই নিজ নিজ এলাকায় পৃথক কাজে ব্যস্ততার কারণে সংগঠন চলছে দায়সারাভাবে। ফলে এতদিনেও পূর্ণাঙ্গ কমিটি না হওয়ায় হতাশাগ্রস্ত নেতা-কর্মীরা। দীর্ঘ ২১ বছর পরেই গত ৯ মার্চ চট্টগ্রাম নগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের ২০ সদস্যের আংশিক কমিটির অনুমোদন দেয় কেন্দ্রীয় কমিটি। চট্টগ্রাম নগরীর এই আংশিক কমিটির দায়িত্বশীলদের দ্রুত পূর্ণাঙ্গ কমিটি দেওয়ার জন্যও নির্দেশনা দিয়েছে কেন্দ্রীয় কমিটি।

 

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর